বহুজাতিক সমাজে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং বাঙালি সংস্কৃতিকে যথাযথভাবে উপস্থাপনের অভিপ্রায়ে নিউইয়র্ক সিটির ‘কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরি’তে শতাধিক বই প্রদান করা হলো।
২৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার অপরাহ্নে অনাড়ম্বর এক অনুষ্ঠানে এসব বই এই লাইব্রেরির জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক বুরনকে প্রদান করেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল শামীম আহসান। ‘নিউ আমেরিকান প্রোগ্রাম’র আওতায় অভিবাসী সমাজকে বিভিন্ন দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেয়ার ক্ষেত্রে কুইন্স লাইব্রেরির খ্যাতি রয়েছে। কুইন্সে এই লাইব্রেরির ৬২টি শাখা রয়েছে। এগুলোর সমন্বয়কারি হচ্ছেন বাংলাদেশি আমেরিকান সেলিনা শারমিন। সেলিনার আগ্রহেই কুইন্স লাইব্রেরিতে ‘বাংলাদেশ কর্নার’ স্থাপিত হয়েছে এবং সেখানেই বাংলা ও ইংরেজি গ্রন্থগুলো সাজিয়ে রাখা হয়েছে।
সেলিনা শারমিন এ প্রসঙ্গে এ সংবাদদাতাকে বলেন, ‘আমেরিকায় জন্মগ্রহণকারি বাংলাদেশি প্রজন্ম এবং বিশ্বের ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে গবেষণারতরা বিশেষভাবে উপকৃত হবেন এসব বই পড়ার মধ্য দিয়ে।’ বইয়ের মধ্যে রয়েছে শেখ হাসিনার লেখা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত জীবনী, কারাগারের রোজনামচা, গণতন্ত্র, দারিদ্র বিমোচন ও শান্তি, ডেভেলপমেন্ট ফর দ্য মাসেস, দ্য কুয়েস্ট ফর ভিশন২০২১, ইত্যাদি।
বই হস্তান্তরের পর উপস্থিত সুধীজনের উদ্দেশ্যে দেয়া সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে কন্সাল জেনারেল শামীম আহসান বলেন, ‘হাজার বছরের ঐতিহ্যে মন্ডিত বাঙালি কালচার এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বহুজাতিক সমাজকে অবহিত করতে আমরা বহুমুখী কাযর্যক্রম গ্রহণ করেছি। তারই অংশ হিসেবে এসব বই প্রদান করা হলো এবং এটি হচ্ছে শুরু। সামনের দিনগুলোতে নিউইয়র্ক সিটি এবং অন্য সিটিতে অবস্থিত পাবলিক লাইব্রেরিতেও এসব বই প্রদান করা হবে।’
এ সময় নিউ আমেরিকান প্রোগ্রামের সহকারি পরিচালক ফ্রেড গিটনার, লাইব্রেরীর সহকারি পরিচালক ক্যাথি চেন, ম্যানেজার আব্দুল জাহিদ প্রমুখ ছিলেন।
এই লাইব্রেরির এলাকার অধিবাসীর মধ্যে আমেরিকানের বাইরে চীন প্রথম, স্প্যানিশ দ্বিতীয় এবং বাংলাদেশিরা হলেন তৃতীয় সর্বোচ্চ। কুইন্সের ৬২টি লাইব্রেরিতেই বিনামূল্যে প্রবেশাধিকার এবং বই বাসায় নিয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। ফলে অভিবাসী সমাজের লোকজন বিভিন্ন তথ্য জানার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষা শেখার জন্যেও এই লাইব্রেরির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। সিটিজেনশিপ গ্রহণের আবেদন করা থেকে ইন্টারভিউ পর্যন্ত সকল সহায়তাও দেয় এই লাইব্রেরি। আয়-ব্যয়ের হিসাব ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টে সঠিকভাবে প্রদানেও সার্বিক সহায়তা পাওয়া যায় এই লাইব্রেরি থেকে। এখন থেকে বাংলা ও ইংরেজিতে লেখা বই পড়ে বাঙালি সংস্কৃতিসহ বাংলাদেশের এগিয়ে চলার তথ্যও জানতে পারবেন বহুজাতিক সমাজের অধিবাসীরা।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন