২৭ জানুয়ারি, ২০২০ ১২:১৭

নিউইয়র্কে কোকোর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও সমাবেশ

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে

নিউইয়র্কে কোকোর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও সমাবেশ

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহকারি আন্তর্জাতিক সম্পাদক কন্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন বলেছেন, এখন পদপদবি নিয়ে কোন্দলের সময় নয়। সবকিছু ভুলে গিয়ে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিতদের দুর্বার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। অন্যথায় আরাফাত রহমান কোকোর মতো তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়াকেও সরকারের রোষানলে পড়ে বিনা চিকিৎসায় কারাগারেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে হবে। এটি আমরা হতে দিতে পারি না। 

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং দলটির ও চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমানের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে পালকি পার্টি সেন্টারে অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

এসময় বেবী নাজনীন আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজ বিপন্ন। মানুষের প্রতিবাদের ভাষা জেল আর জুলুমের কাছে জিম্মি। এ অবস্থায় ক্ষমতাসীনরা হরিলুটের রাজত্ব কায়েম করেছে। দেশে আমাদের নেতাকর্মীরা ভালো নেই। অনেকেই জেলে। আর অন্যেরা প্রাণনাশের হুমকির মুখে দিনাতিপাত করছেন। এমন একটি ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে গোটা বাংলাদেশের মানুষ দিনাতিপাত করছেন। সে তুলনায় আমরা এই প্রবাসে অনেক ভালো আছি। তাই নেতৃত্ব পেলেন না বলে হতাশ হবার কিছু নেই। বিভিন্ন দেশে ইতিমধ্যেই কমিটি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রেও হবে।

তিনি বলেন, ‘এ সময়ে আমার আহ্বান হচ্ছে, চলুন হোয়াইট হাউজে যাই, ক্যাপিটল হিলে যাই প্রিয় নেত্রীর মুক্তির দাবি আদায়ের দাবি নিয়ে’। 

আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি পরিষদ’র যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাহাদৎ হোসেন রাজুর সভাপতিত্বে এ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য এবং জাসাসের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হেলাল খান বলেছেন, ‘বাংলাদেশে একদলীয় শাসন কায়েম করা হয়েছে। গণতন্ত্রের লেবাসে নিকৃষ্টতম স্বৈরতন্ত্র চলছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসীদের ঐক্যের বিকল্প নেই। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আজ হুমকির মুখে। এ অবস্থায় সাচ্চা দেশপ্রেমিক শক্তি হিসেবে সকলকেই রুখে দাঁড়াতে হবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত  সভাপতি শরাফত হোসেন বাবু বলেন, বাংলাদেশে অপশাসন নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও উদ্বেগ রয়েছে। আইনের শাসন বলতে কোন নাম-নিশানা নেই বাংলাদেশে।

অপর বিশেষ অতিথি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তারেক পরিষদ আন্তর্জাতিক কমিটির প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারপার্সন আকতার হোসেন বাদল বলেন, কোকোর মতো বলিষ্ঠ এক ক্রীড়া সংগঠককে আওয়ামী-বাকশালীদের ষড়যন্ত্রের বলি হতে হয়েছে বিএনপির নেতৃস্থানীয়দের অনৈক্যের কারণে। একই অবস্থা পরিলক্ষিত হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার কারামুক্তির ক্ষেত্রেও। নব্বইয়ের স্বৈরাচার পতনের ন্যায় দুর্বার আন্দোলন গড়তে সীমাহীন গড়িমসি দেখতে পাচ্ছি হাই কমান্ডের বিশেষ একটি মহলে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে সাজানো মামলায় কারাগারে থাকা গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়াকেও হারাতে হবে।
 
নিউইয়র্ক মহানগর বিএনপির সভাপতি হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা বলেন, নিউ ইয়র্ক তথা যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে বিএনপির ঘাঁটি। এখান থেকেই আন্দোলন শুরু করতে হবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নাড়া দেয়ার অভিপ্রায়ে।’

যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা এম এ বাতিন বলেন, কোকোর মৃত্যু স্বাভাবিক মৃত্যু ছিল না। একইভাবে গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়াকেও তিলে তিলে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে শেখ হাসিনার সরকার।

যুক্তরাষ্ট্র জাসাসের সেক্রেটারি কাওসার আহমেদ এবং বিএনপি নেতা সালেহ আহমেদ মানিকের যৌথ সঞ্চালনায় এ সমাবেশে অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পাদক ও যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি আলহাজ্ব আবু তাহের, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কাজী আজম এবং ফিরোজ আলম, সাবেক কোষাধ্যক্ষ জসীম ভূইয়া, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য গিয়াসউদ্দিন এবং মোশারফ হোসেন সবুজ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মিল্টন ভূইয়া, সেক্রেটারি মাকসুদ এইচ চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা দলের সেক্রেটারি মোহাম্মদ সুরুজ্জামান, লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. শওকত আলী, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব মাহফুজুল মাওলা নান্নু, নিউইয়র্ক মহানগর বিএনপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রুহুল আমিন নাসির, মুক্তিযোদ্ধা মীর মশিউর রহমান, মহিলা দলের আন্তর্জাতিক সম্পাদক মমতাজ জাহান, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের সেক্রেটারি মাজহারুল ইসলাম জনি। 

শুরুতে কোকোর আত্মার মাগফেরাত এবং বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনায় বিশেষ মোনাজাতে নেতৃবৃন্দের সাথে আরও ছিলেন বিএনপির সাবেক আন্তর্জাতিক সম্পাদক গিয়াস আহমেদ এবং কমিউনিটি লিডার শাহনেওয়াজ, বিএনপি নেত্রী রাশেদা আহমেদ মুন প্রমুখ। সমাপনী বক্তব্যে শাহাদৎ হোসেন রাজু সকলের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান মাহফিলকে ব্যাপকভাবে সাফল্যমন্ডিত করার জন্যে। 

 

বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর