রবিবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের পর আজ প্রথম অফিস করলেন মালয়েশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী তানশ্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন।
সোমবার সকালে কার্যালয়ে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের অঙ্গীকার করেন তিনি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যেই কর্মদিবস শুরু করেছেন তানশ্রী মুহিউদ্দিন।
শনিবার মুহিউদ্দিন ইয়াসিনকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন রাজা সুলতান আব্দুল্লাহ সুলতান আহমদ শাহ। রবিবার শপথ নেন তিনি। তবে এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন।
এর আগে সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এ নামটি খুব একটা আলোচিত ছিল না। কিন্তু রাজার পছন্দে শেষ পর্যন্ত তিনিই দায়িত্ব নিলেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মালয়েশিয়া নতুন একজন প্রধানমন্ত্রী পেলেও দেশটির রাজনীতিকে ঘিরে এখন বড় ধরনের অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেননি।
মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে গত কয়েক দশক ধরে প্রাধান্য বিস্তারকারী রাজনীতিক মাহাথির মোহাম্মদ বলেছেন, মুহিউদ্দিন ইয়াসিনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া অবৈধ ও বিশ্বাসঘাতকতা।
মুহিউদ্দিন ইয়াসিনকে মাহাথিরের উত্তরসূরি হিসেবে নির্বাচন করেছেন মালয়েশিয়ার রাজা। রবিবার তিনিই তাকে শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছেন।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মুহিউদ্দিনকে সমর্থন দিচ্ছে নাজিব রাজাকের সাবেক ক্ষমতাসীন দল। দুর্নীতির অভিযোগে ওই সরকারের পতন হয়েছিল।
এদিকে মাহাথির মোহাম্মদ বলছেন, তিনি নতুন প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগকে পার্লামেন্টে চ্যালেঞ্জ করবেন।
আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে করা জোট থেকে বের হয়ে মাহাথির মোহাম্মদের পদত্যাগের পর মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। কিন্তু মাহাথিরের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত তার বিপক্ষে চলে যায়।
২০১৮ সালের নির্বাচনী ফলাফলের প্রসঙ্গ তুলে মাহাথির মোহাম্মদ বলেছেন, “এটা অদ্ভুত ব্যাপার। পরাজিতরা সরকার গঠন করছে আর বিজয়ীরা হচ্ছে বিরোধী দল।”
মুহিউদ্দিন মাত্র এক সপ্তাহ আগে মাহাথির মোহাম্মদের জোট থেকে বের হয়ে যান এবং তার পুরনো দল উমনোর সাথে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলেন।
অনেকেই বিশ্বাস করেন, ক্ষমতায় থাকার জন্যে নতুন সরকারকে মালায়া জাতিগোষ্ঠী ও সংখ্যালঘুদের ওপর নির্ভর করতে হবে।
মুহিউদ্দিন একবার বলেছিলেন, প্রথমে তিনি একজন মালায়া এবং এর পরে তিনি মালয়েশিয়ান।
মুহিউদ্দিনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর দেশটিতে এই আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে যে উমনোর যেসব নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে - সেগুলোর তদন্ত সামনের দিকে অগ্রসর নাও হতে পারে।
মাহাথির গত সপ্তাহে আকস্মিকভাবে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন। এর পর তিনি ও আনোয়ার ঘোষণা করেন তারা আবারও একত্রিত হয়েছেন এবং তাদের প্রতি সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপিদের সমর্থন রয়েছে।
কিন্তু মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান আবদুল্লাহ সুলতান আহমেদ শাহ শেষ পর্যন্ত মুহিউদ্দিনকেই নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন