মা সবার জীবনে অমূল্য সম্পদ। যাদের মা নেই কিংবা যারা মা থেকে অনেক দূরে আছেন তারা অন্তত এই বিষয়টি জানেন। দেশে থাকতে মা না থাকার শূন্যতা বুঝিনি। কিন্তু প্রবাস জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে স্মরণ করেছি মায়ের কথা। যখনই কোন খারাপ অবস্থায় এসেছি সবার আগে মায়ের মুখখানা ভেসে উঠেছে। কিন্ত আমি আমার এই খারাপ অবস্থার কথা বলতে পারিনি।
একধরনের ভালো থাকার অভিনয় করেছি। কিন্ত মায়ের মন সন্তানের সবকিছুই বুজে ফেলে। যতই ভালো থাকার অভিনয় করি না কেনো মায়ের মন সব আগে থেকে জানে। যে মায়ের গর্ভে আমি নয় মাস ছিলাম সেই মা আমার অবস্থা ভালো জানাটাই স্বাভাবিক। প্রবাসে আসার পর প্রতিটি মুহূর্তে মায়ের অজানা টেনশন কাজ করে।
প্রবাসে কেউ কখনো জিজ্ঞেস করেনি তুমি কি খেয়েছ? তবে মা সবসময় ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করেছে বাবা তুমি কি খেয়েছ? আমার মনে হয় প্রবাসে প্রতিটি সন্তানকে নিয়ে এমন চিন্তায় থাকেন প্রতিটি মা। দেশে থাকতেও মায়ের মনে চিন্তা দেখেছি। তবে সত্যি বলতে প্রবাসে আসার পর মায়ের এমন চিন্তা সবসময় কাঁদায়। নীরব কান্নাকে পেছনে রেখে মাকে দিয়েছি সান্তনা। বলেছি মা আমি অনেক ভালো আছি। অনেক সুখে আছি মা।
তবে সত্যি কি অনেক সুখে আছি? করোনাভাইরাস আসার পর মাকে নিয়ে আরো বেশি চিন্তা কাজ করত। আমি যদি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাই তাহলে মাকে শেষ দেখাটাও দেখতে পারবো না। আমার মার যদি কিছু হয় আমার মা কেও দেখতে পারবো না। প্রবাস জীবন অনেক নির্মম বিশেষ আমার মতো মানুষের জন্য। এই মহামারীতে নিজের মা থেকে কতদূরে আছি। জানিনা দেখা করতে পারবো কিনা? জানিনা মায়ের শেষ মুখটা দেখতে পারবো কিনা ? মা ছাড়া একাকীত্ব গ্রাস করছে আমাকে। তারপরেও জীবনের তাগিদে জীবিকার তাগিদে মা ছাড়া প্রবাসে জীবন চালিয়ে যেতে হবে। মা দিবস একদিনের জন্য নয়। মাকে ভালোবাসতে হবে সবসময়। আজকের এই মা দিবসে সকল মার প্রতি রইলো ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা। ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল মা।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন