বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীর রাজনৈতিক আশ্রয় পর্যালোচনার উদ্যোগ নেয়ায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার ঐতিহাসিক এই পদক্ষেপ গ্রহণ করায় তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখা।
একইসাথে ইউএস সিনেটে প্রভাবশালী দুই সিনেটর কোরি বুকার ও বব ম্যানেন্ডেজকে এক পত্রে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম অনুরোধ জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর ঘাতক হিসেবে দন্ডিত রাশেদ চৌধুরীর এসাইলাম বাতিলের উদ্দেশ্যে অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রক্রিয়াকে সমর্থন প্রদানের জন্য।
উল্লেখ্য, মার্কিন এটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ঘাতক রাশেদের সমস্ত নথি তার কাছে পেশ করার জন্যে। অর্থাৎ রাশেদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালত প্রদত্ত মৃত্যুদণ্ডের যে রায় দিয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রে তার স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ আছে কিনা-সেটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেয়া হবে। আর এর মধ্যদিয়েই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডে রাশেদ চৌধুরীর ভূমিকা গভীরভাবে খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মার্কিন অভিবাসন আইনে দক্ষ এটর্নি মঈন চৌধুরী এ সংবাদদাতাকে বলেন, ‘এসাইলাম গ্রহণ কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের আবেদনে কেউ যদি কোন তথ্য গোপন করেন অথবা মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করেন, তাহলে কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সিটিজেনশিপ/গ্রীণকার্ড যে কোন সময় কেড়ে নেয়ার অধিকার রাখে। রাশেদ চৌধুরীর এসাইলামের আবেদন-নথি খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সে কারণেই।’
বঙ্গবন্ধু পরিষদ যুক্তরাষ্ট্রের সভাপতি ড. নুরন নবী ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রাফায়েত চৌধুরী জানান, অনেক বছর ধরে আমরা বিভিন্ন সভা, মানববন্ধন, স্মারকলিপি ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে অবহিত করার চেষ্টা করে আসছি যে রাশেদ চৌধুরী একজন খুনি ও দণ্ডিত পলাতক আসামি। আমরা দাবি জানিয়ে আসছি যুক্তরাষ্ট্রে তার রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিল করে তাকে যেন বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আইনের দেশ, মানবতার দেশ। এই দেশে কোন খুনি, পলাতক আসামীর নিরাপদ আশ্রয় হতে পারে না।
বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি ড. খন্দকার মনসুর এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মিয়া ২৮ জুলাই অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বারকে প্রেরিত এক পত্রে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘দীর্ঘদিন পর হলেও বঙ্গবন্ধুর পলাতক ঘাতক রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে সোপর্দ করার অভিপ্রায়ে এদেশে তার এসাইলাম প্রার্থনার আবেদন পর্যালোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে দুর্বৃত্তদের অভয়ারণ্য নয়, তারই প্রকাশ ঘটানো হলো।’ ই-মেলে প্রেরিত এ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিরা আন্তরিক অর্থেই বিশ্বাস করে যে, মানবাধিকার সুরক্ষায় বদ্ধ পরিকর যুক্তরাষ্ট্র। রাশেদ চৌধুরীর ব্যাপারে গৃহিত পদক্ষেপটি অবশ্যই আইনের শাসনের ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। সারাবিশ্বের মানবাধিকার সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের বলিষ্ঠ ভূমিকা আবারো প্রশংসিত হবে।
ইউএস সিনেটে প্রভাবশালী দুই সদস্য (ডেমক্র্যাট)কোরি বুকার ও বব ম্যানেন্ডেজকে ২৭ জুলাই প্রেরিত এক পত্রে নিউজার্সিতে বসবাসরত বাংলাদেশি আমেরিকান এম এ সালাম অনুরোধ জানিয়েছেন ঘাতক রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশের বিচারে সোপর্দ করতে অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্যোগকে দ্ব্যর্থহীন সমর্থন দানের জন্য।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন