কানাডার অটোয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এবং জ্যেষ্ঠ পুত্র শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল-এর যথাক্রমে ৯১তম এবং ৭২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ভাচ্যুয়ালি অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে বাংলাদেশ হাইকমিশন, অটোয়া এবং বঙ্গবন্ধু সেন্টার ইন কানাডা কর্তৃক আয়োজিত হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ও শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের উপর নির্মিত দু’টি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রফেসর ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন একজন মহীয়সী নারী। তিনি বঙ্গবন্ধুকে রাজনৈতিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। তিনি সকলকে সব সময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় তিনি প্রত্যক্ষভাবে বঙ্গবন্ধুসহ যারা আসামি ছিলেন তাদের পক্ষে কাজ করেছেন।
অনুষ্ঠানের অন্য দুইজন বক্তা প্রফেসর ড. সাজ্জাদুর রহমান এবং প্রফেসর ওমর সেলিম শের তাদের বক্তব্যে শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এর সাথে তাদের ছোটবেলার স্মৃতিচারণ করেন। তারা তাকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন এবং একজন বন্ধুসুলভ, মেধাবী এবং বহুপ্রতিভার অধিকারী তরুণ হিসাবে তাকে বর্ণনা করেন। সবার সাথে শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের একটি মধুর সম্পর্ক ছিল। দক্ষ সংগঠক হিসেবে তিনি বাংলাদেশের ক্রীড়া ও সংস্কৃতির উন্নয়নে এবং বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন যা বাংলাদেশের জনগণের জন্য বিশেষত যুব সমাজের কাছে অফুরন্ত অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বাণীতে পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত জনাব মাসুদ বিন মোমেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব এবং জ্যেষ্ঠ পুত্র শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এর আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি তাদের অসামান্য অবদানের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি বঙ্গমাতাকে বঙ্গবন্ধুর জীবনের রাজনৈতিক প্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করেন। তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগ তাঁকে বঙ্গমাতা অভিষেকে ভূষিত করেছেন। বাঙালির ছয়দফা ও এগার দফা বাস্তবায়নে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন।
অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান বলেন, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন একজন মহৎ হৃদয়ের অধিকারী। তিনি গরীব মানুষের দুখের কথা শুনলে সব সময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেন এবং তাদের দুঃখে ব্যথিত হতেন।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, সংগ্রাম ও মানবতার কথা উল্লেখ করে হাইকমিশনার আরও বলেন, শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল ছিলেন জাতির পিতার আদর্শে বলীয়ান এক অসাধারণ তরুণ। তিনি বঙ্গমাতা এবং শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের গৌরবময় জীবন ও আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সকলকে জাতির পিতার ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।
সবশেষে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা এবং শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালসহ জাতির পিতা, তাঁর পরিবারের অন্যান্য শহিদ সদস্য ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর