২৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০৯:১১

স্পেনে আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা ‘ফিতুর’ সম্পন্ন

সাহাদুল সুহেদ, স্পেন

স্পেনে আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা ‘ফিতুর’ সম্পন্ন

বিশ্বব্যাপী পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও সম্ভাবনাকে চিহ্নিত করে কাজ করার প্রত্যয় নিয়ে সম্পন্ন হয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা ‘ফিতুর ২০২৩’। স্পেনের মাদ্রিদের ‘ফেরিয়া দে মাদ্রিদ’ আন্তর্জাতিক ভেন্যুতে ১৮ জানুয়ারি থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ‘ফিতুর’ এর ৪৩তম আসরে বিশ্বের ১৩১টি দেশের ৮ হাজার ৩৬০টি পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, ২ লাখ ২২ হাজার পর্যটনপ্রিয় মানুষ অংশগ্রহণ করে। 

আন্তর্জাতিক ট্যুরিজম সেক্টরে ‘গ্লোবাল মিটিং পয়েন্ট’ হিসেবে খ্যাত ‘ফিতুর’-এর ২০২৩ আসরের স্লোগান ছিল- ‘বিশ্বের নাগরিক, আমরাই পর্যটন’। বিশ্বব্যাপী পর্যটন কার্যকলাপের জন্য সম্ভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করে ভবিষ্যতের জন্য সুস্থ ও টেকসই পর্যটন গড়ে তোলার উদ্যোগ আলোচিত হয় ফিতুর এর এবারের আসরে।  

ফেরিয়া মাদ্রিদের ৬৬ হাজার ৯শ বর্গমিটারের বিশাল জায়গায় অনুষ্ঠিত ‘ফিতুর ২০২৩’-এর উদ্বোধন করেন স্পেনের রাজা ষষ্ট ফেলিপে খুয়ান পাবলো আলফনছো। এবারের আসরে এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশের পৃথক প্যাভিলিয়ন ছিলো।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ভ্রমনপ্রিয় পর্যটকদের কাছে নিজেদের দেশের শিল্প, সংস্কৃতির পাশাপাশি পর্যটন স্থানগুলোকে পরিচয় করিয়ে দেয়া ও তাদের দেশ ভ্রমণে আগ্রহ সৃষ্টি করতে ‘ফিতুর’-এ ট্যুর অপারেটররা পাঁচদিন নানা কৌশলী ব্যবস্থার আয়োজন করেন। প্যাভিলিয়নের সামনে নিজস্ব সংস্কৃতির পোশাক পরিধান করে নৃত্য করতে কিংবা গান পরিবেশন করতেও দেখা গেছে। 
পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিশ্বের বাণিজ্যিক তথ্য, পর্যটকদের মধ্যে নেটওয়ার্কিং সৃষ্টি, পর্যটন পণ্যের বৈশিষ্ট বিশ্লেষণ ও তুলনা, শিল্প বিবর্তন এবং প্রবণতা সম্পর্কিত তথ্য নিয়ে মেলায় প্রতিদিনই ছিল নানা সেমিনার।

মেলায় অংশগ্রহণকারী ভারতের ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান ‘এক্সপার্ট ট্যুরস এ্যান্ড ট্রাভেল্স’ এর প্রধান নির্বাহী কাপিল জাইন এর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, এ ফিতুর কেবল ট্যুরিজম নয়, নিজস্ব ব্রান্ডের প্রচার, নতুন পণ্য উপস্থাপন, সর্বশেষ প্রণেতা সম্পর্কে শেখার, নতুন যোগাযোগ এবং সুযোগ দিয়ে এজেন্ডা পূরণের একটি অনন্য ফোরাম। আমরা বিগত ১০বছর ধরে নিয়মিতই ফিতুরে অংশগ্রহণ করছি এবং নতুন নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করছি, যা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

‘ফিতুর ২০২৩’-এর শেষ দুইদিন ২১ ও ২২ জানুয়ারি সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত ছিলো। ঐ দুই দিন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশিকে মেলায় ঘুরতে দেখা গেছে। দক্ষিণ এশিয়া থেকে ভারত. নেপাল, মালদ্বীপের প্যাভিলিয়ন থাকলেও ছিলো না বাংলাদেশ। তাই মেলায় ঘুরতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিদের মুখে ছিল আক্ষেপ। 

মেলায় সংবাদ সংগ্রহে আসা মাদ্রিদের প্রবাসী সংবাদকর্মী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পে অমিত সম্ভাবনাময় দেশ এবং পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে আমাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থানগুলোই যথেষ্ট। এগুলো ‘ফিতুর’ এর মতো আন্তর্জাতিক আসরে অংশগ্রহণ করে দর্শনার্থীদের কাছে তুলে ধরলে আমাদের দেশে পর্যটকরা ভিড় জমাবেন।  

মেলার দ্বিতীয় দিন ১৮ জানুয়ারি স্পেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারোয়ার মাহমুদ ও দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর রেদোয়ান আহমেদ ‘ফিতুর ২০২৩’ পরিদর্শনে এসেছিলেন। ‘ফিতুর’-এ বাংলাদেশের অনিয়মিত অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারোয়ার মাহমুদ ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় আয়ে পর্যটন কিন্তু খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে না। তাছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন মেলায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণ সমন্বিত সিদ্ধান্তেরও ব্যাপার। আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করবো- যাতে ‘ফিতুর’ এর মতো মেলায় ভবিষ্যতে আমরা অংশগ্রহণ করতে পারি। 

প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা ‘ফিতুর’ ১৯৮০ সাল থেকে প্রতিবছর স্পেনের মাদ্রিদে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মাদ্রিদে বিশ্ব পর্যটন সংস্থার প্রধান অফিসও অবস্থিত। বাংলাদেশ অনিয়মিতভাবে  ২০১২, ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে মোট চারবার এ ‘ফিতুর’-এ অংশগ্রহণ করেছিল।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর