২৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ১১:৪৮

সিডনিতে বাহাউদ্দিন নাসিমকে সংবর্ধনা

নাইম আবদুল্লাহ

সিডনিতে বাহাউদ্দিন নাসিমকে সংবর্ধনা

২২ জানুয়ারি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন অস্ট্রেলিয়া, সিডনির রকডেলের রেড রোজ ফাংশন সেন্টারে বাংলাদেশের কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সফল মহাসচিব এবং সভাপতি, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ এবং তার সহধর্মিণী ডাঃ সুলতানা শামিমা চৌধুরি রিতাকে সংবর্ধনা প্রদান করে। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি, কৃষিবিদ ড. আব্দুস সাদেকের স্বাগত ভাষণের পরে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংগীত দিয়ে অনষ্ঠানের সূচনা হয়। 
সাধারণ সম্পাদক, কৃষিবিদ পরমেশ ভট্টাচার্যের অনুপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মোহম্মদ হোসেন বিপু। কৃষিবিদ মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা পর্বটি সঞ্চালন করেন প্রবীন কৃষিবিদ লেখক কলামিস্ট ড. রতন কুন্ডু। 

এর পরে ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫ এ শহিদ বাঙালি জাতির জনক বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারবর্গ, জাতীয় চার নেতাসহ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাসহ সকল শহীদদের এবং প্রয়াত কৃষিবিদদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। 

এরপর সভাপতি ড. সাদেক আগত অতিথিদের কেআইবি অস্ট্রেলিয়া শাখার কার্যকরী কমিটির সম্মানিত সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন।

এরপর একে একে অতিথিবৃন্দ ও সংগঠনের কর্মকর্তারা আসন গ্রহন করেন। প্রধান অতিথি বাহাউদ্দিন নাসিম ও ডাঃ সুলতানা শামিমা চৌধুরি রিতাকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করেন যথাক্রমে, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন অস্ট্রেলিয়ার পুরুষ ও মহিলা কর্মকর্তাবৃন্দ। এ পর্যায়ে অভ্যাগত অতিথিদেরকে সংবর্ধিত অতিথির সাথে পরিচয় করিয়ে দেন ড. আব্দুস সাদেক। 
মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা পর্বে সূচনা বক্তব্য রাখেন কেআইবি অস্ট্রেলিয়ার সিনিয়র সহ সভাপতি, কৃষিবিদ আবু ইব্রাহিম। মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা পর্ব সঞ্চালন করেন কৃষিবিদ ড. রতন কুন্ডু। সূচনা বক্তব্যের পরে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত সব কৃষিবিদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচিতি প্রদান করেন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে তাদের সংক্ষিপ্ত ভূমিকা তুলে ধরেন। সংবর্ধিত মুক্তিযোদ্ধারা হলেন ড. কাইয়ুম পারভেজ, ড. মোঃ লুৎফর রহমান, মোঃ আবুল বাসার ভূইয়া, মোঃ উসমান গনি ও হাবিবুর রহমান বিশ্বাস। এরপর বীর মুক্তিযোদ্ধাগন প্রধান অতিথির কাছ থেকে কেআইবি অস্ট্রেলিয়া কর্তৃক প্রদত্ত ক্রেস্ট গ্রহণ করেন।

এরপর উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাগন একে একে রণাঙ্গনের সংক্ষিপ্ত স্মৃতিচারণ করেন। আলোচনা পর্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত কৃষিবিদবৃন্দ, কে আই বির লাইফ মেম্বার এবং কৃষিবিদ অস্ট্রেলিয়া সভাপতি কৃষিবিদ মনোয়ার হোসেন। কে আই বির লাইফ মেম্বার এবং বাউ এলামনাইর সভাপতি, কৃষিবিদ আনোয়ারুল ইসলাম বকশী, কে আই বির আরেক লাইফ মেম্বার এবং-সাউ এলামনাইর সমন্বয়ক কৃষিবিদ রনি, কেআইবি অস্ট্রেলিয়ার কার্যকরী সদস্য, ও মাতৃভাষা সংরক্ষণ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপার্সন কৃষিবিদ নির্মল পাল, কেআইবি অস্ট্রেলিয়ার কার্যকরী সদস্য, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ এর আজীবন সদস্য কৃষিবিদ আব্দুল জলিল। 

অতিথিবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রফেসর এমিরিটাস ডঃ রফিকুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ-অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি ডঃ সিরাজুল হক, ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া শাখা এবং একুশে একাডেমির সভাপতি, প্রকৌশলী আব্দুল মতিন, বিশিষ্ট সমাজ সেবক গামা আব্দুল কাদের সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। 

এমিরিটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ২০০৩ সালে বাহাউদ্দিন নাসিমের গুম হওয়ার পরে আন্তর্জাতিক মাধ্যমে একটি আর্টিকেল প্রকাশ করেন। ড. আব্দুস সাদেকে তা সবাইকে পাঠ করে শোনান। ড. ইসলাম সব বিচার বহির্ভুত নিপিড়নের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন। ড. সিরাজুল হক তার বক্তব্যে নাছিমের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন, জাতির পিতার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের অতন্দ্র প্রহরী হয়ে কাজ করার ভূয়সী প্রশংসা করেন। অন্যান্য অতিথিবৃন্দ তাঁদের বক্তব্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে বাহাউদ্দিন নাসিমের ভূমিকার প্রশংসা করেন ও তার, তার সহধর্মিনী সুলতানা শামীমা ও মেয়ে ফাইজা নাসিম এর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন। 

সম্বর্ধিত অতিথির বক্তব্যে কৃষিবিদ বাহাউদ্দিন নাসিম অস্ট্রেলিয়া কেআইবির কর্মকর্তাদের এমন একটি মহতী অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি তার বক্তব্যে ২০০২ সালে জোট সরকার কর্তৃক দীর্ঘ ১২ দিন গুমকালীন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের করুণ স্মৃতি বর্ণনা করেন। তৎপরবর্তী পুলিশের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদনে বিচারালয়ের সাত দিনের রিমান্ড মন্জুর এক নজিরবিহীন আইনের অপপ্রয়োগ বলে উল্লেখ করেন। বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়ির বাংলাদেশের নীতির প্রতি সবাইকে শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নীতি আদর্শ অনুসরণ করেই তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তলাবিহীন বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে অভিষিক্ত করেছেন। ২০২২ সালের মধ্যেই ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলে ২০৪১ সালের পূর্বেই তার কাংখিত স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। তিনি এটি বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে নৈতিক সমর্থন ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার উদাত্ত্ব আহ্বান জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর বিপু ধন্যবাদ প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. আবদুস সাদেক সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষনা করেন। শেষ পর্বে একটি সংক্ষিপ্ত সংগীতানুস্টানে গান পরিবেশন করেন সিডনির প্রোথিতযশা সংগীত শিল্পী অমিয়া মতিন। অতিথিদের সবাইকে নৈশভোজে আপ্যায়ন করা হয়।

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর