শুক্রবার, ৪ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

মার্ক টোয়েনের মজার ঘটনা

মার্ক টোয়েনের মজার ঘটনা

আইন বিষয়ে পড়াশোনা করতেন। কিন্তু দরিদ্রতার কারণে নৌকার মাঝি, খনি শ্রমিক, স্টোর কার্ক এবং ডেলিভারি বয়ের কাজও করেন বিখ্যাত এই সাহিত্যিক। পরবর্তীতে টাইপসেটারের কাজ করতে করতেই লেখার প্রতি তার আগ্রহ জন্মায়। সেই আগ্রহ থেকেই হয়ে ওঠেন বিশ্বসেরা মার্ক টোয়েন।

মার্কিন রম্য লেখক ও সাহিত্যিক মার্ক টোয়েনের আসল নাম স্যামুয়েল ল্যাঙ্গহর্ন ক্লেমেন্স (১৮৩৫-১৯১০)। জন্ম ফ্লোরিডায়। বয়স যখন চার, তখনই তাঁর বাবা মিসৌরির হানিবলে চলে যান। বন্দরনগরীতে বেড়ে ওঠা, নানা অভিজ্ঞতা পরবর্তী সময়ে তাঁর লেখায় প্রভাব ফেলে। দ্য অ্যাডভেঞ্চার অব টম সয়্যার (১৮৭৬), দ্য অ্যাডভেঞ্চার অব হাকলবেরি ফিন (১৮৮৫)- তার এই দুই বইয়ের খ্যাতি দুনিয়াজুড়ে। মার্ক টোয়েনকে মার্কিন সাহিত্যের জনক বলে আখ্যায়িত করা হয়। বিখ্যাত এই সাহিত্যিক সম্পর্কে লেখক আর্নেস্ট হেমিংওয়ে বলেন, সব আধুনিক মার্কিন সাহিত্য এসেছে মার্ক টোয়েনের জনপ্রিয় সাহিত্যকর্ম ‘হাকলবেরি ফিন’ থেকে।

১.

বিখ্যাত শিল্পী হুইসলার একখানা ছবি আঁকছেন। সেই অসমাপ্ত ছবিটি দেখে মতামত দেওয়ার জন্য তিনি আমন্ত্রণ জানালেন মার্ক টোয়েনকে। কিছুক্ষণ মন দিয়ে ছবিটি দেখার পর ছবির কোণায় একটা মেঘের দিকে আঙুল দেখিয়ে মার্ক টোয়েন বললেন, ‘আমি হলে মেঘটা ঐখানে ঐভাবে আঁকতাম। ওটা মুছে দিলে ছবিটার কোনো ক্ষতি হবে বলে মনে হয় না।’ কথা বলতে বলতে মার্ক টোয়েন আঙুলটা ঠেকালেন ছবিটার ওপর। তাই দেখে চেঁচিয়ে উঠলেন হুইসলার, ‘আরে করেন কী! রংটা এখনো কাঁচা রয়েছে। এইমাত্র মেঘটা আমি এঁকেছি।’

মার্ক টোয়েন জবাব দিলেন, ‘অত চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। আমার হাতে দস্তানা পরা আছে, আশা করি রং লাগবে না।’

২.

স্কুলশিক্ষক ছাত্র মার্ক টোয়েনকে বললেন, ‘তুমি বেঞ্চে ছুরি দিয়ে দাগ কেটেছ, তাই তোমাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। সেই শাস্তি হলো সামনের দিন হয় পাঁচ ডলার জরিমানা নয়তো সবার সামনে পাঁচ ঘা বেত।’

বাড়ি এসে বালক টোয়েন বাবাকে বললেন, ‘ড্যাডি, তুমি কি চাও তোমার ছেলে সামান্য একটু দুষ্টুমির জন্য সবার সামনে পাঁচ ঘা বেত খাক?’

‘না, তার থেকে নাও পাঁচ ডলার, কাল জরিমানা হিসেবে টিচারের কাছে জমা করবে।’

পরদিন মার্ক টোয়েন স্কুলে গিয়ে পাঁচ ঘা বেত খেলেন আর বাবার দেওয়া পাঁচ ডলার দিয়ে পেটভরে খেলেন কেক।

৩.

একটি প্রাচীন কবরখানার দেয়াল ভেঙে গেছে। সেটা সারাই করার জন্য কিছু লোক চাঁদা চাইতে এলো মার্ক টোয়েনের কাছে।

মার্ক টোয়েন ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বললেন, ‘আপনাদের এ চাঁদা দেওয়ার কোনো মানেই হয় না।’

‘কেন?’

‘খুব সহজ। কবরের অধিবাসীদের কোনো ক্ষমতাই নেই বাইরে এসে প্রতিবাদ জানানোর। আর তারা ভাঙা পাঁচিলের ফাঁক দিয়ে কবরের বাইরে যেতে চাইবে বলেও মনে হয় না আমার।’

বাড়ি এসে বালক টোয়েন বাবাকে বললেন, ‘ড্যাডি, তুমি কি চাও তোমার ছেলে সামান্য  একটু দুষ্টুমির জন্য সবার সামনে পাঁচ ঘা বেত খাক?’

৪.

এক পার্টিতে যখন স্বর্গ আর নরক কেমন তা নিয়ে জোর আলোচনা চলছে তখন মার্ক টোয়েন বসে মদ্যপান করছিলেন। কোনো কথা বলছেন না। তাই দেখে এক তরুণী তার কাছে এসে বলল, ‘কী ব্যাপার? আপনি কিছু বলুন।’ মার্ক টোয়েন বললেন, ‘মাফ করবেন ম্যাডাম, আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। কারণ ওই দুটি জায়গায় আমার বিস্তর আত্মীয়স্বজন বেড়াতে এসেছেন!’

৫.

মার্ক টোয়েন ছিলেন বহুবিবাহবিরোধী। একদিন বহুবিবাহ সমর্থক এক ভদ্রলোকের সঙ্গে তার তুমুল তর্ক বাধল। রাগের মাথায় সেই ভদ্রলোক বললেন, ‘আচ্ছা, এমন একটা মহাপুরুষ দেখান তো যিনি বহুবিবাহের বিরুদ্ধে বলেছেন?’ মার্ক টোয়েন জবাব দিলেন, ‘আরে স্বয়ং যিশুখ্রিস্টই তো বলেছেন, ‘একজন ব্যক্তির পক্ষে দুজন মনিবের সেবা করা সম্ভব নয়।’

৬.

একদিন এক বন্ধু এসে মার্ক টোয়েনকে বললেন, ‘অতি সম্প্রতি অমুক লেখকের দারুণ একটা বই বেরিয়েছে, তুমি কি পড়েছ?’

মার্ক টোয়েন বললেন, ‘হ্যাঁ পড়েছি।’

‘কেমন লাগল?’

‘এক কথায় বইটি বন্ধ করলে আর খোলাই যায় না।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর