শনিবার, ২৫ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা
গবেষণায় অগ্রগণ্যদের একজন

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর ভাসমান ট্রেন আবিষ্কার

শনিবারের সকাল ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর ভাসমান ট্রেন আবিষ্কার

ইনসেটে : বাংলাদেশি বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. আতাউল করিম। (নিচে) একটি সুপারসনিক ট্রেনের মডেল

অত্যাধুনিক ভাসমান ট্রেন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক বছর ধরেই গবেষণা করছেন এক বাংলাদেশি বিজ্ঞানী। তার নাম বিজ্ঞানী ড. আতাউল করিম। ভাসমান ট্রেন চলার সময় মাটিতে স্পর্শ করবে না। উন্নতমানের এই ট্রেনটির ডিজাইন করে বিজ্ঞানী ড. আতাউল করিম পৃথিবীজুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছেন...

দ্রুতগামী ট্রেন ভবিষ্যতের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আনতে যাচ্ছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। বিশ্বসেরা বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীরা ভাসমান ট্রেনের নকশা নিয়ে কয়েক বছর ধরেই কাজ করছেন। সাফল্যও মিলেছে কিছু কিছু। ভাসমান ট্রেন ছুটে চলার সময় মাটি স্পর্শ করবে না। এমনই এক ভাসমান ট্রেনের প্রটোটাইপ নকশা হাজির করে বিশ্ববাসীকে অবাক করে দিয়েছেন এক বাংলাদেশি বিজ্ঞানী। তিনি ড. আতাউল করিম। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এই বিজ্ঞানী অধ্যাপকের ভাসমান ট্রেনের ডিজাইন খোদ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিজ্ঞানীদের চমকে দিয়েছেন। প্রশংসায় ভাসছেন তার প্রটোটাইপ ট্রেনের নকশা দেখে। প্রফেসর ড. আতাউল করিম ১৯৭৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার সন্তান তিনি। ড. করিমের বাবা ছিলেন একজন ডাক্তার। ড. আতাউল করিম প্রাথমিক ও  মৌলিক শিক্ষার জন্য সাতমা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়েন। পরে তিনি ভর্তি হন  ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে। কলেজ পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে পড়াশোনা করেন পদার্থবিদ্যা নিয়ে। ১৯৭৬ সালে বিএসসি (সম্মান) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চলে যান। ড. করিম ১৯৮২ সালে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আলবামা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে  পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর শিক্ষকতা বেছে  নেন তিনি। ইউনিভার্সিটি অব আরকানসাসে শিক্ষকতা  করেন। সিটি কলেজ অব নিউইয়র্কের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিনের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। সেখানে তিনি নতুন তিনটি বিভাগ বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ও আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সিস্টেম সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। এখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওল্ড ডমিনিয়ন ইউনিভার্সিটি (ওডিইউ) ইন নরফোকের গবেষণা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট। প্রতি বছর গবেষণা জার্নালে প্রকাশের জন্য লেখা এক ডজনেরও বেশি নিবন্ধ পর্যালোচনা করেন তিনি।

গবেষণায় তিনি অগ্রগণ্যদের একজন। অপটিক্যাল কম্পিউটিং, প্যাটার্ন/টার্গেট রিকগনিশন, নাইট ভিশন, বিভিন্ন প্রকার ডিসপ্লে, ইলেকট্রো-অপটিক্যাল সিস্টেমস,  সেন্সরস ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি ২৪টি বিশেষ সাময়িকীর অতিথি সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। লিখেছেন ১৮টি পাঠ্য ও  রেফারেন্স বই, সাড়ে তিনশ’রও বেশি গবেষণাপত্র। তার লেখা বই বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়। তার গবেষণামূলক কাজের পৃষ্ঠপোষক মার্কিন বিমান বাহিনী, মার্কিন নৌ গবেষণা কেন্দ্র, ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন, মার্কিন মহাশূন্য গবেষণা কেন্দ্র (নাসা), যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা বিভাগ, ওহিও অ্যারোস্পেস ইনস্টিটিউট, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স ও রাইট প্যাটারসন এয়ার ফোর্স বেস। তিনি ১৯৯৮ সালে আউটস্ট্যান্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড, ১৯৯৪ সালে আউটস্ট্যান্ডিং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড, ১৯৯১ সালে অ্যালামনাই অ্যাওয়ার্ড ইন স্কলারশিপ, ১৯৯০ সালে নাসা টেক ব্রিফ অ্যাওয়ার্ড ও আপ অ্যান্ড কমার্স এডুকেশন অ্যাওয়ার্ড, ১৯৯৮ সালে এনসিআর স্টাকহোল্ডার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। তিনি ‘আমেরিকান ম্যান অ্যান্ড ওম্যান ইন সায়েন্স’, আউটস্ট্যান্ডিং পিপল ইন টুয়েন্টিন্থ সেঞ্চুরি’, ‘ডিকশনারি ইন ইন্টারন্যাশনাল বায়োগ্রাফি’ এবং ‘টু থাউজেন্ড আউটস্ট্যান্ডিং সায়েন্টিস্টসের’ তালিকাভুক্ত।

সর্বশেষ খবর