শনিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
বিবিসির অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় বাংলাদেশি

বিশ্ব মাতানো দুই নারীর গল্প

সাইফ ইমন

বিশ্ব মাতানো দুই নারীর গল্প

 

যৌনকর্মীরা যাতে ক্ষুধার্ত না থাকেন, আমি সেই চেষ্টা করেছি। তাদের সন্তানরাও যেন এ কাজ করতে বাধ্য না হয়, সেই চেষ্টা করেছি...

রিনা আকতার

 

এ বছর বিশ্বের অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকা প্রকাশ করেছে বিবিসি। করোনাভাইরাস মহামারীর এই সময়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে ভিন্নধর্মী অবদানের জন্য তাঁদের এই তালিকায় রাখা হয়েছে। তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশের দুই নারী। তাঁরা হলেন- রিনা আক্তার ও রিমা সুলতানা। তালিকায় ছয় নম্বরে আছে রিনা আক্তারের নাম। বিবিসি তাঁর সম্পর্কে জানায়, মাত্র আট বছর বয়সে তার এক আত্মীয় তাঁকে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেন। এরপর সেখানে তিনি বেড়ে ওঠেন ও পরে যৌনকর্মীতে পরিণত হন। কিন্তু এখন তিনি অন্য যৌনকর্মীদের জীবনমানের উন্নয়নে কাজ করছেন। করোনা মহামারীর সময়ে রিনা ও তাঁর দল ঢাকায় প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৪০০ যৌনকর্মীকে খাবারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। করোনা মহামারীতে অনেকেই কষ্টে পড়েন। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষসহ মধ্যবিত্তরাও কষ্ট করছেন এই সময়টাতে। সমাজের অনেকে সহযোগিতার হাত বাড়ালেও যৌনকর্মীরা থেকে গেছেন অনেকটা অবহেলিত। ফলে যৌনকর্মীরা চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়েন। রিনা আক্তার বলেন, লোকজন আমাদের পেশাকে ছোট করে দেখে কিন্তু আমরা কেবল খাবার কেনার জন্যই এটা করি। যৌনকর্মীরা যাতে ক্ষুধার্ত না থাকেন, আমি সেই চেষ্টা করেছি। তাদের সন্তানরাও যেন এ কাজ করতে বাধ্য না হয়, সেই চেষ্টা করেছি। এদিকে রিমা সুলতানা রিমু পেশায় একজন শিক্ষক। তিনি কক্সবাজারভিত্তিক ইয়াং উইমেন লিডার্স ফর পিসের একজন সদস্য। বিবিসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ কর্মসূচিটি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অব উইমেন পিস বিল্ডার্সের অংশ, যার মূল উদ্দেশ্য সংঘাতসংকুল দেশগুলো থেকে আসা তরুণ নারীদের ক্ষমতায়ন করা, যাতে তারা নেতৃত্ব দেওয়া ও শান্তির এজেন্টে পরিণত হবেন। রিমা তাঁর মানবিক কর্মকান্ড পরিচালনা করেছেন রোহিঙ্গা শরণার্থী পরিস্থিতি মোকাবিলায়। রোহিঙ্গা শরণার্থী বিশেষ করে নারী ও শিশুদের যাদের শিক্ষার সুযোগ নেই তাদের জন্য লিঙ্গ সংবেদনশীল ও বয়সভিত্তিক স্বাক্ষরতা কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন তিনি। রেডিও ব্রডকাস্ট ও থিয়েটার পারফরম্যান্সের মাধ্যমে তিনি নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ে জাতিসংঘের সিদ্ধান্তগুলো সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতেও কাজ করেছেন। বিশ্ব মাতানো রিমা সুলতানা বিবিসিকে বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে লিঙ্গ সমতা আনতে অঙ্গীকারবদ্ধ। অধিকার আদায়ের জন্য নারীর শক্তিতে আমি বিশ্বাস করি।’ অন্যদিকে ৮২ বছর বয়সী ভারতের বিলকিস বানুও রয়েছেন প্রভাবশালী নারীর এই তালিকায়। তিনি আলোচনায় এসেছিলেন নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নিয়ে। যে বয়সে সাধারণত বাসা থেকে বের হওয়াই দুষ্কর সে বয়সে তিনি তরুণদের সঙ্গে অধিকার আদায়ে মাঠে নেমেছেন। এ ছাড়া ১০০ নারীর তালিকায় আরও যাদের নাম আছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ইথিওপিয়ার ফুটবলার লোজা আবেরা জেইনোর, সিয়েরালিওনের মেয়র ইয়ভনে আকি সাভিয়্যের, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মন্ত্রী সারাহ আল আমিরি, যুক্তরাষ্ট্রের অভিনেত্রী জেন ফনডা।

সর্বশেষ খবর