শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

বর্ণিল পদ্ম রঙিন বিল

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

বর্ণিল পদ্ম রঙিন বিল

দক্ষিণগ্রাম। কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রাম। গ্রামের বিলে তিন রঙের পদ্ম ফুল তার রূপের পসরা মেলে বসেছে। গোলাপি, সাদা ও হলুদ পদ্ম দেখতে বিলে ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। পদ্মের মধ্যে হলুদ পদ্ম বিরল প্রজাতির বলে অভিমত গবেষকদের। এবার শেষ দিকে বৃষ্টি নামায় এখন পদ্মের মোহনীয় রূপ দেখা যাচ্ছে। এদিকে কিছু মানুষ ফুল ছিঁড়ে ফেলায় সৌন্দর্য হারাচ্ছে পদ্ম বিল।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দল বেঁধে তরুণরা এবং কয়েকটি পরিবার নৌকা চড়ে পদ্ম ফুল দেখছেন। পদ্ম পাতায় পানি ওঠে তা বাতাসে টলমল করছে। কখনো নৌকার গতিতে পদ্ম পাতায় ছোট মাছ ওঠে পড়ছে। মাছরাঙা আর ফিঙে পাখিকে মাছ আর পোকা ধরার অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। পদ্মের সঙ্গে অপরিচিত নানা ফুলও দেখা যায়। পদ্ম বিল দর্শনকে কেন্দ্র করে এখানে চা-চটপটিসহ বিভিন্ন দোকানের পসরা বসেছে। গ্রামের মেঠোপথে দর্শকদের নিয়ে আসা পরিবহনের সারিও দেখা যায়। কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলাসহ বাইরের লোকজনও আসছেন পদ্ম ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। কিছু তরুণকে ফুল ছিঁড়ে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। ফুল না ছিঁড়তে মাঠে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়ার আহ্বান সচেতন মানুষদের। দক্ষিণগ্রামের আবদুল অদুদ জানান, মাঠের এই অংশটি নিচু। বছরের আট মাস এখানে পানি থাকে। শুধু বোরো ধান হয়। আগেও এখানে পদ্ম ফুল ফুটত। গত তিন বছর ধরে বেশি ফুল ফুটছে।

পদ্ম বিল দর্শনকে কেন্দ্র করে এখানে চা-চটপটিসহ বিভিন্ন দোকানের পসরা বসেছে। গ্রামের মেঠোপথে দর্শকদের নিয়ে আসা পরিবহনের সারিও দেখা যায়
স্থানীয় রাজাপুর গ্রামের তাছলিমা আক্তার ও আবদুল্লাহ আল রিশাত বলেন, এই এলাকায় বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা নেই। এই পদ্ম বিল তাদের নিকটবর্তী হওয়ায় প্রায়ই পদ্ম ফুলের সৌন্দর্য দেখতে আসেন। এখানে ফুলগুলো সংরক্ষণ করা গেলে ভালো হতো।

নৌকার মাঝি তাইফুর আলম জয় বলেন, আগে এখানে মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে বা পানিতে ভিজে পদ্ম ফুল দেখতে হতো। এখন বাণিজ্যিক নৌকার ব্যবস্থা রয়েছে। ১৮টি নৌকায় প্রতিদিন কয়েক শ দর্শনার্থী পদ্ম ফুল দেখতে আসেন। তবে শুক্র ও শনিবার ছুটির দিনে দর্শনার্থীর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়। নৌকা চড়তে প্রতিজন থেকে ৫০ টাকা করে নেন। দিনে তাদের ৭০০-৮০০ টাকা আয় হয়। ছুটির দিনে তা ২ হাজারও ছাড়িয়ে যায়।

বুড়িচং উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা বানিন রায় বলেন, দক্ষিণগ্রামের পদ্ম বিলে ৫০ একরের মতো জমি রয়েছে। তার মধ্যে ১০-১২ একর জমিতে পদ্ম ফুল ফুটে। শুষ্ক মৌসুমে এখানে বোরো আবাদ হয়। কিছু জমিতে রোপা আমনও চাষ হয়। পদ্ম বিলে মানুষের ভিড় লেগে থাকে। এতে মানুষের সময় কাটানোর সঙ্গে স্থানীয়দের আয়ের সুযোগ হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হালিমা খাতুন বলেন, ফুলগুলো ছিঁড়ে সৌন্দর্য নষ্ট করা হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর