শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

গ্রেট হিমালয়ান ট্রেইলে শাকিল

নেপাল-তিব্বতের সীমান্ত থেকে শুরু করে কাঞ্চনজঙ্ঘা বেসক্যাম্প পর্যন্ত ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার দুর্গম পথ ‘গ্রেট হিমালয় ট্রেইল’। বাংলাদেশের হয়ে প্রথম এ অভিযানে যাওয়া পর্বতারোহী ইকরামুল হাসান শাকিল এখন হিমালয়ের গভীরে অবস্থান করছেন।

গ্রেট হিমালয়ান ট্রেইলে শাকিল

নেপালের ‘গ্রেট হিমালয়ান ট্রেইলে’ বাংলাদেশের হয়ে প্রথম অভিযানে গেছেন পর্বতারোহী ইকরামুল হাসান শাকিল। হিমালয় পর্বতের পশ্চিমে নেপাল-তিব্বতের সীমান্ত এলাকা হিলশা থেকে শুরু করে পূর্বের কাঞ্চনজঙ্ঘা বেসক্যাম্প পর্যন্ত ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার দূরত্বের এক দুর্গম পথ। মূলত দীর্ঘ এই পথকেই ‘গ্রেট হিমালয় ট্রেইল’ বলা হয়ে থাকে। এই ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার পথ ১৫০ দিনে পাড়ি দিতেই শাকিল এখন হিমালয়ের গভীরে অবস্থান করছেন।

গত ১০ জুলাই ঢাকা থেকে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে পৌঁছেন শাকিল। ‘গ্রেট হিমালয়ান ট্রেইল’-এর আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি নিতে কাঠমান্ডুতে কেটে গেছে ১৫ দিন। ২৫ জুলাই কাঠমান্ডু শহর ছেড়ে বাসে চেপে চলে যান নেপালগঞ্জে। নেপালগঞ্জ থেকে ছোট একটি যাত্রীবাহী বিমানে ৪৯ মিনিটের আকাশপথে যাত্রা শেষ করে নেমেছেন সিমিকোটে। জুলাইয়ের ২৮ তারিখ সকাল থেকে শাকিলের মূল অভিযান শুরু হয়। শাকিল বলেন, ‘একটানা চার দিন ট্রেকিং করে পশ্চিম নেপালের নেপাল-তিব্বত বর্ডারে ৩ হাজার ৬৪২ মিটার উচ্চতার হিলশা গ্রামে পৌঁছাই। আগস্টের প্রথম সকালেই হিলশা থেকে মূল অভিযান শুরু করে হোমলা জেলার ইয়ারি, তুমকোট, মোছু, তাপলুং, কেরমি, ধারাপুরি, সিমিকোট হয়ে মোগু জেলায় পৌঁছাতে হয়েছে। এরপর খানিকটা বিশ্রাম নিয়ে আবারও মোগু জেলার পিপলান, বাম, গামগাধি, রারা, মাঙরি। সেখান থেকে তিয়ার হয়ে প্রবেশ করেছেন আপার ডোলপা জেলায়। এভাবে নেপালের উঁচঁ-নিচু দুর্গম বিপজ্জনক পথ ধরে টানা ৪১ দিনের ট্রেকিং শেষে পৌঁছাই মুস্তাং জেলার অন্নপুর্ণা এলাকার কাগবেনিতে।’

নেপালের সব থেকে রিমোট (প্রত্যন্ত অঞ্চল), সীমাবদ্ধ, দুর্গম ও বিপজ্জনক তিনটি জেলায় ট্রেকিং সফলভাবেই শেষ করেন। তবে এই দীর্ঘ উচ্চ হিমালয়ের পথ পাড়ি দিতে অতিক্রম করতে হয়েছে ১৩টি কঠিন পর্বতের পাস। যার মধ্যে ৭টি ৫ হাজার মিটারের ওপরে; ছারকোলা (৫১৪৯ মি.), ইয়ালা লা (৫৪১৪ মি.), নিঙমা গ্যানজেন (৫৫৬৪ মি.), নাঙলা (৫৩৮৮ মি.), মোলা লা (৫০২৭ মি.), নেওয়ার (৫৫৫৭ মি.), তুচে লা (৫১২১ মি.) এবং ৬টি ৪ হাজার মিটারের; নারা লা (৪৫৬০ মি.), অনামি (৪৪৫৮ মি.), ইয়াম বোর লা (৪৮১৩ মি.), শিমেন লা (৪৩৫৪ মি.), খোমা লা (৪৫৬৫ মি.), ভিমা লুজুঙ লা (৪৪৯৮ মি.) ছিল। ট্রেইলে পাড়ি দিতে গিয়ে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে পথ হারিয়ে প্রায় দুই দিন আটকেও ছিলেন শাকিল। এ সময় বেশ কিছুদিন অনাহারে কাটাতে হয়েছে। এমনকি কখনো কখনো পাথুরে পথ নামতে গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে বিপদের সম্মুখীনও হতে হয়েছে। তবুও স্বপ্নজয়ের পথে ধীরে ধীরে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন তিনি। এখন অপেক্ষা সফলভাবে তার যাত্রা সমাপ্তির।

সর্বশেষ খবর