শনিবার, ৬ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রকৃতির কোলে অন্যরকম বাড়ি

শনিবারের সকাল ডেস্ক

প্রকৃতির কোলে অন্যরকম বাড়ি

সুইজারল্যান্ডের স্থপতি পেটার ভেচ ৫০ বছর ধরেই প্রকৃতির মাঝে বাড়ি তৈরি করে চলছেন। ইউরোপজুড়ে তিনি প্রায় এক শ ‘আর্থ হাউস’ তৈরি করেছেন। এসব বাড়িতে কাজের ভালো পরিবেশ এবং জ্বালানি সাশ্রয়ের পাশাপাশি রয়েছে সবুজের সমারোহ।

পেটার ভেচ বলেন, ‘এই নির্মাণ পদ্ধতিতে আমার অনেক কম উপাদান প্রয়োজন হয়। নিখুঁত পরিমাপেরও দরকার নেই। একেবারে সেন্টিমিটার ধরে কাজ করতে হয় না, বরং অনুভূতি অনুযায়ী লাগালেই চলে, শিশুরা যেমন বালুর স্তূপে দুর্গ বানায়।’

পেটার ভেচ কংক্রিট দিয়েই তাঁর ‘আর্থ হাউস’ তৈরি করেছেন। অন্য স্থপতিরা সাধারণত প্রাকৃতিক উপাদানই বেশি ব্যবহার করেন। ভবন ও প্রকৃতির মধ্যে বিভাজন প্রায় চোখেই পড়ে না। সেগুলো প্রকৃতিরই অংশ হয়ে উঠেছে। পেটার বলেন, ‘যেমন এখানে ৫০ সেন্টিমিটার পুরু মাটির স্তর রয়েছে। ওপরের দিকে এক মিটার, ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত ঢাকা রয়েছে। এর ফলে অনেক সবুজ জায়গা পাওয়া যায়। গাছপালার জন্যও প্রচুর জায়গা পাব।’

গেয়ার্ড হানসেন প্রায় ৩০ বছর ধরে ‘আর্থ হাউস’ নির্মাণ করছেন। তিনি কংক্রিটের বদলে মাটির মোড়কে ঢাকা কাঠের মডিউল ব্যবহার করেন। গেয়ার্ড বলেন, ‘ভবনটি আসলে ‘প্যাসিভ হাউস’ হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। অর্থাৎ খুব ভালো জানালা, খুব ভালো ইনসুলেশনও রয়েছে। তবে মাটিও ভবনটির তাপমাত্রার ওপর বড় প্রভাব রাখবে। নিচের দিকে চার মিটার ‘স্লোপ এমব্যাংকমেন্ট’ রয়েছে। ছাদের ওপর শুধু সবুজের স্তর নয়, বেশ পুরু মাটির স্তর রয়েছে। ফলে গ্রীষ্মে ভিতরে মনোরম শীতল পরিবেশ থাকে। শীতকালেও বেশি গরম রাখার প্রয়োজন হয় না। ঘর গরম রাখার জন্য নামমাত্র ব্যয় হয় এই বাড়িতে।’

আনা কèর ছয় বছর ধরে সপরিবারে এমন এক ‘আর্থ হাউস’-এ বাস করছেন। প্রথম দেখায়ই তিনি সেই ভবনের প্রেমে পড়েন। ভবনটি ১০ মিটার চওড়া এবং মাটির নিচে শিকড় ও পানি নিরোধক বিশেষ মোড়ক দিয়ে ঢাকা। সামনে ও পেছন দিকে তিনটি করে কাচের স্তরের বিশাল জানালা রয়েছে।

‘আর্থ হাউস’-এর মালিক আনা কèর বলেন, ‘নির্মাণের সময় বাসাটি কিছুটা অন্ধকার হওয়ার দুশ্চিন্তা ছিল আমাদের মনে। আমার মতে, ‘আর্থ হাউস’ শব্দটি শুনলে সবার আগে মানুষের মনে সেই বিষয়টি ভেসে ওঠে। মনে হয় অন্ধকার ও বদ্ধ জায়গা। কিন্তু এখানে যথেষ্ট আলো আছে এবং ভবনটি স্বাভাবিকভাবেই প্রকৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।’

সর্বশেষ খবর