সোমবার, ৫ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

আট চ্যাম্পিয়নের ফাইনালে ওঠার লড়াই

ফুটবল ক্যারিয়ারে ১৯৮২ সালটা আমার জীবনে বিশেষ স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সেবার ঐতিহ্যবাহী মোহামেডানে খেলে শুধু শিরোপার অংশীদার হইনি নিজেও ঘরোয়া ফুটবলে নতুন এক রেকর্ড গড়ি। সালাউদ্দিন ভাই ১৯৭৩ সালে লিগ ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়েন। দুই পর্বে ৩০ ম্যাচে তিনি ২৪ গোল করেন। আমি তা ভেঙে ফেলি ১৯৮২ সালে। ২১ ম্যাচে গোল সংখ্যা ছিল ২৭। যে রেকর্ড এখনো অটুট রয়েছে। এ জন্য বন্ধু বাদল রায়, গাফফার, কোহিনুরের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তাদের পাসেই মূলত এত গোল করতে সক্ষম হয়েছিলাম। আমার এখনো মনে আছে সেবার সুপার লিগ চলাকালে স্পেনে বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হয়েছিল। বিকালে বা সন্ধ্যায় ম্যাচ খেলেও রাত জেগে বিশ্বকাপ উপভোগ করতাম। বলে রাখা ভালো ১৯৮২ সাল থেকেই বিটিভি বিশ্বকাপের ম্যাচগুলো সরাসরি সম্প্রচার করে। যে লোকটির নাম সারা পৃথিবী জানে সেই দিয়েগো ম্যারাডোনার বিশ্বকাপ অভিষেক হয় সেই আসরে।

ম্যারাডোনা খেললেও আর্জেন্টিনা সেই বিশ্বকাপে সুবিধা করতে পারেনি। ফাইনালে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ইতালি। পাওলো রসি ছিলেন সেই বিশ্বকাপের নায়ক। মোহামেডানের মতো সেরা দলে খেলা চাট্টিখানি কথা নয়। ম্যাচের আগে থেকেই টেনশনে থাকতে হয়। এমন চাপের মুখে থেকেও রাত জেগে বিশ্বকাপ দেখে কোনো ক্লান্তি লাগতো না। ভোরেই নেমে পড়তাম অনুশীলনে। এরপর টিভি বা সরাসরি গ্যালারিতে বসেও বিশ্বকাপ দেখেছি। কিন্তু বিশ্বকাপ ছাড়াও ফুটবল যে বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিতে পারে এবার তা প্রমাণ পেয়েছি। বিশ্বকাপ নয়, তবুও ক্রীড়ামোদীরা উৎসবে মেতে উঠেছে। আমিও এর বাইরে নই। রাতে ইউরোপ ও ভোরে ল্যাটিনের দিকে চেয়ে সেরা সেরা তারকাদের নৈপুণ্য দেখছি। ইউরো কাপ ও কোপা আমেরিকা এক সঙ্গে চলছে। করোনা হতাশার মধ্যেও মানুষ কিছুটা স্বস্তি অনুভব করছে।

দুই টুর্নামেন্টেই বিশ্বের সব নামি-দামি তারকার দেখা মিলছে। এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে! আলাদা টুর্নামেন্ট হলেও ইউরো ও কোপার মধ্যে অ™ভূত এক মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। বলেন তো কি? দুই টুর্নামেন্টে চার সেমিফাইনালে আটটি দেশ খেলবে। এদের সবারই শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে। যেমন ইতালি ও স্পেনের বিশ্বকাপ ও ইউরো জেতার রেকর্ড রয়েছে। অন্যদিকে ইংল্যান্ড ইউরোতে চ্যাম্পিয়ন না হলেও বিশ্বকাপ ঠিকই জিতেছে। ডেনমার্ক আবার বিশ্বকাপে ফ্লপ হলেও ইউরোর ট্রফি ঘরে তুলেছে।

আসুন কোপা আমেরিকায়। ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ ও কোপায় একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তাদের দুই প্রতিপক্ষ পেরু ও কলম্বিয়া বিশ্বকাপে সুবিধা করতে না পারলেও কোপা আমেরিকায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। একই মৌসুমে আট চ্যাম্পিয়নের ফাইনালে ওঠার লড়াই ফুটবল ইতিহাসে বিরল এক ঘটনা। এখন সবার অপেক্ষা একটাই দুই টুর্নামেন্টে ফাইনাল খেলবে কারা?

সর্বশেষ খবর