মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

রনি-লিটনের ব্যাটে ঝড়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

রনি-লিটনের ব্যাটে ঝড়

গতকাল চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ডার্কওয়ার্থ লুইস মেথডে (ডিএল মেথড) সাকিব আল হাসানের বাংলাদেশ জিতেছে ২২ রানে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ ম্যাচ সিরিজে এ জয়ে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে। সব মিলিয়ে টানা ৪টি টি-২০ ম্যাচ জিতেছে সাকিব বাহিনী। বৃষ্টিস্নাত ম্যাচটিতে কয়েকটি রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডের সর্বোচ্চ দলগত স্কোর করেছে। লিটন দাস ও রনি তালুকদার দুজনে ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে রেকর্ড ৮১ রান করেছেন। ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে আগের রেকর্ড ছিল ৭৬ রান। ২০১৩ সালে মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এ রান করেছিল বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে ৭০-এর ওপর ৬ বার রান করেছে টাইগাররা। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ আগামীকাল। ৩১ মার্চ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-২০ ম্যাচ।

বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে টি-২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছিল। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে সিলেটে আইরিশদের ওয়ানডে সিরিজে হারিয়েছে। এখন টি-২০ সিরিজ খেলছে চট্টগ্রামে। চন্ডিকা হাতুরাসিংহের কোচিংয়ে বাংলাদেশ দারুণ ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলছে টাইগাররা। বিপিএলে দারুণ পারফরম্যান্স করে রনি সুযোগ পান জাতীয় দলে। রনি প্রথম টি-২০ ম্যাচ খেলেছিলেন ২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। আট বছর পর সুযোগ পেয়ে নিজেকে মেলে ধরেন।  গতকাল আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে আইরিশ বোলারদের সাধারণ মানে নামিয়ে আনেন। লিটনকে সঙ্গী করে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাটিং করেন। ৫ ম্যাচ ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরির ৬৭ রানে ইনিংসটি খেলেন ৩৮ বলে। ১৭৬.৩১ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটিতে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন। আইরিশদের বিপক্ষে টাইগার ব্যাটারদের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর এটি। রনির চেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাটিং করেন লিটন। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে প্রথম দুটি টি-২০ ম্যাচে রান করতে পারেননি। সেই ধাক্কা সামলে শেষ টি-২০ ম্যাচে খেলেন ৫৭ বলে ৭৩ রানের ইনিংস। সেই ধারাবাহিকতায় গতকাল খুনে মেজাজে ব্যাটিং করেন লিটন। ২৩ বলের ইনিংসটি খেলেন ২০৪.৩৪ স্ট্রাইক রেটে ৪ চার ৩ ছক্কায়। ৬৯ ক্যারিয়ারে এটা তার ৯ম হাফসেঞ্চুরি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শেষ করে লিটন প্রথমবারের মতো কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষে আইপিএল খেলতে ভারত যাবেন। তার সঙ্গে কলকাতায় খেলবেন টাইগার টেস্ট ও টি-২০ অধিনায়ক সাকিব। মুস্তাফিজুর রহমান খেলবেন  দিল্লি ক্যাপিটালসে। দুই ওপেনারের গড়া ভিতে ২০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২০৭ রান। যা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দলগত সর্বোচ্চ। আগের সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯০ রান। টার্গেট ২০৮ রান। কিন্তু বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ ছিল ২ ঘণ্টা। যখন খেলা মাঠে গড়ায়, তখন সফরকারীদের টার্গেট দেয় ৮ ওভারে ১০৪ রান। সেই টার্গেটে আয়ারল্যান্ড সংগ্রহ করে ৮১ রান। আইরিশদের আটকে দেন তাসকিন আহমেদ বিধ্বংসী বোলিং করে। ২ ওভারের স্পেলে ১৬ রানের খরচে নেন ৪ উইকেট। প্রথম ওভারেই নেন ৩ উইকেট। দারুণ বোলিং করেন তরুণ হাসান মাহমুদও। ২ ওভারে ২০ রান দিলেও প্রথম ব্রেক থ্রু দেন হাসান।

 

পাওয়ার প্লেতে নতুন রেকর্ড

পাওয়ার প্লের প্রথম ছয় ওভারে বিনা উইকেটে বাংলাদেশ ৮১ রান করে। টি-২০তে প্রথম ছয় ওভারে সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড এটি। এর আগে পাওয়ার প্লেতে ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৭৬ রান ছিল সর্বোচ্চ। ৩৮ বলে ৬৭ রানের ক্যারিশম্যাটিক ইনিংস খেলেন রনি তালুকদার। তার ইনিংসে ছিল সাতটি বাউন্ডারির সঙ্গে তিনটি বিশাল ছক্কার মার। গতকাল মাত্র ২৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেছেন রনি। আরেক ওপেনার লিটন ছিলেন আরও ভয়ংকর। হাফ সেঞ্চুরি না হলেও মাত্র ২৩ বলে ৪৭ রানের ইনিংস খেলেছেন, চারটি চারের সঙ্গে তিনটি ছক্কা। গতকাল দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ার দারুণ সুযোগ ছিল। আর মাত্র ৯ রান করলেই ২১৫ রানের রেকর্ড ভেঙে ফেলতে পারত বাংলাদেশ।

 

৫০তম ম্যাচে তাসকিনের বিধ্বংসী বোলিং

বাংলাদেশের ১০ নম্বর ক্রিকেটার হিসেবে টি-২০ ক্রিকেটে ৫০তম ম্যাচ খেলেছেন তাসকিন আহমেদ। মাইলফলকের ম্যাচটিতে বিধ্বংসী বোলিং করে দারুণ এক জয় উপহার দিয়েছেন টাইগারদের। বৃষ্টিস্নাত ম্যাচটিতে তাসকিন তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেছেন। প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ ১৯.২ ওভারে ৫ উইকেটে ২০৭ রান করে। রনি তালুকদার ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি করেন। এরপর বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ ছিল ২ ঘণ্টা। খেলা পুনরায় শুরু হলে আয়ারল্যান্ডকে টার্গেট দেওয়া হয় ৮ ওভারে ১০৪। ২ ওভারের পাওয়ার প্লেতে ৩৭ রান তুলে নেন আইরিশরা। এরপরই হাসান মাহমুদকে নিয়ে ম্যাচ ঘুরিয়ে ফেলেন তাসকিন। ২ ওভারের স্পেলে ১৬ রানের খরচে নেন ৪ উইকেট। যার ৩ উইকেটই ছিল নিজের প্রথম ওভারে। এটা তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। তার আগের সেরা বোলিং ছিল গত টি-২০ বিশ্বকাপে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর