বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইতিহাস ডাকছে মার্টিনেজকে

এসি মিলানকে কাঁদিয়ে ফাইনালে ইন্টার

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ইতিহাস ডাকছে মার্টিনেজকে
ইন্টার ২০১০ সালে সর্বশেষ বায়ার্ন মিউনিখকে ২-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এর আগে ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদ এবং ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে  বেলগ্রেড পার্টিজানকে হারিয়ে টানা দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল

ইন্টার মিলান ও এসি মিলান-বিশ্ব ক্লাব ফুটবলের দুই পরিচিত মুখ। ইতালির দুই পরাশক্তি। দল দুটি ইতালির শিল্পশহর মিলানের। নগর প্রতিদ্বন্ধী ক্লাব দুটির একটাই ভেন্যু- সানসিরো। দুই দল যখন পরস্পরের মুখোমুখি হয়, তখন তারা স্বাগতিকতার সুবিধা পায় শতভাগ। পরশু রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হয়েছিল ইন্টার মিলান ও এসি মিলান। ২০১০ সালের পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল খেলতে ইন্টারকে ড্র করলেই হতো। কিন্তু এসি মিলানকে লিখতে হতো প্রত্যাবর্তনের দারুণ একটা গল্প। ২০০৭ সালের চ্যাম্পিয়ন এসি মিলান সেই গল্প লিখতে পারেনি। ফলে অষ্টম শিরোপা জিততে ফাইনালে উঠতে পারেনি কিংবদন্তি ফুটবলার পাওলো মালদিনি, সিজার মালদিনির এসি মিলান। ফিলিপ ইনজাগির ইন্টার মিলান প্রথম লেগের মতো দ্বিতীয় লেগেও জয় পায়। প্রথম লেগে জিতেছিল ২-০ গোলে। পরশু রাতে যেখানে ড্র করলেই হতো, সেখানে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার লাওতারো মার্টিনেজের গোলে ১-০ গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। দুই লেগ মিলিয়ে ৩-০ গোলে জিতে ১৩ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেছে তিনবারের চ্যাম্পিয়নরা। ১০ জুন ইস্তাম্বুলের কামাল আতাতুর্ক স্টেডিয়ামে ইন্টারের প্রতিপক্ষ ম্যানচেস্টার সিটি, না রিয়াল মাদ্রিদ হবে- গত রাতেই জেনে গেছেন ফুটবলপ্রেমীরা। 

দীর্ঘদিন পর ফাইনালে উঠে উৎসবে ভাসছে ইন্টার মিলান সমর্থকরা। ফাইনালে ওঠানোর অন্যতম নায়ক দলটির কোচ সিমিওনো ইনঝাঘি। ফাইনালে ওঠার মুহূর্তটিকে ঐতিহাসিক বলেন ইনঝাঘি, ‘ইন্টার মিলান ক্লাবের ইতিহাসে এটা ছিল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ।’ ১৬ বছর পর ফাইনাল খেলতে এসি মিলানকে জিততেই হতো। ম্যাচে বলের নিয়ন্ত্রণও বেশি ছিল মিলানের। ৫৬ শতাংশ বল পায়ে রেখেও গোল করতে পারেনি। শুধু জিতলেই হতো না, মিলানকে জিততে হতো কমপক্ষে ৩ গোলের ব্যবধানে। কিন্তু ইন্টারের কোচ ইনঝাঘির ট্যাকটিসের সঙ্গে পেড়ে ওঠেনি। বলের নিয়ন্ত্রণ ৪৪ শতাংশ থাকার পর মিলানের গোলবার লক্ষ্য করে মার্টিনেজরা ১৫ বার শটস নেন। বিপরীতে মিলান শট নেয় ৫ বার। ম্যাচের একমাত্র গোলটি হয় দ্বিতীয়ার্ধে। প্রথমার্ধ ছিল গোলশূন্য। ৭৪ মিনিটে গোলটি করেন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফুটবলার মার্টিনেজ। তাকে গোলটি করতে সহায়তা করেন বেলজিয়ামের রোমেলু লুকাকু। কাউন্টার অ্যাটাকে লুকাকুর কাছ থেকে বল পেয়ে প্রথমবার শট নিতে পারেননি মার্টিনেজ। পরেরবার ফিরতি বলে বুলেট গতির শটে জাল খুঁজে নেন বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার (১-০)। এরপর গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে মিলান। কিন্তু ইন্টারের রক্ষণভাগের দৃঢ়তা ভাঙতে পারেনি। জিততে না পারলেও মিলানের কিংবদন্তির ফুটবলার পাওলো মালদিনি দলের পারফরম্যান্স নিয়ে সন্তুষ্ট, ‘এসি মিলানের জন্য সেমিফাইনাল খেলাটাই বড় অর্জন। দলটি তরুণ। তারা এখনো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চাপ নেওয়ার মতো দল হয়ে ওঠেনি। সেমিফাইনালে ইন্টার মিলানের কাছে হেরে যাওয়াটা কষ্টের। তবে এর বাইরে সবই ঠিক আছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আমাদের এ যাত্রা পুরোপুরি অপ্রত্যাশিত।’

ইন্টার সর্বশেষ যেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, ২০১০ সালে ফাইনালে জার্মান পরাশক্তি বায়ার্ন মিউনিখকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল। এর আগে ইন্টার মিলান ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদকে ৩-১ গোলে এবং ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে ২-১ গোলে বেলগ্রেড পার্টিজানকে হারিয়ে টানা দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।

 

 

সর্বশেষ খবর