সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। ফুটবলে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় আসর। দক্ষিণ এশিয়ায় ফুটবলীয় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের এ লড়াইয়ে একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। ২০০৩ সালে। দুই দশক আগের সেই স্মৃতি এখন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে টানা ব্যর্থতা, আশাহত করেছে দর্শকদের। ফুটবলারদের মন ভেঙেছে বহুবার। তবে ধ্বংস্তূপের ভিতর থেকে জেগে ওঠার স্বপ্ন দেখছে বর্তমান দলটা। নানা সমস্যায় জর্জরিত ফুটবলে আলোর নতুন ফোয়ারা এনে দেওয়ার প্রত্যয় আছে কাবরেরার দলটার মধ্যে। আছে সামর্থ্যরে চেয়ে বেশি কিছু করে দেখানোর দৃঢ়তা। ফুটবলার, কোচ হাবিয়ের কাবরেরা এবং বাফুফের কর্মকর্তারা বলছেন, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে এবার নিশ্চয়ই কিছু একটা করে দেখাবে বাংলাদেশ। প্রথম লক্ষ্য, সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ১৯৯৯, ২০০৩ ও ২০০৫ সালের আসরে টানা তিনবার ফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ। সে সময় সাফ এলেই দর্শকদের মধ্যে দারুণ এক উন্মাদনা দেখা যেত। বাংলাদেশ ট্রফি জিতবে, আর উৎসবে মাতবে সমর্থকরা। ২০০৩ সালে জয়ের পর উৎসব করেছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা। এরপর থেকেই গৌরব হারিয়ে যেতে শুরু করে। ২০০৯ সালের পর সেমিফাইনালেই আর খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বের বাধা পাড়ি দেওয়াটাই হয়ে পড়েছে বড্ড কঠিন! গত পাঁচ আসরে ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হতে পারেনি লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। এবার কি পারবে? প্রথম লক্ষ্য সেমিফাইনাল খেলা। কিন্তু গ্রুপ পর্বেই অপেক্ষা করছে কঠিন বাধা।
ভারতের বেঙ্গালুরু শহরের শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে ২১ জুন থেকে শুরু হবে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ১৪ নম্বর আসর। ফাইনাল হবে ৩ জুলাই। বি গ্রুপে বাংলাদেশ খেলবে লেবানন, মালদ্বীপ ও ভুটানের সঙ্গে। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে চার দলের মধ্যে সবার নিচে বাংলাদেশ (১৯২)। ভুটান ১৮৫, মালদ্বীপ ১৫৪ ও লেবানন ৯৯ নম্বরে অবস্থান করছে। লেবানন তো বটেই, মালদ্বীপের বিপক্ষেও কঠিন লড়াই করতে হবে বাংলাদেশকে। অবশ্য এ দুই দলের বিপক্ষেই সুখকর স্মৃতি আছে বাংলাদেশের। মালদ্বীপের বিপক্ষে ২০২১ সালেও জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। লেবাননের বিপক্ষেও আছে দারুণ স্মৃতি। ২০১৪ বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে ঘরের মাঠে লেবাননকে মিথুন ও এমেলির গোলে ২-০ ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ। অবশ্য দ্বিতীয় লেগে লেবাননের মাঠে ৪-০ গোলে হেরে যাওয়ায় বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের পরের পর্বে আর খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। ভুটানের বিপক্ষে ২০১৬ সালের পর আর হারের মুখ দেখতে হয়নি। এবার দারুণ সুযোগ আছে বাংলাদেশের সেমিফাইনাল খেলার। মালদ্বীপকে হারাতে পারলেই পথটা সহজ হয়ে যাবে। অবশ্য বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার আমের খান বললেন, ‘আমরা কেবল মালদ্বীপের বিপক্ষে খেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি না। সব প্রতিপক্ষকে মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’