দেশের অন্যতম বৃহৎ এবং পুরনো বরিশাল স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণের কাজ চলছে ঢিমেতালে। দফায় দফায় সময় বৃদ্ধি করেও উন্নয়ন কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চার বছর ধরে ঘরোয়া লিগের খেলা বন্ধ। ক্ষুব্ধ স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠকরা।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে প্রায় ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে রূপান্তরের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রকল্পের আওতায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আসরের উপযোগী স্প্রিংলার সিস্টেম আউট ফিল্ড, আন্তর্জাতিক মানের ড্রেসিং রুম, ভিভিআইপি বক্স, মিডিয়া সেন্টারে প্রেস কনফারেন্স রুম, ব্রডকাস্ট রুম, রেডিও রুম, ধারাভাষ্য রুম, সাংবাদিক লাউঞ্জ, কন্ট্রোল রুম, থার্ড আম্প্যায়ার স্পেস, প্যাভেলিয়ন ভবনের দুই পাশে উন্নত মানের টেপরন গ্যালারি সেড এবং স্টেডিয়ামের বাইরে ডরমেটরি ভবন, ইনডোর ক্রিকেট প্রাকটিস, প্লেয়ার ড্রেসিং রুম, অভ্যন্তরীণ সড়ক ও প্রধান গেট নির্মাণের কাজ চলছে। নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও কাজের অগ্রগতি হতাশাজনক। মাঠ ব্যবহার উপযোগী না হওয়ায় ক্ষুব্ধ ক্রীড়া সংগঠকরা।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কাউন্সিল প্রদীপ কুমার গাঙ্গুলী বলেন, অবকাঠামোর চেয়েও জরুরি মাঠ। কিন্তু মাঠে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় ঘাস মরে যাচ্ছে। এ কারণে কোনো খেলাই হচ্ছে না। ধীর গতির নির্মাণ কাজের বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শরীফ অ্যান্ড সন্সের প্রকৌশলী গোলাম রসুল বলেন, তাদের কাজ প্রায় সম্পন্ন। কিন্তু মাঠ প্রস্তুত না হওয়ায় তারা কাজ হস্তান্তর করতে পারছেন না। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সচিব মঞ্জুরুল আহসান ফেরদৌস বলেন, মাঠ না থাকায় বিভাগীয় শহর বরিশালের খেলোয়ারদের প্রাকটিস করতে হয় পিরোজপুরে। যা দুর্ভাগ্যজনক।
বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান খসরু বলেন, আগে আবাসন সমস্যা থাকলেও এখন আন্তর্জাতিক আসরের উপযোগী আবাসন রয়েছে বরিশালে। নিয়মিত বয়সভিত্তিক খেলা হলে বরিশাল থেকে প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা জাতীয় পর্যায়ে খেলার সুযোগ পাবে। এদিকে আন্তর্জাতিক মানের উইকেট এবং আউটফিল্ড নির্মাণে সম্প্রতি বরিশাল স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেন বিসিবির চিফ ফিল্ড ডিরেক্টর সৈয়দ আবদুল বাতেন এবং চিফ কিউরেটর টনি হামিংস।
সৈয়দ আবদুল বাতেন বলেন, উইকেট নির্মাণ এবং মাঠ প্রস্তুত হলে দ্রুতই বরিশালে ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক আসর বসবে। বরিশালে স্টেডিয়ামের সার্বিক পরিবেশে সন্তোষ প্রকাশ করেন বিসিবির চিফ কিউরেটর টনি হামিংস। বরিশালের আউটার স্টেডিয়ামের অবস্থাও বেহাল। উপযোগী মাঠ না থাকায় গত চার বছর ধরে বয়সভিত্তিক ও স্থানীয় বিভিন্ন লীগ এবং টুর্নামেন্টের খেলা বন্ধ রয়েছে।