জিতলে লাভ নেই। তার পরও বাংলাদেশ ও ভারতের ম্যাচ অলিখিত ফাইনালে পরিণত হয়েছে। ১৮ নভেম্বর এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা স্টেডিয়ামে। দুই দেশেরই চূড়ান্ত পর্বে খেলার সম্ভাবনা নেই। হংকং বা সিঙ্গাপুর যে কোনো এক দেশ চূড়ান্ত পর্বের টিকিট পাবে। কিন্তু ম্যাচটি বাংলাদেশ-ভারত বলেই যত কথা। দেশের ফুটবলপ্রেমীরা অপেক্ষায় রয়েছেন লড়াই নিয়ে। সত্যি বলতে কি, ভারতের কাছে ম্যাচটির তেমন গুরুত্ব নেই। বাংলাদেশে যে উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে ম্যাচ জিতলেই অনেক কিছু অর্জন হবে। ভারতকে হারানো মানে ফুটবল নতুনভাবে জেগে ওঠা। বাংলাদেশের কাছে গুরুত্বটা স্বাভাবিক। কেননা সমমানের দল হলেও ভারতের কাছে হারাটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বেরই হতে পারছে না। এমনকি হামজা দেওয়ান চৌধুরী খেলার পরও বাছাই পর্বের প্রথম লেগে ভারতের বিপক্ষে ড্র করে। ভাবা যায়, ২৬ বছর আগে ভারতের বিপক্ষে নির্ধারিত সময়ে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। ১৯৯৯ সালে কাঠমান্ডু সাফ গেমসের সেমিফাইনালে শাহজাদা টিপুর দুর্দান্ত গোলে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। ২০০৩ সালে ঢাকায় সাফ ফুটবল সেমিফাইনালে বাংলাদেশ জয় পেলেও তা এসেছিল টাইব্রেকারে। গ্রুপ পর্বের ম্যাচ বলেই টাইব্রেকারে বা অতিরিক্ত সময়ে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। যারাই জিতুক তা হবে নির্ধারিত সময়ে। অতীতে যা-ই ঘটুক এবার ঘরের মাঠে ভারতকে হারাতেই হবে। এমন উত্তেজনা কাজ করছে দর্শকের মাঝে। এক জয়ে উন্মাদনায় ভাসবে দেশ। যেখানে হামজা, সামিত ও জায়ান খেলবেন, সেখানে কি বিজয়ের পতাকা ওড়ানো যাবে না? ভারতের কাছে গুরুত্ব নেই বলে তারা তারুণ্যনির্ভর দল গড়ে পরীক্ষা করতে চাচ্ছে। আর বাংলাদেশের কাছে যেন বিশ্বকাপ জয়ের সমান। অনেক দিন পর ভারতকে হারানো হবে সত্যি মহা আনন্দের। লড়াইটি যখন এতই প্রেস্টিজের, তখন স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠতেই পারে-বাংলাদেশ পারবে কি না? ভয় খেলোয়াড়দের নিয়ে নয়, হেড কোচ হাভিয়ের কাবরেরা কেমন দল সাজাবেন তা নিয়েই যত প্রশ্ন। আসলে ভয়টাও তাঁকে ঘিরে। সেরা একাদশে গরমিল থাকায় বাংলাদেশ জেতা ম্যাচও হেরেছে। তা না হলে পয়েন্ট টেবিলে এত নাজুক অবস্থায় থাকত না। কোচ ঠিকমতো সিলেকশনই করতে পারেননি। অধিনায়ক জামালকে কেন শুরু থেকে নামানো হচ্ছে না বা ভারতের বিপক্ষে নামাবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। কার্ড দেখায় ফাহমিদুল ভারতের বিপক্ষে খেলতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে হামজা, সামিত, জায়ান শুরু থেকে খেললে ভারত চাপে থাকবে। তারপর আবার ফাহিম ভালো খেলার পরও শুরু থেকে খেলানো হচ্ছে না। হামজার ওপরই নির্ভর থাকতে হচ্ছে। এখানে টিম বাংলাদেশের দেখা না মিললে বিপদ। ভারতের বিপক্ষে কোচ কাবরেরা কেমন দল গড়বেন তা নিয়েই যত ভাবনা। একজন খারাপ খেললে তাকে দ্রুত বদলানো দরকার, তা কোচের ভিতর কাজ করে না। সিদ্ধান্ত নিতে সময় নেন বলেই ফল হতাশাজনক হয়। ভারতের বিপক্ষে ভুল হলে ক্ষোভ সামাল দেওয়াই মুশকিল হবে।