পরিবর্তন! পরিবর্তন!! পরিবর্তন!!! কোরিয়ায় আসার পর সাংবাদিকদের কাছ থেকে বার বার একথা শুনতে হয়েছে সাকিব আল হাসানকে। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দলে ফেরার পর যেন একেবারেই বদলে গেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। মিডিয়াকে এড়িয়ে চলেন। বেশির ভাগ সময় চুপচাপ থাকেন। কথা বলতে চাইলে করজোড় করে চলে যান। সতীর্থদের সঙ্গেও কথা বলেন মেপে মেপে। নতুন করে সহঅধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক কিংবা অনানুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়াই জানাননি! সাকিবের আচরণে আর আগের মতো প্রাণোচ্ছল ভাবটা নেই। তাতে কি? পারফরম্যান্সে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ঠিকই ঝলক দেখিয়েছেন। কাল তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যেই হংকংয়ের বিরুদ্ধে সহজ জয় পায় বাংলাদেশ। ইনচেনের ইয়ংহি ক্রিকেট মাঠে দুই ছক্কায় ৩৭ বলে করেন ৪৬ রান করেন সাকিব। মাত্র ৪ রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তবে বল হাতেও ভালো করেছেন। ৪ ওভারে মাত্র ২৩ রান দিয়ে নিয়েছেন দুই উইকেট।
কাল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও দারুণ ব্যাটিং করেছেন। ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ২১ বলে করেছেন অপরাজিত ৩৫ রান। তবে বোলিং করেননি রিয়াদ। এই ম্যাচে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা যেমন রান পেয়েছেন তেমনি বোলাররাও লাইন-লেন্থ ঠিক রেখেই বোলিং করেছেন। তাই সোনা জিততে না পারার আফসোস থাকলেও জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে ক্রিকেটাররা ছন্দে ফেরায় খুশি রিয়াদ। তিনি বলেন, 'ভালো লাগছে। এ ম্যাচে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলেছি, পদকও জিতেছি। সঙ্গে আফসোসটা একটু বেশি। আমরা সোনা জিততে এসেছিলাম দুর্ভাগ্যক্রমে হয়নি। এখানে সত্যিকার অর্থে কারা কিছু করার নেই। টস যে কোনো দিকে যেতে পারে। এ ম্যাচে ভালো ক্রিকেট খেলাটাই আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল।' দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আজ দেশের পথে রওনা দেবেন ক্রিকেটাররা। সোনা জয়ের ইচ্ছা পূরণ না হলেও এশিয়ান গেমস খেলতে দক্ষিণ কোরিয়ায় এসে অনেক নতুন কিছুর সঙ্গে পরিচয় হয়েছেন তারা। যদিও ১৪ সদস্যের দলের মধ্যে গুয়াংজু এশিয়াডে খেলেছেন নাসির, শুভ, সাবি্বর, শুভাগত ও মো. মিথুন। তবে অন্যদের জন্য এই অভিজ্ঞতা ছিল রোমাঞ্চকর। গেমস ভিলেজে শত শত অ্যাথলেটের সঙ্গে তাদের থাকতে হয়েছে। এই অভিজ্ঞতা ভীষণ ভালো লেগেছে বলে জানালেন মাহমুদুল্লাহ, 'সব কিছুই ভালো লেগেছে। এখানে না আসলে অনেক কিছুই মিস হয়ে যেত। আমরা বিভিন্ন দেশের সেরা সেরা অ্যাথলেটের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। ভারত-পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা হয়েছে। আড্ডা হয়েছে। সময়টা দারুণ কেটেছে। এটা অন্যরকম এক অভিজ্ঞতা।'
কয়েক দিন পরেই বাংলাদেশে আসছে জিম্বাবুয়ে। তাই এশিয়ান গেমসে সোনা জিতে আত্দবিশ্বাসের পালে বাড়তি হাওয়া লাগাতে চেয়েছিলেন মাশরাফিরা। কিন্তু সেটা হয়নি। তবে হংকংয়ের ম্যাচে ভালো পারফরম্যান্স করতে পেরে খুশি ক্রিকেটাররা। আর এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে নিজেদের একটুখানি ঝালাই করে নেওয়ারও সুযোগ পেয়েছেন তারা। মাহমুদুল্লাহ বলেন, 'গত কয়েক মাস ধরে অনেক কিছুই ঠিকমতো হচ্ছিল না। কিন্তু এ ম্যাচে আমাদের সবাই ভালো খেলেছে। আমরা নিজেদের স্কিলকে কাজে লাগাতে পেরেছি। জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে এটি খুবই দরকার ছিল। তাই এদিক থেকে চিন্তা করলে আমরা সন্তুষ্ট।' নিকট অতীতের বাজে পারফরম্যান্স কিংবা এশিয়ান গেমসের ফল যাই হোক না কেন, সব ভুলে নতুন করে শুরু করতে চান মাহমুদুল্লাহ। তিনি বলেন, 'আফসোস অবশ্যই থাকবে, কেন আমরা সোনার পদকের মিশনে এসেছিলাম। যদিও দুঃখজনকভাবে সেটা হয়নি। তবে সামনে জিম্বাবুয়ে সিরিজে আমরা ভালো খেলব আশা করি।'