দুই গোলে এগিয়ে থেকেও তারকাভরা শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র হারাতে পারেনি ফরাশগঞ্জকে। ঘটনাটি অবিশ্বাস্য হলেও মান্যবর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে তাই ঘটেছে। গতকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে ২৭ মিনিটের মধ্যে ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল বিগ বাজেটের দলটি। যে গতিময় খেলা শুরু করেছিল তাতে মনে হচ্ছিল এমিলিরা প্রতিপক্ষদের গোলের বন্যায় ভাসিয়ে দেবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত একি হলো! দুর্বল ফরাশগঞ্জের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে মূল্যবান পয়েন্ট হারাল। এর আগে মুক্তিযোদ্ধা ও শেখ জামালের কাছে হেরে ৬ পয়েন্ট নষ্ট করে। জামাল আবার টানা দুই ম্যাচে ড্র করলে রাসেলের সমর্থকরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। কিন্তু স্বস্তি নয় বরং সমর্থক শিবিরে এখন হতাশা নেমে এসেছে। ২ গোলে এগিয়ে থেকে পয়েন্ট হারানোটা বিস্ময়কর কোনো ঘটনা নয়। কিন্তু প্রতিপক্ষ দলটাতো ছিল ফরাশগঞ্জ। যারা এবার লিগে সুবিধা করতে পারছে না। গতকাল মাঠে নামার আগে ১১ দলের মধ্যে ২ পয়েন্ট নিয়ে তাদের অবস্থান ছিল ১০ নম্বরে।
অঢেল অর্থ দিয়ে দল গড়া হয়েছে। তারপর আবার যে সুযোগ-সুবিধা ফুটবলারদের দেওয়া হচ্ছে। যা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অবিশ্বাসই বলা যায়। এরপরও শেখ রাসেল মাঠে দক্ষতার পরিচয় দিতে পারছে না কেন? সত্যি বলতে কি এক ঢাকা আবাহনীর বিপক্ষে ছাড়া শেখ রাসেলকে শেখ রাসেল রূপে দেখা যায়নি। লিগে নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে কাল জয়টা এমিলিদের খুবই জরুরি ছিল। সমর্থকরা স্তস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল শুরুতে মিঠুনদের গতিময় খেলা দেখে। ১২ মিনিটে আকিমের ফ্রি কিক থেকে বল পেয়ে জালে বল পাঠান জাহিদ হোসেন এমিলি। এগিয়ে যাওয়ার পর দলের আক্রমণ আরও বেড়ে যায়। ২৭ মিনিটে পল এমিলি গোল করেন। এরপরও ম্যাচ জিততে পারেনি। স্বল্প সময়ে ২ গোলে এগিয়ে যাওয়ায় শেখ রাসেলের খেলোয়াড়রা রিলাঙ্ মুডে খেলতে থাকে। আর এ সুযোগে গর্জে উঠে ফরাশগঞ্জ। ৩৪ মিনিটে শাহিনুর হেডে রাসেলের গোল রক্ষককে পরাস্ত করে ব্যবধান কমান। কেন জানি এ গোল খাওয়ার পরই শেখ রাসেল ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। তবে প্রথমার্ধে আর কোনো গোল হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধে ফরাশগঞ্জকে চাপে রাখতে শেখ রাসেল আক্রমণ চালালেও তাতে ছিল পরিকল্পনার অভাব। সময় যত গড়াতে থাকে ফরাশগঞ্জ তত জ্বলে উঠতে থাকে। তাদের আক্রমণের সামনে শেখ রাসেলের নামিদামি তারকাদের বড্ড অসহায় মনে হচ্ছিল। জয় নিশ্চিত করতে আরও গোলের প্রয়োজন তা বোধ হয় এমিলিরা ভুলেই গিয়েছিলেন। বরং সমতা ফেরাতে ফরাশগঞ্জ আরও গতিময় হয়ে উঠে। ৭১ মিনিটে শঙ্কর দাস পুরো গ্যালারিকে অবাক করে দিয়ে রাসেলের জালে বল স্পর্শ করেন। আর এতেই ম্যাচ ২-২ গোলে ড্র হয়। তবে শেখ রাসেলের ভাগ্য ভালো, শেষের দিকে ফরাশগঞ্জের শাহিন গোলরক্ষককে একা পেয়ে জালে বল পাঠাতে পারেননি। এ গোল হলে আর সমতা ফেরানোর সময়ও ছিল না শেখ রাসেলের। সাত ম্যাচে শেখ রাসেলের সংগ্রহ ১৩ পয়েন্ট। অর্থাৎ এখুনি তারা মূল্যবান ৮ পয়েন্ট নষ্ট করল। এতে করে শিরোপার লড়াইয়ে এমিলিদের ঝুঁকিটা আরও বেড়ে গেল।