৩০ অক্টোবর, ২০২০ ১৪:৫৯

ম্যারাডোনার ৬০ বছর

অনলাইন ডেস্ক

ম্যারাডোনার ৬০ বছর

ফাইল ছবি

আজ ৩০ অক্টোবর, ফুটবল ঈশ্বর খ্যাত দিয়াগো আরমান্দো ম্যারাডোনার শুভ জন্মদিন। ১৯৬০ সালের এই দিনে আর্জেন্টিনার বুয়েনোস আইরেস প্রদেশের লানুস শহরের পলিক্লিনিকো এভিতা হাসপাতালে একটি দরিদ্র পরিবারে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। 

তিন কন্যা সন্তানের পর তিনিই ছিলেন বাবা-মায়ের প্রথম পুত্র সন্তান। তার ছোট দুই ভাই ররেছে হুগো (এল তুর্কো) এবং রাউল (লালো), যাদের উভয়েই পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়। ম্যারাডোনা হলেন ‘চিতরো’ দিয়েগো ম্যারাডোনা এবং ‘দোনা তোতা’ দালমা সালভাদর ফ্রাঙ্কোর পঞ্চম সন্তান।

১০ বছর বয়সে, যখন তিনি এস্ত্রেয়া রোজার হয়ে খেলছিলেন তখন তাকে খুঁজে বের করেন একজন স্কাউট। তিনি দ্য লিটল অনিঅনের (আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সের যুব দল) একজন মূল খেলোয়াড়ে পরিণত হন। ১২ বছর বয়সে বল-বয় হিসেবে, প্রথম বিভাগের খেলার অর্ধবিরতির সময় বল দিয়ে জাদুকরি কারুকার্য দেখিয়ে তিনি দর্শকদের সন্তুষ্ট করতেন।

এই কিংদবন্তি আজ ৬১ বছর বয়সে পা দিলেন। তবে তার এই জন্মদিন উদযাপনের সুযোগ নেই। ৬০তম জন্মদিন অনেকটাই নিভৃতে একাকি কাটছে ফুটবল ইশ্বরের। দেহরক্ষীর করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় সেল্ফ আইসোলেশনে জীবন্ত কিংবদন্তি। তবে কোটি ফুটবল ভক্তের মনে, হাজারো ক্রীড়া সাংবাদিকের লেখনীতে অদৃশ্য উদযাপন ঠিকই চলছে বিশ্বজুড়ে।

সম্প্রতি নিজের ৬০তম জন্মদিনে ইংল্যান্ডকে খোঁচা দেন ফুটবল কিংবদন্তি ম্যারাডোনা। ১৯৮৬ সালের কোয়ার্টার ফাইনালের সেই মহাজাগতিক মুহূর্তকে স্মরণে এনে ম্যারাডোনা আবারো হাত দিয়ে গোল করতে চাইলেন। সেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই। তবে এবার বাম নয় ডান হাত দিয়ে। 

মাত্র ১৭ বছর বয়সে জাতীয় দলে জায়গা হয়েছিল ঠিকই কিন্তু, এই বয়সের জন্যই ৭৮ বিশ্বকাপ দলে জায়গা হয়নি। আলবিসেলেস্তে জার্সিতে ৯১ ম্যাচে ৩৪ গোল তার মাহাত্ম্য বোঝায় না। ক্লাব ক্যারিয়ারে নাপোলিকে প্রথম আর শেষবারের মকো দুবার লিগ শিরোপা উপহার কিংবা  উয়েফা কাপ জেতানোও তার গরিমা বোঝাতে যথেষ্ট নয়। তবে কেনো তিনি সেরাদের সেরা, শতাব্দীর শ্রেষ্ট ফুটবলার?

১৯৮৬ বিশ্বকাপটা সব বিশ্বকাপ থেকে আলাদা, মহিমান্বিত শুধুই ম্যারাডোনার জন্য। একক নৈপুণ্যে  বিশ্বকাপ উপহার দেয়ার নজির ইতিহাসে মেলা ভার। কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গোল হ্যান্ড অব গড নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। একই ম্যাচে গোল শতাব্দীর সেরা গোলের দেখা পান এ কিংবদন্তি।

১৯৯০ এও হট ফেভারিট আর্জেন্টিনা তার নেতৃত্বে ফাইনালে উঠেছিল ঠিকই কিন্তু টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জিততে না পারার আক্ষেপ এখনো পোড়ায় ম্যারাডোনাকে। 

বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ফাউলের শিকার হওয়া ফুটবলার তিনি। ইতালির বিপক্ষে একম্যাচেই রেকর্ড ২৩ সবমিলিয়ে ৫৩ বার অবৈধভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি।

কিন্তু চাঁদের কলঙ্কের মতোই মাদকাশক্তি আর অনিয়ন্ত্রিত জীবন কালো দাগ হয়ে আছে এ ফুটবলারের ক্যারিয়ারে।  ১৯৯৪ বিশ্বকাপে ডোপ টেস্টে নিষিদ্ধ হওয়া। কোকেন, অ্যালকহল এ ফুটবল গ্রেটের নিত্যসঙ্গী। শেষ বিশ বছরে দু বার হ্যার্ট অ্যাটাক ছাড়াও হেপাটাইটিস, নিওমোনিয়ার মত রোগেও আক্রান্ত হয়েছেন তিনি।    

ফুটবলার হিসেবে যতটা সফল কোচ হিসেবে ততটাই ব্যর্থ ম্যারাডোনা। সেরা প্রাপ্তি নিজ দেশের দায়িত্ব নেয়া। কিন্তু ২০১০ বিশ্বকাপে ম্যারাডোনার অধীনে কোয়ার্টার ফাইনালে থেমেছে আর্জেন্টিনার স্বপ্নযাত্রা।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

 
 
 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর