উয়েফা ইউরোর ‘ডি’ গ্রুপে নাকের ইনজুরির কারণে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে মাঠে নামেননি কিলিয়ান এমবাপ্পে। দলের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার ছাড়াই আক্রমণে আধিপত্য করে ফ্রান্স। যদিও গোলের দেখা পাওয়া হয়নি তাদের। গ্রিজমানের বেশ কয়েকটি গোল মিসের পাশাপাশি ডাচ ডিফেন্ডারদের নৈপুণ্যে ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো দু’দলকে।
শুক্রবার লাইপজিগের রেডবুল অ্যারেনাতে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার রাত ১টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র করে ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডস।
নাকে চোটের কারণে খেলেননি কিলিয়ান এমবাপ্পে। তার অভাব গোটা ম্যাচেই অনুভব করল ফ্রান্স। বেশ কিছু ভাল গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল তারা। কিন্তু সঠিক স্ট্রাইকারের অভাবে দু’পয়েন্ট রেখে আসতে হল মাঠেই। নেদারল্যান্ডসের একটি গোল বাতিল হল অফসাইডের কারণে। যদিও তা থেকে আগামী দিনে বিতর্ক হতেই পারে।
গত দু’দিন ফেস গার্ড পরে এমবাপ্পেকে অনুশীলনে দেখা গিয়েছিল। তবে শুক্রবার ফ্রান্সের প্রথম একাদশ দেখে অনেকেই চমকে গিয়েছিলেন। সেখানে ছিল না এমবাপ্পের নাম। আগেই রিজার্ভ বেঞ্চে ফেস গার্ড পরে এমবাপ্পেকে বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু তাকে যে প্রথম একাদশে রাখা হবে না তা অনেকেই ভাবতে পারেননি।
ঝুঁকি নেননি কোচ দিদিয়ের দেশঁ। তাই এমবাপ্পেকে ছাড়া ফ্রান্স দলকে ৪-৪-১-১ ছকে নামিয়েছিলেন। একদম সামনে ছিলেন মার্কাস থুরাম। একটু পিছনে আঁতোয়া গ্রিজম্যান। প্রথম মিনিটেই নেদারল্যান্ডস একটি সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল। বল পেয়ে মেমফিস দেপাই পাস দিয়েছিলেন জেরেমি ফ্রিমপংকে। তার শট বাঁচিয়ে দেন ফ্রান্স গোলকিপার মাইক মাইগনান।
১৪ মিনিটের মাথায় খুবই সহজ সুযোগ নষ্ট করে ফ্রান্স। বক্সে বল পেয়েছিলেন আদ্রিয়েন হাবিয়ঁ। তার সামনে একা গোলকিপার থাকলেও হাবিয়ঁ পাস দেন বাঁ দিকে থাকা গ্রিজম্যানকে। ফরাসি ফুটবলার সেই বল ধরতেই পারেননি। সামলাতে গিয়ে পড়ে যান। উঠে দাঁড়িয়ে বলের দখল নিলেও দ্রুত তার পা থেকে বল কেড়ে নেন নেদারল্যান্ডসের ফুটবলারেরা। দু’মিনিট পরেই কোডি গাকপোর একটি শট বাঁচান ফরাসি গোলকিপার।
এরপরে দুই দলের খেলার মধ্যেই শ্লথতা লক্ষ্য করা যায়। ঘর বাঁচিয়ে আক্রমণে ওঠার দিকে নজর দেয় দুই দল। যে কারণে খেলা আটকে থাকে মাঝমাঠেই। ফ্রান্সের ফুটবলারেরা প্রচুর মিস পাস করতে থাকেন। নেদারল্যান্ডসের কাছে বলের নিয়ন্ত্রণ থাকলেও তারা আক্রমণে উঠতে পারছিল না। ফিনিশিংয়ের অভাব বার বার প্রকট হয়ে উঠছিল নেদারল্যান্ডসের খেলায়। উইং ধরে আক্রমণের লক্ষ্য নিলেও তা সফল হচ্ছিল না।
এমবাপ্পের মতো স্ট্রাইকার না থাকায় ফ্রান্সেরও গোল করার লোকের অভাব স্পষ্ট টের পাওয়া যাচ্ছিল। গ্রিজম্যান খেলা তৈরি করলেও থুরামকে দিয়ে গোল করাতে পারছিলেন না। সহজ একটি ফ্রি কিকের সুযোগ নষ্ট করেন। কর্নার থেকেও বলার মতো কোনো আক্রমণ ফ্রান্স তৈরি করতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধে ফ্রান্স আবার ভাল সুযোগ পেয়েছিল ৬৫ মিনিটের মাথায়। অরেলিয়েঁ চুয়ামেনি বল বাড়িয়েছিলেন থুরামকে। থুরাম ব্যাক হিল করে বল দেন ওসমানে দেম্বেলেকে। এরপর এনগোলো কান্তে ঘুরে বল যায় গ্রিজম্যানের কাছে। গোলের থেকে কয়েক ইঞ্চি দূরে থাকা গ্রিজম্যান বল বাঁ পায়ে রিসিভ করে বাঁ পায়েই শট মারতে যান। সেই শটে মোটেই জোর ছিল না। ডাচ কিপার বার্ট ভারব্রুগেনের পায়ে লেগে তা কর্নার হয়ে যায়।
চার মিনিট পরে এগিয়ে গিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। ফ্রান্সের বক্সের মধ্যে বল নিয়ে কাড়াকাড়ি চলছিল। সেখান থেকে বল পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে শট মেরেছিলেন জাভি সিমন্স। বল জালে জড়ালেও লাইন্সম্যান অফসাইডের নির্দেশ দেন। পরে ভার-এর পরীক্ষাতেও সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। বলা হয়, সিমন্সের শটের সময় ডেনজিল ডামফ্রাইস অফসাইডে ছিলেন এবং গোলকিপারকে ঝাঁপানোর জায়গা দেননি। সেই সিদ্ধান্তে নেদারল্যান্ডসের খেলোয়াড়দের একেবারেই খুশি হতে দেখা যায়নি।
পরের দিকে কোনো দলই বলার মতো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। যদিও দু’দলের আক্রমণই বজায় থেকেছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত
