অনলাইন বীজ ব্যাংক। দেশের প্রথম বীজের প্ল্যাটফরম। এর যাত্রা কুমিল্লা থেকে। এ ছাড়া রয়েছে কৃষি টিউব নামের ইউটিউব চ্যানেল। ইউটিউবে রয়েছে বিভিন্ন ফল, ফসলের পরিচিতি। কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের এবং দেশের বাইরের ফল, ফসল নিয়েও ভিডিও প্রচার করা হয়। এভাবে এক এলাকার ফসল দেশের অন্য এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে কুমিল্লা সদর উপজেলার কালিরবাজার এলাকার নীল মরিচ, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বারি জ্যাকস শিমসহ বিভিন্ন ফসল ছড়িয়ে পড়ে অন্য এলাকায়। যে কৃষক বীজ বিক্রি করতে চান তারা এই পেজে জানান দেন। যারা কিনতে চান তারাও চাহিদা জানান। এভাবে বীজ বিক্রি এবং ক্রয়ও সহজ হয়ে উঠেছে। অনলাইন বীজ ব্যাংকের উদ্যোক্তা তারিক মাহমুদুল ইসলাম দীর্ঘদিন চাকরি করেন কুমিল্লায়। এখন ফেনী জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক। অফিসের সময় বাদে বাকি সময় লেগে থাকেন নতুন ফল-ফসলের প্রচারে। এ জন্য তিনি অনলাইন বীজ ব্যাংক পেজটি চালু করেছেন। সেখানে অল্পদিনে ২২ হাজারের বেশি কৃষক সংযুক্ত হয়েছেন। চালু করেন ইউটিউব চ্যানেল। এ ছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে বীজ সংগ্রহ করে কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দেন। পেজে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে রঙিন ফুল-ফসলের বিচিত্র সমাহার। কেউ লিখেছেন, আজুয়া খেজুরের চারা বিক্রি হবে। কেউ লিখেছেন, ভিয়েতনামের খাটো জাতের নারিকেল ও সুপারির চারা বিক্রি হবে।
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার শুশুন্ডা গ্রামের কৃষক শুয়া মিয়া। তিনি বলেন, তারিক সাহেব এখানে উপজেলা কৃষি অফিসার ছিলেন। তিনি বিভিন্ন জাতের লেবুর চারা সংগ্রহ করে দেন। তাঁর সহযোহিতায় এখন আমার বাগানে ৪২ জাতের লেবু রয়েছে।
তারিক মাহমুদুল ইসলাম বলেন, বীজ হয়তো পাশের উপজেলায় বা পাশের গ্রামেরই কারও খুব প্রয়োজন, কিন্তু বীজ দোকানে সেগুলো সুষ্প্রাপ্য নয়। অথচ উৎপাদিত বীজগুলো কোন কৃষকের কাছে অব্যবহৃত পড়ে আছে। সেরকম একটি ভাবনা থেকে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামে ১০ জন কৃষকের মাঝে তাইওয়ান হেপিনেজ জাতের লাউয়ের বীজ বিতরণের মাধ্যমে শুরু করি অনলাইন বীজ ব্যাংক। উদ্দেশ্য বীজ উৎপাদক, বিক্রেতা, কৃষককে এক প্ল্যাটফরমে নিয়ে আসা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আসাদ উল্লাহ বলেন, তারিক মাহমুদুল ইসলাম একজন সৃজনশীল কর্মকর্তা। তাঁর ব্যক্তি উদ্যোগে বীজের নেটওয়ার্কিং তৈরি একটি ভালো উদ্যোগ।
