শিরোনাম
বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

মেকআপ ম্যাজিক

মেকআপ ম্যাজিক

► মডেল : মৌ রহমান ► ছবি : আবু সুফিয়ান নিলাভ ► মেকআপ : মিম সাবিহা

সাজগোজের ব্যাপারে গোটা বিশ্ব যেন সজাগ। মেকআপের গ্রাফ বরাবরই ঊর্ধ্বমুখী। গত কয়েক বছরে তা বেড়েছে চোখে পড়ার মতো।  হালকা, উজ্জ্বল বেস, চোখের পাতায় ঈষৎ শ্যাডোর আভাস আর ঠোঁটজুড়ে স্বচ্ছ গ্লসই আজকালের মেকআপ ট্রেন্ড...

 

একটা সময় সাদামাটা বেজ, মাশকারা, কাজল বা আইলাইনার, আই ব্রো আর লিপস্টিকই ছিল ভরসা। গায়ের রং, চোখের আকার, মুখের গড়ন পালটে ফেলে যে লুক আসত- তার প্রতি অমোঘ আকর্ষণ ছিল সবার। তারপর ধীরে ধীরে সময় বদলাতে শুরু করল। পালটাতে থাকল মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিও। আর সেই সূত্র ধরে মেকআপের দুনিয়াটাও বদলে গেল। দিন যত অতীত হয়েছে মেকআপের গ্রাফ বরাবরই ছিল ঊর্ধ্বমুখী। তবে গত কয়েক বছরে তা বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। শুধু ন্যাচারাল মেকআপ নয়, পাল্লা ভারী হয়েছে অল্প মেকআপেরও। সেলিব্রিটি থেকে র‌্যাম্প-শো, সব মহলে সমাদৃত মেকআপের এই নতুন ধারা।

 

নতুন এই ধারার প্রথম শর্ত হালকা বেস। মুখের একটু-আধটু অপূর্ণতা যদি ফাউন্ডেশনের ফাঁক দিয়ে উঁকি দেয়, তাহলেই বরং বেশি ন্যাচারাল দেখাবে। লিকুইড ফাউন্ডেশনের জন্য আদর্শ। এ ক্ষেত্রে শিয়ার কিংবা মিডিয়াম কভারেজের লিকুইড ফাউন্ডেশন বেছে নিন, যা ত্বকে উজ্জ্বলতা আনবে। ফাউন্ডেশনে ফিনিশ ম্যাট বা গ্লসি যাই হোক, ত্বকে হালকা গ্লো থাকলে ভালো লাগবে। প্রয়োজনে এর সঙ্গে লিকুইড বা ক্রিম হাইলাইটার মিশিয়ে নিতে পারেন। যদি হালকা কভারেজের ফাউন্ডেশন না থাকে, তাহলে হাই কভারেজ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে অল্প ময়েশ্চারাইজার বা ফেশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন। ন্যাচারাল দেখাবে, ত্বকে উজ্জ্বলতাও আসবে।

 

নাকের নিচের অংশ, নাকের দুই পাশ, থুঁতনিতে সামান্য পাউডার বুলিয়ে নিন। মনে রাখবেন, যত কম প্রসাধনী, তত ন্যাচারাল লুক। আই-ব্রো ফিলআপ করা জরুরি তবে খুব নিঁখুত কোনো শেপ দেবেন না। স্বাভাবিক শেপ বজায় রেখে শুধু ফাঁকা অংশ ভরাট করুন। খুব গাঢ় রং বা সরু করে আই-ব্রো আঁকলে তা একেবারেই স্বাভাবিক দেখাবে না। মনের মতো শেপ পেয়ে গেলে মাসকারা ওয়ান্ড টিসুতে চেপে নিয়ে আই-ব্রো আপওয়ার্ড এবং ব্যাকওয়ার্ড ডিরেকশনে ব্রাশ করে নিন, এটি দীর্ঘস্থায়ী হবে।

 

নতুন ধারার মেকআপে রঙের ব্যবহার রাখতে হবে একেবারে কম। যত হালকা রঙের ছোঁয়া, ততই ভালো। অবশ্য তা নির্ভর করছে, আপনি ঠিক কতটা অল্পে নিজেকে রাঙাতে চাইছেন তার ওপর। মেকআপের বেস শেষ হলে যে ব্রনজার বা ব্লাশ ব্যবহার করছেন, তাই আঙুলে নিয়ে চোখের ওপরের পাতায় ব্লেন্ড করে নিন। সফ্টনেস বাড়াতে চাইলে, চোখের নিচের পাতাতেও একই শেড বুলিয়ে নিন। চাইলে ঠোঁটেও ব্লেন্ড করে নিতে পারেন। পাউডার হলেও ক্ষতি নেই, উপরে গ্লস পরে নিলে খুব সুন্দর মোনোক্রোম্যাটিক লুক ক্রিয়েট করতে পারবেন।

 

মেকআপে এক্সপেরিন্ট চাইলে নতুন ধারার এই মেকআপে সেটাও সম্ভব। তাও আবার মনের মতো। ফ্লোটিং লাইনার, গ্রাফিক ক্যাটআই, জিওমেট্রিক লাইনারের অসংখ্য অপশন রয়েছে ট্রাই করার জন্য। নুড বেসের সঙ্গে কোনো স্ট্রাইকিং রঙের লাইনার দেখতে ভালো লাগবে। আই-ব্রো এবং আপার ল্যাশলাইনের মাঝামাঝি যে কোনো ধরনের লাইন ড্র করতে পারেন। অথবা ক্যাট আই লাইনারের আউটলাইন এঁকে নিতে পারেন। চোখের কোণে ছোট ট্রায়াঙ্গল, ভি বা ডটেড লাইন আঁকলেও ভালো লাগবে। একইভাবে নিচের ল্যাশলাইনেও এ রকম স্ট্রোক আঁকতে পারেন। তবে এক সময়ে যে কোনো এক জায়গাতেই লাইনার পরবেন। সঙ্গে কয়েক পরত মাসকারাও দিতে পারেন। 

 

যাঁরা একেবারে নুড মেকআপ পছন্দ করেন না, তাঁরা রঙের গাঢ়ত্ব সামান্য বাড়াতে পারেন। দুটোই একসঙ্গে হাইলাইট করতে চাইলে স্কিনটোনের কাছাকাছি শেড বেছে নিন। ভিন্টেজ রোজ, মভ, লাইট ব্রাউন শেড একই সঙ্গে চোখে এবং ঠোঁটে ব্যবহার করতে পারেন। শ্যাডো একরঙা এবং ম্যাট হওয়া জরুরি। রং এবং শাইন দুটোই থাকলে, তা আর ন্যাচারাল থাকবে না। যে কোনো একটি অংশ হাইলাইট করতে হলে তাতে উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার করতে পারেন। নুড আই মেকআপের সঙ্গে বোল্ড রেড বা হট পিঙ্ক লিপস টাইমলেস, ক্লাসিক কম্বিনেশন। একইভাবে চোখে বোল্ড লাইনার বা রঙিন শ্যাডো থাকলে, ঠোঁট ব্ল্যাঙ্ক রাখুন, গ্লসেরও প্রয়োজন নেই। চোখ বা ঠোঁটের মেকআপ লাইট রেখে ব্রনজার, কন্টুরিং এবং ব্লাশের তীব্রতাও বাড়াতে পারেন। ফ্রেশ দেখাবে।

 

মনে রাখবেন, অল্পস্বল্প মেকআপের প্রধান উদ্দেশ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে স্বীকৃতি দেওয়া। তাই নিজেকে নিজের মতো করে ভালোবাসতে শিখুন। অল্পস্বল্প সাজ তখনই আপনার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে, যখন সৌন্দর্যবিষয়ক প্রচলিত ধ্যানধারণা এবং সোশ্যাল স্টিগমা থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারবেন।

 

লেখা : লাইফস্টাইল ডেস্ক

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর