কয়েকদিনের বৃষ্টিতে টইটম্বুর লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষতুলি এলাকায় মালদহ নদী। এই নদী পারাপারে নৌকা ব্যবহার করতে হয় স্থানীয়দের। সেতু না থাকায় শিক্ষার্থীসহ ৫ ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষকে প্রতিদিনের যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। স্থানীয়দের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মালদহ নদীতে সেতু নির্মাণের কথা বলা হলেও পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে তা প্রতিশ্রুতিতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কয়েক দশকে একাধিকবার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলীরা এসে মাপজোক ও মাটি পরীক্ষা করলেও বাস্তবে তার কোনো ফল পাননি গ্রামবাসী। অধরাই থেকে যাচ্ছে একটি সেতুর স্বপ্ন। এলাকাবাসীর দাবি, মহিষতুলির মালদা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ হলে চলাচলে সুবিধার পাশাপাশি এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে।
সরেজমিন দেখা গেছে, আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের মহিষতুলি, ফলিমারী, দুলালী ৪ ও দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর, উত্তর গোবধা, শঠিবাড়ী এবং পার্শ্ববর্তী উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের লোহাকুচী এলাকার মানুষ নিয়মিত চলাচল করে মহিষতুলির মালদা নদীর ওপর দিয়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, সেতু না থাকায় চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কৃষকদের ফসল এক স্থান থেকে অন্য স্থানের বাজারে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও রয়েছে ভোগান্তি। সেতু না থাকায় অনেক কষ্টে চলাচল করতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে শুনছি, সেতু হবে। বুড়ো হয়ে গেলাম সেতুটি আর হলো না। দুলালী গ্রামের বাসিন্দা জেলে জামিল হোসেন বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এলজিইডির লোকজন এসে মাটি পরীক্ষা ও মাপামাপি করে গেছে কিন্তু ফলাফল শূন্য। লোহাকুচী থেকে শঠিবাড়ী যাতায়াতকারী রাসেল মিয়া বলেন, নদী পার হতে না চাইলে ২৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। শঠিবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা আবদুল খালেক বলেন, নদীর একপাশে দুটি বিদ্যালয় ও অপর পাশে মাদরাসা রয়েছে। শিক্ষার্থীসহ এই পথে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। সেতু নির্মাণ হলে চলাচলে দুর্ভোগ কমার পাশাপাশি এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে। আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলী মো. খন্দকার এনামুস সালেহীন এ বিষয়ে জানান, মহিষতুলির মালদহ নদীতে সেতু নির্মাণের প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলে সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।