নেত্রকোনার কংস নদীর পানি কিছুটা কমলেও বাড়ছে মগড়া ধনাইখালিসহ অন্যান্য নদীগুলোর পানি। পানিতে তলিয়ে যাওয়া চার উপজেলার প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ সোমবার পর্যন্ত পানিবন্দী থাকলেও অনেক এলাকার পানি নামতে শুরু করেছে। একেবারে ধীরগতিতে পানি সরায় দুর্ভোগে এখনো রয়েছেন পুর্বধলা উপজেলায় নাটেরকোনা জারিয়ার মানুষ।
অন্যদিকে সীমান্ত উপজেলা দুর্গাপুরের গাওকান্দিয়া ইউনিয়নেরও একই অবস্থা। হাওরগুলো যদিও শুকনা। কিন্তু নদীগুলো থেকে দ্রুত পানি যাওয়ার পথ যেন রুদ্ধ। যে কারণে পানি নামতে দেরি হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা। তারা বলেন সঠিক নিস্কাশন ব্যবস্থা না থাকা এবং নদীগুলো খননে অনিয়ম হওয়ায় পানির ধারণ ক্ষমতা কমে গিয়ে বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে পানি প্রবেশ করেছে। পূর্বধলা উপজেলার ইউএনও খবিরুল আহসান জানান ১৯টি খাল খনন করা হয়েছে।
এদিকে সোমবার দিনভর বৃষ্টি না থাকায় বন্যার কিছুটা উন্নতির আশা থাকলেও মঙ্গলবার সকাল থেকেই আবার বজ্রপাতসহ বৃষ্টিতে তলিয়ে থাকা কৃষি জমির ফসল একেবারে নষ্টের অশংকা। ইতিমধ্যে ১২ হাজার ২২৪ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। অসংখ্য মাছের ঘের থেকে ভেসে গেছে মাছ। বিভিন্ন এলাকায় সহযোগিতা দিচ্ছে জানালেও প্রশাসন সবখানে যাচ্ছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
পুর্বধলার নাটেরকোনা জারিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভেঙ্গে যাওযার অংশের পাশের নুর মোহাম্মদের স্ত্রী নুরজাহানসহ স্বজনরা দুদিন ধরে প্রাণান্তকর চেষ্টা চালাচ্ছেন ঘরটি টিকিয়ে রাখতে। তারা জানান, শুধু আনসার বাহিনী ছাড়া তাদেরকে কেউ দেখতে যায়নি। এমনকি দাঁড়িয়ে সাহস দেয়ার কাজটিও করেনি।
তারা বলেন এই বাঁধের অপর প্রান্তে কোন বাড়ি ঘর নেই। অন্যদিক দিয়ে ভেঙ্গে দিলে বা কালভার্ট থাকলে আজ তাদের সর্বনাশ হতো না। স্বামী অটো চালিয়ে সংসার চালায়। গত বিশ বছরে গরু সহ ঘরটি করেছিলেন দুই ছেলে মেয়েকে পড়াশোনা করিয়ে। কিন্তু আজ সব ভাসিয়ে নিয়েছে। ব্লক দিয়ে বাঁধটি করলে সঠিক স্থানে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা থাকলে এবং কংস নদীর খনন কাজ ঠিকমতো হলে এই ঢলে আমাদের মতো এতো এতো মানুষের ক্ষতি হতো না।
জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, সঠিক তালিকা করা হচ্ছে। গো-খাদ্যসহ ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে সরকার সব ধরনের সহায়তা নিয়ে পাশে থাকবে।
বিডি প্রতিদিন/এএম