শনিবার, ১৪ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

জাহাজ শিল্পের সম্ভাবনা

ইউরোপে রপ্তানি হচ্ছে এ দেশের জাহাজ

নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা পাড়ে জাহাজ শিল্প রমরমা আকার ধারণ করেছে। বালু নদীর পাড়েও চলছে নৌযান তৈরির মহোৎসব। বরিশালসহ সংলগ্ন জেলাগুলোতেও সমুদ্রগামী জাহাজসহ সব ধরনের নৌযান তৈরির শিল্প বিকশিত হয়ে উঠেছে। অর্থনীতিবিদদের ধারণা জাহাজ শিল্প হতে পারে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম খাত। দ্রুত বিকাশমান এ খাতের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করাও সম্ভব। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে এ শিল্পটি। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের জাহাজ শিল্প উন্নত বিশ্বের দেশগুলোরও দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছে। ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসছে কার্যাদেশের হিড়িক। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ খাত থেকে বছরে ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করা সম্ভব। তবে সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে কোনো সমন্বিত উদ্যোগ নেই। বাংলাদেশের জাহাজ এখন জার্মানি, নেদারল্যান্ডসসহ উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতেও রপ্তানি হচ্ছে। এদেশে তৈরি জাহাজ আন্তর্জাতিক মান স্পর্শ করতেও সক্ষম হয়েছে। সস্তা জনশক্তির জন্য বিশ্বের যে কোনো দেশের চেয়ে বাংলাদেশে জাহাজ তৈরির খরচ কম। বাংলাদেশি কারিগরদের দক্ষতাও ক্রেতাদের সন্তুষ্টি জুগিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে জাহাজ নির্মাণের যে কার্যাদেশ আসছে তা গ্রহণের মতো নির্মাণ অবকাঠামো বাংলাদেশের নেই। এ কার্যাদেশগুলো সব গ্রহণ করা সম্ভব হলে এটি দেশের শীর্ষ রপ্তানি খাতের একটি বলে বিবেচিত হতো। বাংলাদেশে এখন যাত্রী ভ্যাসেল, এমপিসি ভ্যাসেল, পাইলট ভ্যাসেল, ফেরি ট্যাঙ্কার, পন্টুন কার্গো ইত্যাদি নৌযান নির্মিত হচ্ছে। তবে জাহাজ নির্মাণে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। দেশে জাহাজ নির্মাণের ১৫০টি প্রতিষ্ঠান থাকলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আস্থা ও দাপট দেখিয়েছে ৫-৬টি প্রতিষ্ঠান। অবকাঠামোগত সুবিধাসহ নতুন নতুন শিপইয়ার্ড গড়ে উঠলে আগামী এক দশকের মধ্যে বাংলাদেশের পক্ষে ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলারের জাহাজ রপ্তানি করা সম্ভব হবে। বিশ্বে জাহাজের যে চাহিদা রয়েছে তার একটি ক্ষুদ্র অংশ পূরণ করা গেলেও এ খাত থেকে ওই পরিমাণ অর্থ আয় করা সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে সরকারকে অবকাঠামোর উন্নতিসহ সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর