শিরোনাম
শনিবার, ৬ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

বায়তুল মোকাররমের খুতবা

হায়াতুন্নবী (সা.) মুফতি মুহিউদ্দিন কাসেম, সিনিয়র পেশ ইমাম, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ।

সব প্রশংসা আল্লাহতায়ালার। যিনি সমস্ত জাহানের পালনকর্তা। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক নবী রসুলগণের সরদার মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর, তার সব আহলে বায়ত ও সাহাবাগণের ওপর। হে মানব সব! আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সর্বসম্মত অভিমত অনুসারে নবীগণ নিজ নিজ কবর শরিফের মধ্যে জীবিত। শহীদগণের প্রতি তাদের কবরের জীবন অধিক অনুভূতিসম্পন্ন। আর শহীদগণের সম্বন্ধে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে,

আল্লাহর পথে যারা নিহত হয় তাদের মৃত বলবে না, বরং তারা জীবিত; কিন্তু তোমরা উপলব্ধি করতে পার না। (সূরা বাকারা : ১৫৪)। মহান আল্লাহ আরও বলেন, ‘যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদের কখনো মৃত মনে করবে না, বরং তারা জীবিত এবং তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তারা জীবিকাপ্রাপ্ত।’ (আলে ইমরান : ১৬৯) কবরে নবীগণের কাছে উম্মতের আমল, সালাম ও দরুদ পৌঁছানো হয়। মুসনাদে আবি ইয়ালা কিতাবে এসেছে : ১. হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীগণ তাদের কবরে জীবিত আছেন।’ (বায়হাকী- হাদিস ১-৪ মুসনাদে আবী ইয়ালা হাদিস ৩৪২৫)।

২. একইভাবে তার থেকে আরেকটি হাদিস বর্ণিত যে, মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে রাতে আমাকে ঊর্ধ্বাকাশে আরোহণ করানো হয়েছিল সে রাতে আমি ‘কাষীবে আহমার’ নামক স্থানে হজরত মূসা (আ.)-এর কবরের পাশে এসেছি, বর্ণানান্তরে ‘তার পাশ দিয়ে অতিক্রম করেছি।’ এবং তাকে নিজ কবরে নামাজরত অবস্থায় পেয়েছি।’ (মুসলিম শরিফ- হাদিস ২৩৪৭)।

৩. হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে নিযুক্ত পৃথিবীতে একদল বিশেষ ফেরেশতা ভ্রমণরত রয়েছে যারা আমার কাছে আমার উম্মতের পাঠানো সালাম পৌঁছে দিতে থাকে। (নাসাঈ শরিফ- সহিহ ইবনে হিব্বান হাদিস-৯১৪)।

৪. হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন : যে ব্যক্তি আমার কবরের পাশে এসে সালাত পাঠ করে তা আমি নিজ কানে শুনি। (বায়হাকী হায়াতুল আম্বিয়া পৃ: ১০৩-১০৫)।

হজরত আওস ইবনে আওস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি মহানবী (সা.) হতে বর্ণনা করেছেন যে, মহানবী (সা.)  ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের সবগুলো দিবসের মধ্যে জুমার দিবসটি সর্বোত্তম। হজরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং তাতেই তার ইন্তেকাল হয়েছে; তাতেই সিঙ্গায় ফুঁ দেবে এবং তাতেই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। সুতরাং সে দিবসে তোমরা আমার প্রতি বেশি সালাত পাঠ করবে। আর তোমাদের সালাত নিশ্চিতভাবে আমার কাছে পেশ করা হয়।’

সাহাবারা বললেন, হে আল্লাহ রসুল (সা.)! আমাদের পাঠানো সালাত আপনার কাছে কীভাবে পৌঁছানো হবে! অথচ আপনি তো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবেন অর্থাৎ তারা বলছিলেন, আপনি তো মাটির সঙ্গে মিশে যাবেন? তার জবাবে মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন : ‘মহান আল্লাহ মাটির জন্য আমার দেহ ভক্ষণ করা হারাম করে দিয়েছেন। (সুনানে আবু দাউদ হাদিস-১০৪৭)। সহী ইবনে খুঝাইমা ৩/১১৮। মুসতাদরাকে হাকেম ১/২৭৮, মুহাম্মদ, আহমাদ হাদিস-১৬১৬২।’

উপরোক্ত সবগুলো হাদিস থেকে সুস্পষ্টভাবে উপলব্ধি করা যায় মহানবী (সা.) তার পবিত্র রওজা শরিফে জীবিত অবস্থায় বিদ্যমান রয়েছেন। অতএব, কিয়ামত পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহ একমাত্র তারই আদর্শ, মত ও পথকে অনুসরণ করবে। এক্ষেত্রে ভ্রান্ত কোনো দলমতের প্রতি বা জঙ্গিবাদের প্রতি মুসলিম উম্মাহকে উদ্বুদ্ধ করা যাবে না।

বিতাড়িত শয়তান হতে আল্লাহর কাছে পানাহ চাই। তারা সবাই আল্লাহ, তার ফিরেশতাগণে এবং তার রসুলগণে ঈমান আনয়ন করেছে। তারা বলে, আমরা তার রসুলগণের মধ্যে তারতম্য করি না। আর তারা বলেন, আমরা শুনেছি এবং পালন করেছি। হে আমাদের প্রতিপালক তোমার কাছে ক্ষমা চাই।   আর প্রত্যাবর্তন তোমারই নিকট।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর