১০ অক্টোবর, ২০২১ ২০:০১

আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষকরা

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষকরা

আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষকরা।

শীত আসতে আর কিছু দিন বাকি। এ সময়টা মূলত শীতকালীন সবজি চাষের উপযুক্ত সময়। ঠিক তাই অধিক লাভের আশায় আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁর কৃষকরা। আগাম শীতকালীন সবজি বাজারে তুলতে পারলেই অধিক টাকা পাওয়া যাবে-এমন ধারণা থেকে কৃষকরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

এবছর বন্যা না হওয়ায় উঁচু জমিতে শীতকালীন বিভিন্ন জাতের সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় কৃষক পরিবারগুলোতে ব্যস্ততা বেড়েছে। কাক ডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে কৃষকরা জমিতে হাল চাষ, চারা রোপণ, ক্ষেতে পানি ও ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার করাসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

শুধু নিজেদের চাহিদাই নয়, বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এসব সবজি। শীতের শুরুতে নওগাঁ সদরসহ পাশের জেলাগুলোতে বিভিন্ন জাতের সবজি পাঠাবেন উপজেলার কৃষকরা। সবুজে সবুজে ভরে উঠছে মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি শিম গাছ, শোভা পাচ্ছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, বেগুন, মুলা, করলা, পটল, পালং ও লালশাকসহ হরেক রকমের শীতকালীন সবজির চারা। তাই মাঠে মাঠে এসব ফসল পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত কৃষকরা।

কাক ডাকা ভোরে কোদাল, নিড়ানি, বালতি, স্প্রে মেশিন ইত্যাদি নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন কৃষকরা। জমিতে নেমে পড়ছেন সবজি পরিচর্যায়। বিকেল অবধি মাঠে থেকে চারার গোড়ায় পানি ঢেলে সবাই বাড়ি ফিরছেন। তাদের কেউ দাঁড়িয়ে কোদাল চালাচ্ছেন, অনেকেই গাছের গোড়ালির পাশ দিয়ে ঘোরাচ্ছেন নিড়ানি। কেউবা খালি হাতেই গাছগুলো ঠিক করছেন। কেউ আবার নেতিয়ে পড়া চারার স্থলে সতেজ চারা প্রতিস্থাপন করছেন। এভাবে শীতকালীন সবজি নিয়ে চলছে কৃষকের কর্মযজ্ঞ। বেড়েই চলছে কৃষকদের কাজের চাপ। ধান চাষে তেমন একটা সুবিধা করতে পারছেন না অনেক কৃষক। কোনোভাবেই লোকসান ঠেকাতে পারছেন না তারা। তাই রকমারি সবজি চাষে ঝুঁঁকে পড়েছেন জেলার অনেক কৃষক।

আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম ও মাগুড়াপাড়া গ্রামের কৃষক জালাল উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, সবজি চাষের জন্য খুব বেশি জমির প্রয়োজন হয় না। তুলনামূলকভাবে মূলধনও কম লাগে। পরিশ্রমও তুলনামূলক কম। তবে সেবায় ত্রুটি করা যাবে না। কিন্তু রোগবালাই দমনে সবজিতে কীটনাশক বেশি প্রয়োগ করতে হয়। স্বল্প সময়েই সবজি বিক্রি উপযোগী হয়ে ওঠে। প্রায় দিনই বাজারে সবজি বিক্রি করা যায়। পরিবারের চাহিদাও মেটানো সম্ভব হয়। এতে সবজি থাকা পর্যন্ত প্রত্যেক কৃষকের হাতে কম-বেশি টাকা থাকে। যা অন্য ফসলের বেলায় সম্ভব নয়। এছাড়া চলতি মৌসুমে সবজির দামও বেশ ভালো। সব মিলিয়ে সবজি চাষকেই এসব কৃষক লাভজনক মনে করছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামছুল ওয়াদুদ জানান, কৃষকদের সবজি চাষে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। বর্তমানে শিম, বেগুন, লালশাক, মুলাশাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটোর আবাদ চলছে। সবজি চাষে যুক্ত জেলার কৃষকেরা এবার বেশ উৎফুল্ল। কারণ তারা প্রাকৃতিক অনুকূল পরিবেশের জন্য এবার উৎপাদিত ফসলের ফলন ও দাম বেশ ভালো পাবেন। কৃষি বিভাগের লোকজনের নিয়মিত মনিটরিংয়ে আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার বেড়েছে। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে উৎপাদন বাড়ায় কৃষকদের মুনাফাও বেড়েছে কয়েকগুণ। 

বিডি প্রতিদিন/এমআই

সর্বশেষ খবর