৮ জানুয়ারি, ২০২০ ১৯:২২

সিলেটের কমলার প্রশংসা করলেন রাষ্ট্রপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটের কমলার প্রশংসা করলেন রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

সিলেটের কমলার প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, এখানকার কমলার স্বাদ অনন্য। যারাই এই কমলা খান, তারাই এই স্বাদ ভুলতে পারেন না। 

বুধবার বিকালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় সমাবর্তনে লিখিত বক্তব্য শেষে আবদুল হামিদ বলেন, তাদের মধ্যবিত্ত একান্নবর্তী পরিবার ছিল। ফলে ছোটবেলায় কমলা খাওয়ার সুযোগ খুব বেশি ছিল না।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ছেলে-বেলায় বাড়িতে কমলা এলে আমরা বড়জোর ১/২টা পেতাম। একবার আমার ছোটবোন কমলা খাওয়ার জন্য একটা বুদ্ধি বের করলো। সে বললো, ‘আমার যদি জ্বর হয়, তবে সবাই কমলা নিয়ে আসবে। তখন অনেক কমলা খেতে পারবো।’ সত্যি সত্যিই সপ্তাহ খানেক পরে তার জ্বর হলো। ওই সময়েই কাকতালীয়ভাবে আমাদের বাড়ির পাশের হাওর দিয়ে যাওয়া একটি কমলাবাহী নৌকা ডুবে যায়। নৌকাটি সিলেট থেকে কমলা নিয়ে যাচ্ছিল। তখন ক্লাস থ্রি বা ফোরে পড়তাম। কিন্তু সাঁতার জানতাম।

আবদুল হামিদ বলেন, নৌকা ডুবে যাওয়ার পর আমরা ভাই বোনেরা ঝাঁপিয়ে পড়লাম হাওরে। এরপর ভেসে যাওয়া কমলাগুলো সংগ্রহ করে এনে মালিককে ফিরিয়ে দিলাম। তখন ওই লোকটি খুশি হয়ে আমাদের অনেকগুলো কমলা উপহার দেয়। এরপর সেগুলো বাড়িতে এনে আমরা ভাই বোনেরা ভাগ করে খাই। তবে এরমধ্যে ২০-২৫টি কমলা একা খাওয়ার জন্য আমি লুকিয়ে রেখেছিলাম। তবে ওই কমলা আমি খেতে পারিনি। কারণ সপ্তাহখানেক পরে লুকিয়ে রাখা জায়গায় গিয়ে দেখি কমলাগুলো পচে গেছে।
 
বর্তমানে কমলাসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যে যেভাবে ফরমালিন ও কেমিক্যাল মেশানো হচ্ছে, এর তীব্র সমালোচনা করেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, সব জায়গায় এখন শুধু চীনের কমলা পাওয়া যায়। যা দেশে আনতে আড়াই মাস লাগে। এসবে ফরমালিন দেয়া থাকে। শুধু ফলমূল না শাক-সবজি, মাছ, মাংস সবকিছুতেই ফরমালিন। এসব খাওয়ার ফলে দেশে ক্যান্সারের রোগী প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০/৩০ বছর আগেও এতো ক্যান্সারের রোগীর কথা শুনতাম না। বেশি লাভবান হওয়ার জন্য যারা ফরমালিন ও কেমিক্যাল দিচ্ছে তারা গণহত্যা করছে। এদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার এবং সরকারেরও ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
 
প্রসঙ্গত, শাবির সমাবর্তনে ২০০০-০১ থেকে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ৬ হাজার ৭৫০ জন গ্র্যাজুয়েটের ডিগ্রি প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি। তাদের মধ্যে ২০ জন শিক্ষার্থীকে দেয়া হয় রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক। অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন কথা সাহিত্যিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম। এসময় আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর