১৬ মার্চ, ২০২০ ১৮:৫৮

ঢাবির ক্লাশ-পরীক্ষা ২৮ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত, হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ঢাবির ক্লাশ-পরীক্ষা ২৮ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত, হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা

করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামীকাল ১৮মার্চ থেকে ২৮মার্চ পর্যন্ত ১১দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সোমবার উপাচার্য কার্যালয় সংলগ্ন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে প্রশাসনের এক জরুরি সভা শেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। 

এদিকে, হলসমূহ বন্ধের বিষয়ে বিশ্ববিদালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ঘোষণা না আসলেও এরই মধ্যে হল ছাড়তে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণায় বিকেল নাগাদ অধিকাংশ গণরুম ফাঁকা হয়ে যায়।  
 
এর আগে, সোমবার সকাল ১০টায় করোনা পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাস বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠকে বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে এতে উপ-উপাচার্য(প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন, প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রাব্বানী, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হল প্রাধ্যক্ষ, বিভাগের চেয়ারম্যান ও ইনস্টিটিউটসমূরহের পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক শেষে সভার সিদ্ধান্ত জানাতে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন উপাচার্য। তিনি বলেন, ‘সাময়িকভাবে দুটি কার্যক্রম স্থগিত করা হল। একটি হল ক্লাস ও আরেকটি হল পরীক্ষা কার্যক্রম। আগামী ১৮মার্চ থেকে ২৮মার্চ পর্যন্ত এগুলো বন্ধ থাকবে। এই সময়ের মধ্যে থাকা আন্তঃবিভাগ ক্রিয়াসমূহও বাতিল করা হয়েছে।’ এই সময়ে হলসমূহ বন্ধ না রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকলে সেটির একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।  

ছুটির কারণে শিক্ষা কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে অনুরোধ করা হবে, এ সময়ের মধ্যে যে পরীক্ষা কার্যক্রমগুলো আছে, সেগুলো যাতে আবারও পুনবিন্যাস করেন। কারণ আমাদেরকে লক্ষ্য রাখতে হবে আমাদের শিক্ষার্থীদের গ্র্যাজুয়েশন কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব যাতে না পড়ে। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ৩১ মার্চ পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধের কথা বললেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২৮ মার্চ পর্যন্ত বন্ধের সিদ্ধান্তে কেন নিল-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে উপাচার্য বলেন, পরবর্তী পরিস্থিতিতে যেটি প্রয়োজন হয়, জাতীয় স্বার্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক সেভাবেই সাড়া দিবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা:
এদিকে, ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণায় হল ছাড়তে শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলের শিক্ষার্থীরা। যদিও কোন কোন শিক্ষার্থী এর আগেই হল ছেড়ে চলে গেছেন। তবে, আজকের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণায় বিকেলের মধ্যেই হল ছেড়ে নিজের বাড়ির পথে রওনা দেন অধিকাংশ শিক্ষার্থী। এর বাহিরে হলে থাকা অবশিষ্ট শিক্ষার্থীরাও চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। 

বিকেলে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল থেকে বের হচ্ছিলেন উর্দু বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু সাজিদ। তিনি জানান, ‘হলের মধ্যে আমরা এক ধরনের আতঙ্কের মধ্যে আছি। কারণ, এখানে সবাইকে একসাথে থাকতে হয়। একজন যদি সংক্রমিত হয়, তবে আমরা সবাই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবো। তাই বাড়িতে চলে যাচ্ছি।’

হলটিতে প্রায় আটাশটি গণরুম আছে। কক্ষভেদে  ১০ থেকে ৩০জন শিক্ষার্থী এসব কক্ষে থাকেন। বিকেলে সরেজমিনে গণরুমগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, ইতোমধ্যেই অনেক শিক্ষার্থী চলে গেছে। কক্ষগুলোতে পাঁচ-সাজন করে শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন। যারা আছেন তারাও চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। একই অবস্থা দেখা গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য হলগুলোতেও। 


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর