১৯ মে, ২০২০ ১৬:২৭

করোনা জয়ের নেশায় কাজ করছে চবি’র একদল শিক্ষার্থী

বাইজিদ ইমন, চবি:

করোনা জয়ের নেশায় কাজ করছে চবি’র একদল শিক্ষার্থী

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোনোরকম আর্থিক প্রণোদনা ছাড়াই চট্টগ্রামের প্রথম করোনার নমুনা পরীক্ষার ল্যাবে (বিআইটিআইডি) করোনা শনাক্তের কাজে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। 

তারা হলেন বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের খালিদ জুহানী রাফি ও একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের মো. ফজলে রাব্বি এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের মাস্টার্সের আসমা সালাউদ্দিন এবং একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের সাখাওয়াত হোসেন। 

এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে বিআইটিআইডিতে করোনার নমুনা শনাক্তের কাজে ল্যাব সহযোগী হিসেবে স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করে যাচ্ছেন তারা।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের সাখাওয়াত হোসেন বলেন, অনেকেই বাসায় থেকেও আক্রান্ত হচ্ছেন। সেক্ষেত্রে আমি কারো সেবা দিয়ে যদি আক্রান্ত হই। তাতেও মন্দ কিসের? অন্তত এটা ভেবে নিজেকে শান্তনা দিতে পারবো যে দেশের জন্য কিছু একটা করেছি। আর আমার তো কিছুটা হলেও ধারণা আছে। ভয় কিসের? মরণ তো সবারই হবে একদিন। আর্থিক সহযোগিতার ব্যাপারে সাখাওয়াত বলেন, কিছু কাজ টাকা দিয়ে হয় না। লাগে কিছু ত্যাগী মানুষ। আমার প্রথমে ভয় করলেও এখন অনেক সাহস যোগ হয়েছে। এখন মনে হচ্ছে করোনা দুর্যোগের শেষ পর্যন্ত আমি সেবা দিয়ে যেতে পারবো।

একই বিভাগের আসমা সালাউদ্দিন বলেন, আমরা জানতাম এ কাজে আমাদেরকে কোনোরকম সম্মানী দেওয়া হবে না। তবু আমরা আমাদের দায়িত্ববোধ থেকে কাজ করে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে আমার পরিবারের অনেক ভূমিকা রয়েছে। তারা আমাকে এ কাজে মানসিক ও সার্বিক সহযোগিতা করছেন। আমার আব্বু-আম্মু বড় বোন এবং ছোট ভাই সবাই আমার এ কাজে সমর্থন করছেন। 

বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের খালিদ জুহানী রাফি বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেশের প্রতি একটা দায়বদ্ধতা থাকে। যখন শুনেছি আমার অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগানোর সুযোগ আছে। সেটি আবার দেশের ক্রান্তিকাল মুহূর্তে। তাও আবার গণমানুষের জন্য। যখন অন্য আট দশজন চাইলেও এ সেবা দিতে পারবে না। তখন আর নিজেকে দমিয়ে রাখিনি। নিজের দায়বদ্ধতা থেকে দেশকে বাঁচাতে, দেশের মানুষকে বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিতে বেরিয়ে পড়েছি। 

একই বিভাগের ফজলে রাব্বি বলেন, দেশের জন্যই এত ঝুঁকি এ কাজ করা আসলে। আর আমার বাবা প্রথমে আমাকে বলেছিল আমাকে এ কাজ করতে। আম্মু প্রথমে একটু অমত থাকলেও এখন খোঁজখবর নিচ্ছেন নিয়মিত। এসব কাজ আসলে সব সময় করার সুযোগ থাকে না। আগামী ১০০ বছরেও হয়ত একরম কাজ করার সুযোগ নাও আসতে পারে। এক্ষেত্রে বিভাগের সভাপতি ড. আতিয়ার রহমানের স্যারের একটি ব্যবহারিক কোর্স আমাদের অনেক কাজে দিয়েছে।


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর