লকডাউনে 'জরুরি ও বিশেষ সেবার' আওতায় এনে শিক্ষার্থীদের ভিসা কার্যক্রম পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা এ দাবি জানান।
তারা জানান, করোনা মহামারীর কারণে বাংলাদেশে জার্মান দূতাবাসে ভিসা সংক্রান্ত কার্যক্রম প্রয়োজনের তুলনায় সীমিত করা হয়েছে। লকডাউনের প্রভাবে দূতাবাস অফিসে শিক্ষার্থীদের ভিসা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। এতে প্রায় সহস্রাধিক আলোকিত সম্ভাবনাময়ী শিক্ষার্থীদের জার্মানিতে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের বিষয়টি বর্তমানে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
জার্মানিতে গত ৩ সেমিস্টার অনলাইন ভিত্তিক পাঠ্যক্রম পরিচালিত হলেও আগামী সেমিস্টার থেকে জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসরুম ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমতাবস্থায়, সর্বাত্মক স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়মিত বাংলাদেশস্থ জার্মান দূতাবাসের কার্যক্রম পরিচালিত না হলে যথাসময়ে ভিসা পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। ফলাফল স্বরূপ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হতে শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব বাতিলের শঙ্কা রয়েছে। এমতাবস্থায়, হুমকির মুখে পড়বে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন ও ক্যারিয়ার। আশাহত হবে সহস্র পরিবার, ভেঙে পড়বে শিক্ষার্থীদের মনোবল।
শিক্ষার্থীরা জানান, জার্মানিতে শিক্ষা ব্যবস্থা থিওরি, প্র্যাকটিক্যাল ও ইন্টার্নশিপের সমন্বয়ে পরিচালিত হয়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে থিওরি ক্লাস অনলাইনে পরিচালিত হলেও প্র্যাকটিক্যাল এবং ওয়ার্কশপ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরিচালিত হয়। প্রতিষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত থেকে ইন্টার্নশিপে অংশগ্রহণ করতে হয়। তাই, শুধু থিওরি ক্লাসে অংশগ্রহণ করে একজন শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেকে সমৃদ্ধ করার সুযোগ একেবারেই ক্ষীণ। তাই শিক্ষার্থীগণের বেশিরভাগ বিষয়ের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহন করা সম্ভব হচ্ছে না। লাইব্রেরিতে প্রবেশ করার সুযোগ না থাকায় রিসার্চ ভিত্তিক অধ্যয়ন থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। এমতাবস্থায় শুধু ভিসা জটিলতার কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অনেক শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহন করছে, ইন্টারনেট কানেকশনের সমস্যার কারণে অনেক শিক্ষার্থী ক্লাস লেকচার যথাযথভাবে বুঝতে পারছে না। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীরা তাদের প্রেজেন্টেশন ও উদ্ভাবনী ক্ষমতা যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডর্মেটরি এবং স্বাস্থ্য বীমায় চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীদেরকে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বাংলাদেশ থেকে পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে করে তারা প্রাপ্ত সুবিধাদি ভোগ করতে না পারায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা/নাহিদ