আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত মো. আশিকুল ইসলাম বিটুর কোর্স রেজিস্ট্রেশনের আবেদন নাকচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
একই সাথে বিটুর স্টে-অর্ডারের বিপক্ষে হাইকোর্টে আপিলের আইনি প্রক্রিয়া নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। এ বিষয়ে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. মো. মিজানুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, “কোর্স রেজিস্ট্রেশনের যে আবেদন সে করেছিল, তা নাকচ করা হয়েছে। এছাড়াও কোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিলের সকল আইনি প্রক্রিয়াও শুরু করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরে বাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আশিকুলসহ ২৬ জনকে আজীবন বহিষ্কার করে বুয়েট কর্তৃপক্ষ। বহিষ্কারাদেশের বিরুদ্ধে আশিকুলের করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত গত ১০ ফেব্রুয়ারি বুয়েট কর্তৃপক্ষের বহিষ্কারাদেশ স্থগিত করেন। আশিকুল ওই স্থগিতাদেশ নিয়ে বুয়েট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ গত ৪ এপ্রিল তাকে ক্লাসে ফেরার অনুমতি দেয়। গত ২২ মে কেমিকৌশল বিভাগের লেভেল-৩ টার্ম-১ এর একটি কোর্সের অনলাইন ক্লাসে উপস্থিত থাকতে দেখা যায় আশিকুল ইসলাম বিটুকে। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। এরপরই তারা বিটুর কোর্স রেজিস্ট্রেশন বাতিল এবং আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার জন্য স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত কেউ যাতে আর একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরতে না পারে তা নিশ্চিত করার দাবি জানাতে থাকেন। দাবি মানা না হলে ৩০ মে থেকে সকল একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণাও দেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের মানবন্ধন
এদিকে, ভবিষ্যতে এরকম ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় তা নিশ্চিতের দাবিতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা।
এ সময় বিটুর রেজিষ্ট্রেশনের আবেদন নাকচ করায় বুয়েট কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানান তারা। একই সাথে আগামী ২৯ মে’র মধ্যে বিটুর স্টে-অর্ডারের বিরুদ্ধে আদালতে আপিল করতে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান তারা।
পরে শিক্ষার্থীরা এক বিবৃতিতে বলেন, “আমাদের প্রত্যাশা এই যে ২৯ মে’র মধ্যে বুয়েট প্রশাসন তাদের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ ও ভবিষ্যৎ প্রতিশ্রুতি অফিসিয়াল বিবৃতি/নোটিস আকারে প্রকাশ করবেন। পরবর্তীতে আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আমরা দু’টি বিষয় বিবেচনা করছি। সেগুলো হল-
১. ২৯ মে’র মধ্যে বুয়েট প্রশাসন আদালতের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবে।
২. কোনও কারণে এই সময়ের মধ্যে আপিল করতে না পারলে, আপিল করার প্রতিশ্রুতি একটি গ্রহণযোগ্য সময়সীমাসহ অফিসিয়াল বিবৃতি/নোটিসে অন্তর্ভুক্ত করবে।
উপর্যুক্ত বিষয় দু’টির যেকোনও একটি কার্যকরের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি পুনর্বিবেচনা করে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসব।
বিডি প্রতিদিন/কালাম