রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নতুন উপ-উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম। আজ শনিবার তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। প্রায় তিন বছর ধরে ‘বিতর্কিত’ উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহানের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছিলেন সুলতান-উল-ইসলাম। সামনে থেকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গড়ে তুলেছেন দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকদের জোট। তাদের আন্দোলনের কারণে ইউজিসি আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে।
ইউজিসি তদন্তে সোবহানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের সত্যতা পায়। এছাড়া শেষ কর্মদিবসে অধ্যাপক আবদুস সোবহান ১৩৮ জনকে নিয়োগ দিয়ে পুলিশ প্রহরায় ক্যাম্পাস ছাড়েন। এই নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত চার বছরে সোবহান প্রশাসনের কর্মকাণ্ডে বিতর্কে পড়ে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়। যার দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়। এসময়ে ইমেজ সংকটে পড়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বিদ্যাপীঠটি। ফলে নতুন প্রশাসনের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হারানো ইমেজ ফিরিয়ে আনা।
তবে প্রশাসন চালাতে গিয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলামকে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। সাবেক উপাচার্য আবদুস সোবহানের ঘনিষ্ঠরা তার নিয়োগের পর থেকেই বিরোধিতা করে আসছেন। শেষ কর্মদিবসে আবদুস সোবহান যাদের নিয়োগ দিয়েছেন, তাদের এই নিয়োগকে ‘অবৈধ’ বলেছিলেন অধ্যাপক সুলতান। এছাড়া যাদের নিয়ে এতদিন সোবহান বিরোধী আন্দোলন করেছেন, তাদের প্রত্যাশা যোগ হবে এর সঙ্গে। ফলে চ্যালেঞ্জ নিয়েই চেয়ারে বসলেন অধ্যাপক সুলতান।
নিজের চ্যালেঞ্জের বিষয়টি স্বীকারও করেছেন সদ্য দায়িত্ব নেওয়া অধ্যাপক সুলতান। তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যে নিয়োগ বাণিজ্য, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অন্যায়-অনিয়মগুলো হয়েছে, সেগুলো বন্ধ করার জন্য আমি কাজ করতে চাই। কাজ করতে গেলে ভুল-ত্রুটি হতে পারে। যারা এতদিন পাশে ছিলেন, তারা আমাকে পরামর্শ দেবেন। আমি যদি নিজেকে শুধরে নিতে পারি। তারপরেও যদি আমি না শুধরে যাই, তাহলে অন্য সময়ের মতো আমার বিরুদ্ধেও তারা পদক্ষেপ নেবেন।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক শাহ্ আজম বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম মাঠে ছিলেন। তার সেই অবস্থানটা এখনও ধরে রাখার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় যে ইমেজ সংকটে পড়েছে, সেটি ফিরিয়ে আনতে কাজ করতে হবে তাকে।
গত ১৩ জুলাই অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলামকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক ও মুখপাত্র ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর