১৮ জানুয়ারি, ২০২২ ২০:০২

শাবিপ্রবি উপাচার্যের পদত্যাগ চায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

শাবিপ্রবি উপাচার্যের পদত্যাগ চায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-শাবিপ্রবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের একটি প্ল্যাটফর্ম ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক'। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে সংগঠনটি। 

মঙ্গলবার ৪৭ জন শিক্ষক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তারা বলেন, পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে কেবল যে উপাচার্য ব্যর্থ হয়েছেন তাই নয়, বরং শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলার নির্দেশ দিয়ে ফৌজদারি অপরাধ করেছেন তিনি। আন্দোলনের মুখে প্রভোস্ট পদত্যাগ করলেও, শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা ইতোমধ্যে ঘটে গিয়েছে। 

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারাবাহিকতায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও (শাবিপ্রবি) প্রশাসনের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করছে পুলিশ। লাঠিচার্জ থেকে শুরু করে সাউন্ড গ্রেনেড ইত্যাদি নানান উপায় অবলম্বন করে পুলিশ শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত করেছে, হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে অনেককে। অথচ একটি ছোট পরিসরে, ন্যায্য কিছু দাবিতে, এক শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দিয়ে ঘটনার শুরু।’

তারা বলেন, বাংলাদেশে, বিশেষত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যারা পরিচালনা করেন, তারা আচার-আচরণে প্রায়শই শাসকের ভূমিকায় আবির্ভূত হন এবং শিক্ষার্থীরা যেন প্রজা এমন আচরণ করেন। তাদের শাসন এক পর্য়ায়ে স্বৈরশাসনে রূপ নেয়, আন্দোলনকারীদের দমন করতে কখনো ক্ষমতাসীন দলের সংগঠন ছাত্রলীগ, কখনোবা পুলিশকে লেলিয়ে দেন তারা। অথচ উপাচার্য়-প্রভোস্ট এসব পদে শিক্ষকরাই থাকেন। নিজের পদ-গদি রক্ষার জন্য এরা শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত করতে পিছপা হন না। গোয়েন্দাদের সাহায্য নিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের নজরদারি করেন, মামলা ঠুকে দেন, রক্তাক্ত করেন। দলীয় রাজনীতিকদের মতো শিক্ষার্থীদের কাউকে শিবির, কাউকে মৌলবাদী, কাউকে জঙ্গি এসব অভিধা দিয়ে থাকেন। শাবিপ্রবিতে যা ঘটেছে, তার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের নেই। 

বিবৃতিতে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে তাদের হয়রানি বন্ধ করার দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি শাবিপ্রবিতে আবাসনসহ শিক্ষাসংক্রান্ত সব সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা এবং উপাচার্যসহ সব শিক্ষক নিয়োগে দলীয় পরিচয়কে তুচ্ছ করে মেধা ও শিক্ষাগত যোগ্যতাকে প্রধান করে তোলারও আহ্বান জানানো হয়। 

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী শিক্ষকদের মধ্যে আছেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আনু মুহাম্মদ, সাঈদ ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবায়েত ফেরদৌস, গীতি আরা নাসরীন, মো. কামরুল হাসান, মোহাম্মদ তানজীমউদ্দীন খান, সামিনা লুৎফা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌভিক রেজা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মো, সাদেকুল ইসলাম প্রমূখ। 

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার শাবিপ্রবি’র সিরাজুন্নেসা হলের ছাত্রীরা তাদের কিছু দাবির প্রেক্ষিতে হলটির প্রাধ্যক্ষের দুর্ব্যবহারের শিকার হন। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে কয়েকবার আলোচনা করলেও তাতেও সমাধান পাননি তারা। ঘটনার ধারাবাহিকতায় প্রথমে ছাত্রলীগ, সর্বশেষ গত রবিবার উপাচার্যের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশী হামলার ঘটনা ঘটে। এখন শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। এ নিয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর খোলা চিঠিও পাঠ করেছেন তারা। 

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর