জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ছয়টি হলের কাজ এখনো শেষ হয়নি। এছাড়াও নবনির্মিত হলগুলোর নাম ঘোষণা ও উদ্বোধনের তারিখ চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর চিঠি পাঠালেও এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এতে চলতি মাসেও নবনির্মিত হলের উদ্বোধন না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিস। ঠিক কবে হতে পারে নতুন হলের উদ্বোধন তা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। এই নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা শাখার তথ্য মতে, আগামী ১৫ জানুয়ারি থেকে ৫১ ব্যাচের ক্লাস শুরুর কথা রয়েছে। তবে নবীন শিক্ষার্থীদের হল এলোটেড এখনো ঠিক না হওয়ায় ক্লাস পেছানোর সম্ভাবনাও জানিয়েছেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) সৈয়দ মোহাম্মদ আলী রেজা।
সরেজমিনে দেখা যায়, নির্মাণাধীন ছয়টি হলের মধ্যে ছাত্রীদের ১৮ নং ও ছাত্রদের ২১ নং হলের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তবে আবর্জনা পরিষ্কার, ওয়াল ওয়াশিং, আসবাবপত্র সরবরাহ, লিফট স্থাপন, বৈদ্যুতিক সাব স্টেশনের সক্ষমতা বাড়ানো, বিদ্যুৎ সংযোগ ও পানির পাইপ লাইন স্থাপন করাসহ কতিপয় কাজ শেষ হয়নি বলে জানিয়েছেন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান হাসান সন্সের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী। এসব কাজ শেষ করে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করতে আরও একমাস সময় লাগতে পারে বলে জানান তিনি।
এদিকে প্রকল্প অফিস থেকে পাঁচ দফায় হল নির্মাণ কাজ সম্পন্নের তারিখ জানানো হয়েছে। প্রথম দফায় বলা হয়, ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হবে নির্মাণ কাজ। এর প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ৪৯ ও ৫০ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নতুন হলে তোলার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ে নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। ফলে পুরোনো হলগুলোতে গণরুমেই মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের।
সবশেষ গতবছরের ডিসেম্বরে ২টি হলের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে দাবি করে উদ্বোধনের কথা জানান প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দীন। এর আগে, বিভিন্ন সংবাদ সম্মেলনে নভেম্বরেই ২টি হলের উদ্বোধনের কথা জানিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম।
এবিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মো. নাসির উদ্দীন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, 'হলগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে, তবে বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপিত হলে দুটি হল আমাদের কাছে এ মাসে হস্তান্তরের কথা জানিয়েছে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান। আর উদ্বোধনের তারিখের বিষয়ে আমি তেমন কিছু জানি না।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, '৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে আগামী ১৫ জানুয়ারির আগে নতুন হল উদ্বোধনের চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন প্রশাসনিক মিটিংয়েও এবিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আমরা হল প্রভোস্টদেরকে নিয়ে এবিষয়ে আবার কথা বলবো। তবে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এখনো সাড়া না পাওয়ায় নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। উনি যেদিন বলবেন সেদিন উদ্বোধন করা হবে।'
বিডি প্রতিদিন/হিমেল