অ্যাম্বুলেন্স দিতে দেরি করায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) চিকিৎসা কেন্দ্র ভাঙচুর এবং ড্রাইভারকে মারধর করেছেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্যসহ তার সঙ্গীরা। মাদকাসক্ত অবস্থায় এমনটি করেছে বলে দাবি মেডিকেল কর্তৃপক্ষের। সোমবার রাত ১২ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আরও দুই অভিযুক্ত হলেন একই বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আতিক ও সালমান আজিজ। মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র পরিদর্শন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ দিলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান।
জানা যায়, সোমবার রাত ১০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে চিকিৎসা গ্রহণ করতে আসেন কাব্য। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহিদুর রহমান মিল্টন তাকে ইনজেকশন দেন। আধঘণ্টা পর কুষ্টিয়া পাঠানোর জন্য ডাক্তারের সাথে বাকবিতণ্ডা শুরু করেন কাব্য। ডাক্তার তাকে অ্যাম্বুলেন্স জরুরি ছাড়া দেওয়া হয় না বলে জানান। এরপর চিকিৎসা কেন্দ্রের অফিসের চেয়ার টেবিল-চেয়ার ভাঙচুর করেন এবং প্রক্টরিয়াল বডি অনুমতি না দেয়ায় গাড়ি দিতে রাজি না হওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার শাহিনুজ্জামানকে মারধর করেন। পরে কুষ্টিয়ায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শী প্যাথলজি বিভাগের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর বলেন, ‘তিনি (কাব্য) এসে দেয়ালে লাথি দেয়া ও অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন। পরে অসুস্থতার জন্য ইনজেকশন দেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তারকে কুষ্টিয়া পাঠাতে জোর করেন। এতে একটু সময় লাগায় তিনি ভাঙচুর করতে থাকেন।’
অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘আমাকে সে (কাব্য) ফোন দিয়ে গাড়ি নিয়ে যেতে বলে এবং পরিচয় জানতে চাইলে হুমকি দিতে থাকে। পরে খোঁজাখুঁজি করে তাকে ক্যাম্পাসের বাইরে বিএম ছাত্রাবাসের পাশে ঘাসে শুয়ে থাকা অবস্থায় পাই। এতে মেডিকেলে নিয়ে আসার পর ডাক্তার তাকে ইঞ্জেকশন দেন। কিন্ত সেবা দেয়ার পর কেন্দ্রেই বসে থাকেন ও কুষ্টিয়া যেতে চান। কিন্ত প্রক্টরিয়াল বডি অনুমতি না দেয়ায় আমি গাড়ি দিতে রাজি না হলে আমাকে মারধর করেন।’
এ বিষয়ে চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সকালে এসে জরুরি বিভাগে সকল কিছু ভাঙচুর অবস্থায় পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয প্রশাসনকে জানিয়েছি এবং লিখিত অভিযোগ দিব। এখন পুলিশ তদন্ত করছে এবং এর একটি সুষ্ঠু বিচার আমি দাবি করছি।
প্রসঙ্গত, এর আগে টাকা ছিনতাই ও দেশীয় অস্ত্র বহনের অভিযোগে অভিযুক্ত কাব্যের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্ত্রসহ আটক হওয়ার পর সাময়িক বহিস্কার করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিকিউরিটি ইনচার্জ আব্দুস সালাম সেলিমের সাথে খারাপ আচরণ ও গলায় ছুরি ধরারও অভিযোগ রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল