ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে লেজুড়বৃত্তি ও গঠনতন্ত্র লংঘনের অভিযোগ এনে একযোগে পদত্যাগ করেছে সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার ২১ সদস্যের কমিটি। রবিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে এমন ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
তবে, গঠনতন্ত্র লংঘনের অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্র থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘গঠনতন্ত্র লংঘনের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা গঠনতন্ত্রের কোন ধারায়ই উল্লেখ নেই’। এমনকি গঠনতন্ত্রটিও চূড়ান্ত নয় বলে এতে জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে ‘ঢাবি শাখার ব্যানারে পদত্যাগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা’র কথাও জানানো হয়।
উল্লেখ্য, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুর ও রেজা কিবরিয়ার নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদের মধ্যকার চলমান বিরোধের জের ধরেই ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে। দলটির বিরোধের মধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামীন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বিবৃতি দিয়ে স্পষ্টত নুরের পক্ষাবলম্বন করে। পরে গত ১ জুলাই এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের দুইজনকে গণ অধিকার পরিষদে সাময়িকভাবে সদস্য করে প্রথম কাউন্সিলে ভোটাধিকারও দেওয়া হয়। এমন প্রেক্ষাপটেই তাদের বিরুদ্ধে লেজুড়বৃত্তি ও সংগঠনের গঠনতন্ত্র লংঘনের অভিযোগ এনে একযোগে পদত্যাগ করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি কমিটি।এদিকে, তাদের অভিযোগের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ছাত্র অধিকার পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, গণঅধিকার পরিষদের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ছাত্র অধিকার পরিষদ সংগঠনকে সুসংহত ও সুশৃঙ্খল রাখতে গত ২১ জুন জরুরি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয়, যা একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হয়ে থাকবে। এ ছাড়া গণ অধিকার পরিষদের গঠন প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখায় বিন ইয়ামীন মোল্লা ও আরিফুল ইসলাম আদীবকে ১ জুলাই এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সাময়িকভাবে সদস্য করে প্রথম কাউন্সিলে ভোটাধিকার দেয়া হয়, যা সম্মানসূচক হিসাবে বিবেচিত।
এতে আরও বলা হয়, ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র লংঘনের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা গঠনতন্ত্রের কোনো ধারায়ই উল্লেখ নেই। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দলোন হয়, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে একটি খসড়া গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা হয়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারীতে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ছাত্র অধিকার পরিষদের উদ্যোগে যুব অধিকার পরিষদ ও শ্রমিক অধিকার পরিষদ গঠিত হয়। এবং ২০২১ সালে ছাত্র অধিকার পরিষদ ও উক্ত দুই সংগঠনের উদ্যোগে রাজনৈতিক দল গণ অধিকার পরিষদ গঠিত হয়। এমতাবস্থায় ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত একটি রাজনৈতিক রুপান্তর প্রক্রিয়া চলমান। ছাত্র অধিকার পরিষদের খসড়া গঠনতন্ত্রটি প্রক্রিয়াধীন, এখনো চূড়ান্ত নয়।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল