ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের কর্মীদের দুপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মুফতাইন আহমেদ সাবিক ছুরিকাঘাতে আহত হন।
রবিবার দুপুর ২টায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা শেষে মিলনায়তনের সামনে এই মারামারির ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আলোচনা সভায় অংশ নিতে শাখা ছাত্রলীগে কর্মীরা মিলনায়তনে ঢোকার সময় আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ ও জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শামীম এবং হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ ও শেখ রাসেল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আশিক কোরাইশির মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় শামীম কোরাইশিকে পরে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। পরে আলোচনা সভা শেষে এ নিয়ে দুজনের মধ্যে পুনরায় কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে এক পর্যায়ে জিয়া হল ও শেখ রাসেল হলের ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে মারামারির সূত্রপাত ঘটে। মিলনায়তনের সিঁড়িত মারামারি শুরু হয়ে আম বাগানের বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় দুপক্ষের মধ্যে মারামারি। মারামারির সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত ছাত্র আলাল ইবনে জয়কে মূল ভূমিকায় দেখা গেছে বলে জানা যায়। এসময় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত, সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দদের পরিস্থিতি শান্ত করে।
মারামারির সময় সাবিকের হাতের বাহুতে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে আহত অবস্থায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকিব তাকে ছুরিকাঘাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা ছুরিকাঘাতের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও গাছের ডালের আঘাতে হাত কেটে গেছে বলে জানান আহত সাবিক। তিনি বলেন, 'কিছু সংখ্যক ছেলে মারামারি করতেছিল। এ সময় আমি তাদেরকে ঠেকাতে গেলে আম গাছের ডালের সাথে লেগে হাত কেটে গেছে। আমি এর বেশি আর বলতে চাচ্ছি না।'
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আকিবের কাছে জানতে চাইলে ছুরিকাঘাতের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। বরং উল্টো তিনি মারধরের শিকার হয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, 'বাহিরে এসে দেখি মারামারি হচ্ছে। পরে শেখ রাসেল হলের ছেলেরা আমাকেও মারধর করে। এসময় আমার জামাকাপড় ছিড়ে যায় এবং আমার হাতে আঘাতের চিহ্নও রয়েছে।'
এদিকে ঘটনার বিষয়ে আশিক কোরাইশি বলেন, ‘অডিটোরিয়ামে শামীমের সাথে বাকবিতন্ডার সময় সে আমার চোখ তুলে নেওয়ার হুমকি দেয়। পরে অনুষ্ঠান শেষ হলে আমাকে মারার জন্য তারা অতর্কিত হামলা করে। এক পর্যায়ে আকিব ছুরি নিয়ে আমাকে মারার জন্য তেড়ে আসলে সাবিক আহত হয়।’
অন্যদিকে শামীমের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেছে।
ঘটনার বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, 'আলোচনা সভা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে এরপর যে ঘটনাটি ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। সন্ধ্যায় বিষয়টি নিয়ে বসে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবো।'
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, 'আলোচনা সভা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই অতিথিদের নিয়ে আমরা উপাচার্যের বাসভবনে যাই। এ সময় খবর আসে যে মারামারি হচ্ছে। তৎক্ষণাৎ সহকারী প্রক্টরদের ঘটনাস্থলে এবং চিকিৎসা কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। তাদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করেছি। অতিদ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল