রেলপথে ভ্রমণে যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধি, গতি বাড়ানো, নানাবিধ দুর্ঘটনার নজরদারি, রেলপথ ও সেতু রক্ষনাবেক্ষণ এবং রাজস্ব আয় বাড়নোসহ নানাবিধ বিষয়ে কঠোর নজরদারি ও মনিটরিং শুরু করেছে রেলওয়ে প্রশাসন। একই সাথে রেলওয়ের বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করা, রেল অবৈধ দখলে থাকা ভূমি উদ্ধারসহ ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে রেলওয়ের স্ব স্ব বিভাগে দায়িত্বশীলরা।
শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রামের রেলওয়ে হেড কোয়ার্টার সিআরবির জিএম কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত হয়। রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রকৌশলী মোঃ আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন রেলপথ মন্ত্রনালয়ের সচিব মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন।
এ সময় রেলওয়েকে আরো গতিশীল ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধিসহ প্রশাসনের নানাবিধ সমস্যা ও সমাধানের বিষয়ে দিক-নির্দেশনামুলক আলোচনায় অংশ নেন পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ফারুক আহমেদ, অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা এডিশনাল জিএম চন্দন দে, কক্সবাজার-ঘুনদুম- দোহাজারি রেললাইন প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) মফিজুর রহমান, চীফ ইঞ্জিনিয়ার আরিফুজ্জামান, প্রধান ষ্টেট কর্মকর্তা মোঃ জসিম উদ্দিন, সিসিএস গোলাম আম্বিয়া, প্রধান মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (সিএমই) মিজানুর রহমান, ডিআরএম জাহাঙ্গীর আলম, সিআরএনবি ইকবাল হোসেন, সিপিও অজয় কুমার পোদ্দার, সিইই আনোয়ার হোসেন, এডিশনাল ট্র্যাক তানবিরুল ইসলাম, সিওএস ফরিদ আহমেদ, এডিশনাল সিওপিএস সুজিত কুমার বিশ্বাস, অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা এডিশনাল সিসিএম জাকির হোসেন প্রমুখ।
এর আগে সকালেই রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) ট্রেনিং সেন্টারে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে যোগ দেন শীর্ষ কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানে ৫১তম ব্যাচের সদস্যদের মাঝে পদকসহ নানাবিধ কর্মসূচী পালন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রেলপথ মন্ত্রনালয়ের সচিব মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন, বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রকৌশলী মোঃ আমজাদ হোসেন। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) চীফ কমান্ড্যান্ট ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) সৈয়দ ফারুক আহমদ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমান্ড্যান্ট মোঃ আশাবুল ইসলাম, পশ্চিমের কমান্ড্যান্ট (সদর) ফুরাদ হাসান পরাগ, কমান্ড্যান্ট (সদর) হাসান ইমাম, কমান্ড্যান্ট (ঢাকা) জহিরুল ইসলাম, সহকারি কমান্ড্যান্ট ওমর ফারুক, একেএম ছালেহ পাঠোয়ারী, প্রধান পরির্দশক (সিআই) সত্যজিদ দাশ, প্রধান পরির্দশক (সিআই) আনোয়ার হোসেন, ইন্সপেক্টর আমান উল্লাহ আমান, ইন্সপেক্টর রেজোয়ানুর রহমানসহ আরএনবির সদস্যরা।
এছাড়াও রেলওয়ে শ্রমিকলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট হুমায়ুন কবির, শ্রমিকলীগ নেতা সিরাজুল ইসলামসহ রেলওয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাসহ শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।
পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, রেলওয়ে পরিবহন খাতে দেশের সব চেয়ে বড় একটি সংস্থা। এই রেলওয়ের সম্পদ রক্ষা করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে অতন্দ্র প্রহরীর মতো ভূমিকা রাখতে হবে। যে কোন ধরনের নাশকতা এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে রেলকে রক্ষা করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি দেশবাসীকেও সচেতন হতে হবে।
রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) আমজাদ হোসেন বলেন, রেলওয়ে সম্পদ রক্ষার জন্য নিরাপত্তা বাহিনী কঠোর পরিশ্রম করে আসছে। ট্রেনে নাশকতা রোধ, অবৈধ স্থাপনা বন্ধ, রেলের সম্পদ চুরি রোধে অতীতের মতো অনেক কষ্ট ও শ্রম দিয়ে আসছে। রেল প্রশাসনের প্রতিটি বিভাগের সমন্বয়ে কাজ করতে হবে। তাছাড়া বর্তমান সরকার রেলকে আরো গতিশীল ও উন্নয়নমুখী করতে নানাবিধ প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এসব কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ হলেই সাধারণ মানুষ অনেক উপকৃত হবে এবং ট্রেন যাত্রীরা অতীতের মতো আরো ভালভাবে আরামদায়ক ভ্রমণ করতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যে রেলপথ মন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক এমপি ও রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রকৌশলী মোঃ আমজাদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় চলাচলরত ট্রেনে, রেলের স্থাপনায়সহ নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রতিনিয়ত কঠোর মনিটরিং ও নজরদারিতে রেখেছেন স্ব স্ব বিভাগের দায়িত্বশীলরা। আরো জানা গেছে, বর্তমান প্রচলিত আইনে রেলপথে নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে, এছাড়াও রেলওয়ের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি অবৈধ দখলদার গনের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের প্রক্রিয়া চলছে।
বিডিপ্রতিদিন/ ২৪ মার্চ, ২০১৮/ ই জাহান