চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় দেশে প্রথমবারের মতো নিজস্ব প্রযুক্তিতে উদ্ভাবিত ইনকিউবেটরে অজগরের ২৬টি বাচ্চা ফোটানো হয়েছে। সঠিক তাপমাত্রায় পরিচর্যায় গত বুধবার অজগরের ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত অজগর সাপের ডিম থেকে ২৬টি বাচ্চা বের হয়।
চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা যায়, চিড়িয়াখানার খাচায় মোট ২০টি অজগর আছে। দুই মাস আগে তারা ৩৫টি ডিম পাড়ে। এর মধ্যে ৯টি নষ্ট হয়ে যায়। প্রথমে ডিমগুলো মায়ের কাছেই ছিল। কিন্তু অত্যধিক গরম এবং ঝড়-বৃষ্টিতে ডিমগুলো একে একে নষ্ট হতে থাকে। পরে হাতে তৈরি ইনকিউবেটরে তুলে আনা হয়। হাতে তৈরি ইনকিউবিটরে রাখা ডিম ফুটে বৃহস্পতিবার এসব অজগর ছানার জন্ম হয়।
চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, ‘ওই ৩৫টি ডিম সাপের খাঁচা থেকে সংগ্রহ করে হাতে তৈরি ইনকিউবিটরে ৬০ দিন ধরে বিভিন্ন তাপমাত্রায় রাখা হয়। এর মধ্যে নয়টি ডিম নষ্ট হলেও ২৬টি ডিম ফুটে অজগর ছানা জন্ম নেয়।’ তিনি বলেন, ‘এ উদ্যোগ অজগর সংরক্ষণে মাইলফলক হয়ে থাকবে। দেশে হয়তো প্রথম অজগরের ডিম থেকে কৃত্রিম উপায়ে আমরাই বাচ্চা ফোটাতে সক্ষম হয়েছি।’
চিড়িয়াখানা ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, ‘সাপগুলো ১৫ দিন পর চামড়া বদল করবে। এরপর ধীরে ধীরে এদের খাওয়া দেওয়া হবে। তিন মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। পরে এসব সাপ প্রকৃতিতে ছাড়া হবে। আমাদের জানা মতে, বাংলাদেশের কোন চিড়িয়াখানায় এভাবে শাপের ডিম সংগ্রহ করে বাচ্চা উৎপাদন করা হয়নি। আমাদের চিকিৎসক ডা. শুভ পরীক্ষামূলকভাবে কাজটি করে সফল হয়েছেন।’
জানা যায়, ১৯৮৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মানুষের বিনোদন, শিশুদের শিক্ষা এবং গবেষণার জন্য নগরের খুলশিস্থ ফয়েজ লেকের পাশে ৬ একর জমির উপর চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে সেখানে ৬৭ প্রজাতির সাড়ে তিন শতাধিক পশু-পাখি আছে। চিড়িয়াখানায় আছে দুর্লভ সাদা বাঘ, জেব্রা, সিংহ, হরিণ, ভালুক, বানর, কুমির। আছে ন্যাচারাল মিনি এভিয়ারি (পক্ষীশালা)। ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৫ ফুট প্রস্থের পক্ষীশালায় আছে ৬ প্রজাতির ৩০০ পাখি। পাখির মধ্যে আছে, লাভ বার্ড ২০ জোড়া, লাফিং ডাভ ৫০ জোড়া, ফিজেন্ট ১০ জোড়া, রিংনেড পারোট ১০, কোকাটেইল ৫০ ও ম্যাকাও ১ জোড়া।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার