বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে বর্তমানে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে আবহাওয়ার এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে ১৯ মে শেষরাত থেকে ২০ মে বিকেল বা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে সাগর ক্রমে উত্তাল হয়ে ওঠায় চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে (লাইটার) পণ্য খালাস কমে আসছে। কুতুবদিয়া, মহেশখালী, কক্সবাজারসহ গভীর সাগরে বন্দরের বহির্নোঙরে জাহাজ রয়েছে ৯৯টি। এসব জাহাজকে সার্বক্ষণিক ইঞ্জিন সচল রাখার এবং গভীর সাগরে নিরাপদ অবস্থানে চলে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
ফলে বেশিরভাগ জাহাজ নিরাপদ অবস্থানে চলে যাচ্ছে। যেসব জাহাজের লাইটারিং কাজ শেষ পর্যায়ে এমন কয়েকটি জাহাজেই কেবল পণ্য খালাস চলছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, সাগর উত্তাল হওয়ায় একটি বড় জাহাজের পাশে আরেকটি ছোট জাহাজ বেঁধে খোলা পণ্য খালাস করা খুবই কঠিন। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় বিদেশি জাহাজের ক্যাপ্টেন এটি অ্যালাউ করে না। এ ছাড়া ছোট ছোট লাইটার জাহাজগুলোকে কর্ণফুলী নদীর শাহ আমানত সেতুর উজানে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধ হলেও জেটিতে ১৭টি জাহাজে পুরোদমে হ্যান্ডলিং কার্যক্রম চলছে। এর মধ্যে ১১টি কনটেইনার জাহাজও রয়েছে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের 'সাইক্লোন ডিজেস্টার প্রিপার্ডনেস অ্যান্ড পোস্ট সাইক্লোন রিহ্যাবিলেশন প্ল্যান ১৯৯২ অনুযায়ী বন্দর চ্যানেলে অবস্থানরত অভ্যন্তরীণ জাহাজ ও ছোট ছোট নৌযানগুলোকে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর উজানে সরিয়ে দিয়েছে কোস্ট গার্ড।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার