চট্টগ্রামে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবেলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, সিভিল সার্জন কার্যালয় ও রেডক্রিসেন্ট। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। চট্টগ্রামে নতুন পুরাতন মিলে চার হাজার ৩০টি আশ্রয়কেন্দ্রে বুধবার পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৮১৪ জন আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। তাছাড়া ১১ হাজার ৭৪১টি গবাদি পশুও আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়। জরুরি প্রয়োজনে জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে (০৩১-৬১১৫৪৫ ও ০১৭০০৭১৬৬৯১) যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে বিদ্যমান আশ্রয়কেন্দ্র আছে ৫১১টি। তাছাড়া ২ হাজার ২৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এক হাজার ২৫০টি স্কুল-কলেজে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এরই মধ্যে আজ পর্যন্ত এক হাজার ৯৫১টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ৬ হাজার ৬৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক, রেড ক্রিসেন্টের ৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক ও স্কাউটের ৩৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মাধ্যমে ২৮৪টি মেডিক্যাল টিম গঠন, ২ লাখ পিস পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, দেড় লাখ খাবার স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগও ১ লাখ ৪০ হাজার পিস পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ২ লাখ ৪০ হাজার ওয়াটার পিউরিফায়ার, ১ হাজার ৪০০ পিস হাইজিন কিটস, ৬৫০ পিস স্কোয়াটিং প্লেন্ট, ৩ হাজার ৩৬০ পিস ওয়াটার বাকেট, ৫০০ কেজি বিøচিং পাউডার, ১ হাজার ২০০ পিস তারপুলিন এবং ৫০০টি অস্থায়ী টিউবঅয়েল মজুদ রেখেছে। সিটি কর্পোরেশন উপকূলীয় এাকায় মাইকিংসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্র সমুহে প্রায় ৫৪ হাজার মানুষ আশ্রয় গ্রহণ করেছে। তাছাড়া মেটিকেল টিম গঠন, ত্রাণ কার্যক্রম, শুকনো খাবার প্রস্তুতসহ প্রয়োজনীয় সব কাজ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কন্ট্রোল রুমও চালু করা হয়েছে।’
জানা যায়, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করে লোকজনকে সরিয়ে দিচ্ছেন। তাছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করা মানুষদেরও অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসের ঝুঁকিতে থাকা নগরের মোহরা, উত্তর কাট্টলী, দক্ষিণ কাট্টলী, উত্তর মধ্যম হালিশহর, দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর, দক্ষিণ হালিশহর, উত্তর পতেঙ্গা, দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ডের লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে মাইকিং করা হচ্ছে। ওয়ার্ড কাউন্সিলররা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মাইকিং করেছেন। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত আলো, টয়লেটের সুব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানা যায়।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার