উপমহাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ঢেউ খেলছে পানি। ঢেউয়ের তরঙ্গে আছড়ে পড়ছে মাছ। ভাসছে স্তন্যপায়ী গাঙ্গেয় প্রজাতির ডলফিন। শ্বাস নিচ্ছে নদীর প্রাকৃতিক মুক্ত আঙিনায়। হালদা নদীর ইন্দিরা ঘাটসহ বিভিন্ন অংশে দেখা মিলছে ডলফিনের। এসব ডলফিন উৎসুখ জনতা দেখছেন আগ্রহ ভরে।
গবেষকরা বলছেন, হালদা নদীতে নিয়মিত অভিযানের ফলে কমছে দূষণসহ মনুষ্য অত্যাচার। ফলে আগের তুলনায় এখন ডলফিনের বিচরণ বেড়েছে। এটা হালদার জন্য গুড সাইন, ইতিবাচক দৃশ্য। বলা যায়, এখন হালদা নদীর স্বাস্থ্য খুবই ভাল।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘হালদায় ডলফিন ভাসার চিত্রটা স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু অধিকতর দূষণের কারণে নিটক অতীতে দেখা যায়নি। বর্তমানে ধারাবাহিক অভিযানসহ নানা উদ্যোগের কারণে নিকট অতীতের চেয়ে দূষণ কমছে। ফলে এখন নদীতে ডলফিন ভাসছে। এটি হালদার জন্য গুড সাইন। এর মাধ্যমে নদীর স্বাস্থ্য ভাল, পানির গুণগত মান ভাল থাকা এবং মাছের পর্যাপ্ত উপস্থিতি প্রমাণ করে। এ সফলতা ধরে রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশে বিপন্ন প্রজাতির ডলফিন রক্ষায় ‘হালদা নদীর ডলফিন হত্যা রোধ, প্রাকৃতিক পরিবেশ, জীববৈচিত্র এবং সকল প্রকার মা-মাছ রক্ষা’ নামে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি ডলফিন রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নেবে।’
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, ‘গত দেড় বছরে হালদা নদীতে ১১৩টি অভিযানে জব্দ করা হয় ১ লাখ ১৫ হাজার ঘনফুট বালি, ২ লাখ ২৩ হাজার মিটার জাল ও বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত ৩ দশমিক ৫ মিটার পাইপ জব্দ করা হয়। ধ্বংস করা হয় বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত ৯টি ড্রেজার ও ১৭টি ইঞ্জিন চালিত নৌকা। জরিমানা করা হয় ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা, কারাদণ্ড দেওয়া হয় ৩ জনকে, নিলামে বিক্রি করা হয় দুই লাখ ২৫ হাজার টাকার বালু। হালদা নদী রক্ষায় যেকোনো সময়ই অভিযান পরিচালনা করা হয়।’
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার