গত মার্চে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের দিন-তারিখ ঠিক হলেও প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও করোনা পরিস্থিতি কারণে শেষ পর্যন্ত স্থগিত হয়েছে নির্বাচন। এরপর প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে শুরু হয় স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড। বর্তমানে প্রশাসকের মেয়াদও শেষের পথে।
এরই মধ্যে চলমান করোনাকালীন নানা কারণে চসিক নির্বাচনের সংরক্ষিত কাউন্সিলরসহ ৪ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এতে করে দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই ভোটারদের কাছে থাকার চেষ্টা করছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা।
কিন্তু অসুস্থতার কারণে চার কাউন্সিলর প্রার্থীর মৃত্যুর ফলে আসনে নির্বাচন কি হবে বা আদৌ এই আসনগুলো আগামী নির্বাচনের তারিখে এক সাথে হবে কিনা, সেই বিষয় নিয়ে এখনও কোন ধরণের সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনে আসেনি। ফলে আইনি জটিলতায় পড়ে গেছে সংরক্ষিতসহ চারটি কাউন্সিলর শূন্য পদের নির্বাচন নিয়ে।
নির্বাচন কমিশনের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চসিক নির্বাচনের বিষয়ে কখন, কিভাবে নির্বাচন হবে, সেই বিষয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও আসেনি। চলতি মাসের শেষের দিকে অথবা জানুয়ারির মধ্যেই নির্বাচনের জন্য নানা ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে। শুধুই নির্দেশনার অপেক্ষায়।
তিনি বলেন, চসিকের কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থীর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর কারণে নির্বাচনের বিষয়ে আইন অনুযায়ী কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। তবে প্রশাসকের মেয়াদের মধ্যেই চসিক নির্বাচন হবে বলে জানান তিনি।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নির্বাচনের প্রার্থীদের মধ্যে সংরক্ষিতসহ চারজন কাউন্সিলর প্রার্থী করোনাকালীন সময়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তারা হলেন সংরক্ষিত ওয়ার্ড (১৭, ১৮ ও ১৯) কাউন্সিলর প্রার্থী সাহিদা বেগম পারভীন, ৩০ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হোসেন মুরাদ ও ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন আইন-২০০৯ (সংশোধিত) আইনের বিধি ২০ এর উপবিধি-১ ধারায় বলা হয়েছে, ভোট গ্রহণের পূর্বে কোনো প্রার্থীর মৃত্যু হলে সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্টদের পদের নির্বাচন কার্যক্রম রিটার্নিং অফিসার গণ-বিজ্ঞপ্তি দ্বারা বাতিল করবেন। একই সাথে বিধির উপবিধি-৩ এ বলা হয়েছে, রিটার্নিং অফিসার হতে অবহিত হওয়ার পর নির্বাচনি এলাকার সংশ্লিষ্ট পদে নতুন নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করবেন এবং কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসার পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
তবে কোনো প্রার্থীর মনোনয়ন ইতোপূর্বে বৈধ বলে গণ্য হলে এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে নতুন করে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে না। স্থগিত হওয়া চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন নির্বাচন করছেন। এছাড়া সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরের ৫৫ পদে ২৬৯ প্রার্থী মনোনয়ন পান।
মেয়র প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী (নৌকা), বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন (ধানের শীষ), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন (মিনার), এনপিপির আবুল মনজুর (আম), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম (হাতপাখা), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ (চেয়ার) ও স্বতন্ত্র খোকন চৌধুরী (হাতি)। ২০১৫ সালে ৬ আগস্ট মেয়রের দায়িত্ব নিয়েছিলেন আ জ ম নাছির উদ্দীন। সে হিসাবে পর্ষদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৫ আগস্ট।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর