বিএম কন্টেইনার ডিপোর পার্শ্ববর্তী এলাকা কেশবপুর। এখানকার বাসিন্দা সাকিব। শনিবার যথারীতি রাতের খাবার খাচ্ছিলেন। এমন সময় আকাশচুম্বি বিকট আওয়াজ। আওয়াজ শুনে ঘর থেকে বের হলেন। বের হয়েই দেখলেন আগুনের স্ফুলিঙ্গ। আগুনের লেলিহান শিখা আকাশ ছোঁয়ার অপেক্ষা। সেই লেলিহান শিখার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা এসে পড়ল সাকিবের হাত-মুখে। এরপর থেকে তিনি আর কিছুই জানেন না। হতবিহ্বল বিমর্ষ অবস্থায় পড়ে যান। পরে তিনি নিজেকে খোঁজে পান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। আগুনে তার শরীরে দৃশ্যমান কোনো ক্ষতি না করলেও ধোয়া এবং বিকট আওয়াজে মানসিক ভারসাম্য হারান তিনি।
চমেক হাসপাতালের (সেবা) তত্ত্বাবধায়ক মোছা. ইনসাফি হান্না বলেন, ওই যুবকের কপাল, হাত ও বাহুতে আগুনের শিখায় একটু ক্ষত হয়। সেখানে ব্যান্ডেজ করা হয়। তবে তিনি অনেক বেশি আতঙ্কিত হয়েছেন। যার ফলে মানসিক ভারসাম্য হারান। তবে এখন অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। কথা বলতে পারছেন।
জানা যায়, গত শনিবার রাত ১১টায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারিতে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়ে অনেকেই চমেক হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। রবিবার ভোর থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত হাসপাতালের বার্ন ইউনিট, সার্জারি বিভাগ, চক্ষু বিভাগ ও অর্থোপেডিক্স বিভাগে ঘুরে দেখা যায়, বিষ্ফোরণে দগ্ধ হওয়াদের আহাজারী। এসব বিভাগের চলছে আহতদের চিকিৎসা সেবা।
দুর্ঘটনায় বার্ন ইউনিটে ভর্তি হওয়া রোগীগুলোর ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গেলেও তাদের ধোয়ার কারণে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার বিকাল পর্যন্ত হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি ছিল ৯ জন, বার্ন ইউনিটের অধীনে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল ৩৩ জন, সার্জারি বিভাগে ২৫ জন, অর্থোপেডিক্স বিভাগে ৮ জন, চক্ষু বিভাগে ১২ জন এবং অপারেশন থিয়েটারে ছিলেন চারজন। তাছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয়েছে ৬ জন, জেনারেল হাসাতালে স্থানান্তর করা হয় দুইজনকে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল