৪ জুলাই, ২০২২ ১৮:৫১

খাতুনগঞ্জে ক্রেতা সংকট মশলার বাজার নিম্নমুখী

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

খাতুনগঞ্জে ক্রেতা সংকট মশলার বাজার নিম্নমুখী

কয়েকদিন পরেই হবে কোরবানির ঈদ। এই কোরবানির ঈদকে ঘিরে গরু-ছাগলের বিভিন্ন বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি লক্ষ্যনীয়। ক্রেতারা গরুর দাম নিয়ে টেনশনে থাকলেও এবার খাতুনগঞ্জে মসলার বাজার রয়েছে নিম্নমুখী। আসন্ন এই কোরবানির ঈদকে ঘিরে প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত মসলা আমদানি করে প্রস্তুত ছিল খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। অনেকেই মুনাফার হিসেবও করে রেখেছেন। কিন্তু এই স্বাভাবিক পরিস্থিতিতেও ভাটা পড়েছে বেচাকেনায়। মসলার বাজারে ক্রেতা সংকটের কারণে এই ভরা মৌসুমে ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত উঠেছে। পর্যাপ্ত বেচাকেনা না থাকায় বিপুল পরিমাণে লোকসানের আশঙ্কাও করছেন একাধিক ব্যবসায়ী। তবে বন্যার প্রভাব, ঊর্ধ্বমুখী বাজার পরিস্থিতি ও আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে ক্রেতার আগমন কমেছে বলে মনে করছেন খাতুনগঞ্জের মসলা ব্যবসায়ীরা।

ঐতিহ্যবাহি বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছরের মতো এবারও অধিক বিক্রির আশায় কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মসলার আমদানি করেছিল খাতুনগঞ্জের অধিকাংশ মসলা ব্যবসায়ী। তাছাড়া ব্যাংক ঋণের বাড়তি সুদ থেকে মুক্তি পেতে আমদানি করা মসলার দামও কমিয়েছেন তারা। তবুও বাড়ছে না ক্রেতার আনাগোনা। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে খাতুনগঞ্জে বিভিন্ন পদের মসলা কেজিতে ২৫ থেকে ২'শ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এলাচ কেজিতে ২’শ টাকা কমে বর্তমানে ১ হাজার ১৫০, কেজিতে ৭০ টাকা কমে প্রতিকেজি লবঙ্গ ৯৫০, কেজিতে ৫০ টাকা কমে প্রতিকেজি জিরা ৩৫০, কেজিতে ২৫ টাকা কমে ধনিয়া ৯০, কেজিতে ৭০ টাকা কমে প্রতিকেজি দারুচিনি ২৮০, কেজিতে ২০ টাকা কমে প্রতিকেজি ভারতীয় হলুদ ১শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিকেজি গোল মরিচ ৫শ, মিষ্টি জিরা ১৬০ ও শুকনা মরিচ ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে চট্টগ্রামে দেশীয় পণ্যের সয়লাব ঘটেছে পেয়াঁজের বাজারে। খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দামও নিম্নমুখী দেখা গেছে।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গত সপ্তাহে আগেও মাঝারি আকারের পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছিল। বর্তমানে সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। তিনদিন আগেও চায়না আদা ৭০ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন ৬০ টাকায় চলছে। তাছাড়া চায়না রসুন কেজিপ্রতি ৯০, দেশি রসুন মানভেদে ৩৫ থেকে ৬০ ও মিয়ানমারের আদা ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই কথা বললেন হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস মিয়াও।

এদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোরবানির মৌসুমে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও চাহিদা তেমন নেই। এবার খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছেও মসলা পণ্যের চাহিদাও তেমন নেই। তাই মসলা পণ্যের দামও কমে গেছে। কোরবানির বাকি মাত্র কয়েকদিন বাকি। এরই মধ্যে ক্রেতা সমাগম তেমন একটা না হওয়ার আশঙ্কা করছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া পেঁয়াজ, আদা ও রসুন হচ্ছে পচনশীল পণ্য। অথচ এখন ভরা বিক্রির মৌসুম হলেও আমাদের বেচাবিক্রি তেমন নেই। তাই পণ্যগুলো নিয়ে খুব চিন্তায় সময় পার করছি। বিক্রি না হলে অনেক লোকসান গুণতে হবে বলে জানান তারা।

খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মেসার্স ইরা ট্রের্ডাসের স্বত্তাধীকারী মো. ফারুক হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বর্তমানে পেঁয়াজ পাইকারিতে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে মানভেদে দেশীয় পেয়াঁজ ৪০-৪৫ টাকা। খুচড়ায় ৫৫-৬০ টাকা। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ ভারত ও মিয়ানমারের বেশি ঝাঁজের পেঁয়াজই পছন্দ করেন। ভারতে পেয়াঁজ ঢুকলে আরো দাম কমবে। তাছাড়া আদা, রসুনের দামও কমতে শুরু করেছে বলে জানান তিনি।

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর